অবশেষে নেদারল্যান্ডেসের বিরুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়

সালেক সুফী

অনেকের প্রত্যাশা ছিল আইসিসি সহযোগী সদস্যের দেশ নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে অন্তত জয় পাবে বাংলাদেশ। অনেকে শুধু জয় নয় বিশাল ব্যাবধানে জয়ের কথা ভাবছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা এবং স্বপ্ন কল্পনার বিস্তারিত ব্যাবধান চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখলেও নেদারল্যান্ডসের কমলা বাহিনী। কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে অজস্র ভক্ত অনুরাগীর হৃদয় ভেঙে ৮৭ রানের বড় ব্যাবধানে হেরে গেলো বাংলাদেশ। ধীর, নিচু স্পিন ধরা কঠিন উইকেটে লড়াকু ২২৯ করেছিল নেদারল্যান্ডস।  মেরুদন্ড বিহীন বাংলাদেশ ৪২.২ ওভারে ১৪২ রানে গুটিয়ে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করলো। কোথায় গেলো বাগাড়ম্বর? কোথায় গেলো ঘুরে দাঁড়ানোর গাল ভরা বুলি?

অদূরদর্শী পরিকল্পনা এবং অপরিণামদর্শী টিম ব্যাবস্থাপনা বাংলাদেশ দলকে বিপর্যস্ত, হতাশ, ছন্নছাড়া দলে পরিণত করেছে। ৬ ম্যাচের ৫ টিতে শোচনীয় ভাবে পরাজিত বাংলাদেশ এখন পয়েন্টস তালিকার তলানিতে। অবশিষ্ট তিন ম্যাচে পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জয়ের সম্ভাবনা সুদূর পরাহত।

নেদারল্যান্ডস কোয়ালিফাইং রাউন্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডসের মত দল গুলোকে পেছনে ফেলে এসেছে। প্রথম ম্যাচ থেকেই ওরা প্রমান করেছে ওরা কিছু অর্জন করতে এসেছে। ওরা বড় মাছের ঝাঁকে চেলা পুঠি মাছ নয়। ভালো খেলেই তারা হতবাক করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম সফল দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিরুদ্ধে। কাল ইডেনের উইকেটে ব্যাটিং করা খুব কঠিন ছিল। শুরু থেকেই ভালো বোলিং এবং তুখোড় ফিল্ডিং করে চেপে ধরেছিলো বাংলাদেশ। ভাবা হয়েছিল ১০৭/৫ উইকেট হারানো নেদারল্যানন্ডস স্বল্প পুঁজিতে গুটিয়ে যাবে। কিন্তু দেয়ালে পিঠ রেখে নিজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে উপমাধর্মী লড়াই করলো দলনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস (৬৮) সাইব্রান্ট এনজেলব্রেখটকে (৩৫) সঙ্গী করে। ২২৯ রান অবশ্যই কালকের উইকেটে প্রতিদ্বন্দ্বী স্কোর ছিল।

বাংলাদেশ অনুরাগীরা অবশ্যই আশা করা অমূলক ছিল না একটি সহজ জয়ের। কিন্তু কি করলো বাংলাদেশ? জুনিয়র তামিম, লিটন, শান্ত, সাকিব মুশফিক দাঁড়াতেই পারলো না ডাচদের মোকাবিলায়। মেহেদী মিরাজ (৩৫) চেষ্টা করেছিল। চেষ্টা ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২০) এবং শেখ মেহেদির ( ১৭)। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় এগুলো ছিল নিতান্তই অপ্রতুল। উইকেটের সহয়তা নিয়ে নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশকে ১৪২ রানে ধ্বসিয়ে দিয়ে ৮৭ রানের বিশাল জয় তুলে নিলো। মাঠে উপস্থিত কয়েক হাজার উৎসাহী বাংলাদেশী ক্রিকেট অনুরাগী এবং নানা মাধ্যমে দূর থেকে দেখা কয়েক কোটি ভক্ত অনুরাগীর হৃদয় ভেঙে আরো একটি শোচনীয় পরাজয় বরণ করলো বাংলাদেশ।

কি অজুহাত দিবে বাংলাদেশ? টুর্নামেন্টে ১০ দলের মাঝে  সব চেয়ে অগোছালো দল বাংলাদেশ।  শেষ লগ্নে এসেও।  জানেনা টুর্নামেন্টে কি তাদের লক্ষ উদ্দেশো, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং দলনায়কের নাই দায়িত্ববোধ। সৎ মানসিকতা না থাকলে প্রকতির সহায়তা মিলে না তার প্রমান হাতে হাতে পাচ্ছে সুজন- হাতুরা -সাকিব। ক্রিকেট অনুরাগীরা জানে কিভাবে ঐতিহাসিক এশেজ সিরিজের জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশেরও উচিত হবে সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নতুন করে শুরু করার। লজ্জা থাকলে বাগাড়ম্বর ছেড়ে বাস্তবতা মেনে নেয়া উচিত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

15 − 5 =