অভিনেত্রী শাবানা আজমির জন্মদিন আজ

বলিউডে এত সুন্দরীর ভিড়েও শাবানা আজমি বরাবরই নিজস্ব দীপ্তিতে উজ্জ্বল। ‘আর্থ’ ছবির পূজা ইন্দর কিংবা ‘পার’ এর রামা, কোনো চরিত্রেই শাবানা আজমির বিকল্প কাউকে ভাবা যায় না। বাণিজ্যিক ও শিল্প – দুই ধারার ছবিতেই তিনি সফল। ৬৮ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী শতবর্ষের বলিউডের আকাশে অরুন্ধতীর মতোই স্থির। শাবানা আজমির জন্ম ১৯৫০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। সেই মোতাবেক আজ তার জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে তার প্রতি শুভেচ্ছা।

শাবানা আজমি পাঁচবার জয় করেছেন সেরা অভিনেত্রীর ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চারবার সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার। ২০০৬ সালে ফিল্মফেয়ার আসরে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছেন আট বার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছেন অনেকবার।

১৯৮৮ সালে পেয়েছেন পদ্মশ্রী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার ও রাজীব গান্ধী পুরস্কার।

শাবানা আজমি তার অভিনয় ক্যারিয়ারে যেমন ব্যস্ত তেমনি সমাজসেবামূলক কাজেও নিবেদিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কাজে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে প্রচার কাজের সঙ্গে যুক্ত। শিশু অধিকার রক্ষারও একজন কর্মী তিনি। এইচ আইভি এইডস বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজে তিনি যুক্ত। ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস তাকে রাজ্যসভার সদস্য পদ দেয়। তিনি জাতিসংঘের পপুলেশন ফান্ডের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর । সমাজসেবামূলক কাজে বলিউডের আইকন হলেন শাবানা আজমি।

বাবা কাইফি আজমি ছিলেন বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক। মা শওকত আজমি ভারতীয় গণনাট্য সংগঠন আইপিটিএর সদস্য ও প্রখ্যাত মঞ্চ অভিনেত্রী। শাবানা আজমির প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘অংকুর’ (১৯৭৪)। প্রথম ছবিতেই করেন বাজিমাত। সমালোচকদের অকুণ্ঠ প্রশংসার পাশাপাশি জিতে নেন সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।‘অংকুর’-এ মুগ্ধ হয়ে সত্যজিৎ রায় তার ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ (১৯৭৭) ছবিতে খুরশিদ বেগমের ভূমিকায় বেছে নেন শাবানাকেই। মহেশ ভাটের ‘আর্থ’, শ্যাম বেনেগালের ‘নিশান্ত’, ‘অন্তরনাদ’ ও ‘মান্ডি’, মৃণাল সেনের ‘খন্ডহর’, ‘জেনেসিস’ ও ‘একদিন আচানক’ এবং শেখর কাপুরের ‘মাসুম’ ও খালিদ মোহাম্মদের ‘তেহজিব’ ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে তিনি বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘পারভারিশ’, ‘গডমাদার’, ‘মাকড়ি’, ‘অবতার’, ‘থোড়িসি বেওয়াফাই, ‘স্বামী’, ‘ভাবনা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক ধারার ছবিগুলোতেও শাবানা আজমি ছিলেন সফল। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে বাসু চ্যাটার্জির ‘স্বামী’ ও অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে ‘ম্যায় আজাদ হু’তে সাংবাদিক চরিত্রেও তিনি ছিলেন অনবদ্য।সর্বমোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন শাবানা আজমি। চারবার পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার। ২০০৬ সালে ফিল্মফেয়ার তাকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতারের স্ত্রী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × 4 =