অবশেষে দাপুটে জয়

সালেক সুফী

পাকিস্তানকে তাদের দে ধবল ধোলাই করার পর ভারতের বিরুদ্ধে ভারতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে টেস্ট ক্রিকেটে ধবল ধোলাই হয়েছে বাংলাদেশ। চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও প্রথম টেস্টে হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিলো। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টনে সাবিনা পার্কে দুর্দান্ত ব্যাটিং, বোলিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারিয়ে দারুন হুঙ্কার দিলো বাংলার ব্যাঘ্র বাহিনী। এযেন দুর্যোগের ঘনঘটা শেষে আসলো স্বস্তির বারিধারা। বাংলাদেশের ১৬৪ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস ১৪৬ রানে সাঙ্গ হবার পর থেকেই বদলে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে গোটা দল জেগে ওঠে জয়ের নেশায়। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬৮ রান করার পর থেকেই মোটামুটি জানা হয়ে যায় জিততে চলেছে বাংলাদেশ। অবশেষে কঠিন উইকেটে ভালো বোলিং ফিল্ডিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৮৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১০১ রানে টেস্ট জয় করে বাংলাদেশ। সিরিজ শেষ হয় ১-১। নতুন করে নিজেদের চিনতে পারে বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে আসে মধুর বিজয়।

বৃষ্টি বিঘ্নিত এই টেস্টের প্রথম দুইদিন খেলা হয়েছে সামান্য। কঠিন এই উইকেটে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৬৪ রানে ইনিংস শেষ করার পর পর্যায়ের শংকা। দ্বিতীয় দিনশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান করলে সেই শংকা ডাল পালা মেলে। কিন্তু তৃতীয় দিন সকালে দুরুন্ত গতির সঙ্গে সঠিক নিশানায় বোলিং করে স্বাগতিক দলকে ভড়কে দেয় বাংলাদেশের উদীয়মান গতিতারকা নাহিদ রানা।  ওর ক্রমাগত ১৪৫ র বেশি গতিতে করা বোলিং শংকা জাগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে। জীবনের প্রথম ৫ উইকেট (৫/৬১) টেস্টের প্রেক্ষাপট পাল্টে দেয়। সঙ্গী হাসান মাহমুদ আর তাসকিন স্বাগতিক দলকে স্বস্তি দেয় নি। দ্বিতীয় ইনিংসে কৌশল পাল্টে শুরু থেকেই ওডিআই স্টাইলে আক্রমণাত্ম ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। কঠিন উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা না করে লাগসই ব্যাটিং তৃতীয় দিন শেষে ২১১ রানে এগিয়ে থেকে সুবিধা জনক অবস্থানে পৌঁছে বাংলাদেশ। উইকেটে শুধু অসম বাউন্স নয় স্পিন ধরছিল। চতুর্থ দিনে প্রতিআক্রমণ করে জাকের আলী অনিক টেস্ট স্বাগতিক দলের ধরা ছোয়ার বাইরে নিয়ে যায়. ১০৬ বল খেলে ৮ চার, ৫ ছয়ে সাজানো জাকের অনিকের ৯১ রান স্বাগতিক দলের মনোবল দুমড়ে মুচড়ে দেয়। এর পর সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত স্পিনার তাইজুল স্বভাব জাত বোলিং (৫/৫০) করে বাংলাদেশের জয়ের পথ সুগম করে। জয়ের পথে হাসান মাহমুদ (২/২০) আর তাসকিন (২/৪৫) সহায়তা প্রদান করে। তাইজুল হয় খেলার সেরা খেলোয়াড়। তাসকিন এবং সেলসকে যৌথভাবে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশের ক্রমাগত পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সঠিক মানসিকতার অভাব। ভারতে ভারতের বিরুদ্ধে এবং দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দলকে আতঙ্কগ্রস্থ মনে হয়েছে। ভেবে দেখুন এই দলে সাকিব, মুশফিক, শান্ত নেই।  তবুও এই দল সামর্থের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে টেস্ট জিতেছে। আবারো ফিরেছে জয়ে। আশা করি এখানেই থেমে থাকবে   না জয় যাত্রা।

জানে সবাই বাংলাদেশের দল ব্যাবস্থাপনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে। হেড কোচ, সহকারী হেড কোচ তথা ব্যটিং কোচের পরিবর্তনের শুভ পরিবর্তন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। প্রথম সিরিজে ভালো করেছে মেহেদী মিরাজ অধিনায়ক হিসাবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × three =