আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের  জন্মদিন আজ

কালজয়ী কথাশিল্পী আখতারুজ্জামান ইলিয়াস উত্তরাঞ্চলের জনপদে পাকিস্তান আন্দোলনের চিত্র ও ঊনসত্তরের গণআন্দোলন দু’টি উপন্যাস লিখেছেন। ‘খোয়াবনামা’ ও ‘চিলেকোঠার সেপাই’ নামের এই দু’টি উপন্যাসই বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।

শক্তিধর এই কথাসাহিত্যিকের জন্মদিন আজ। ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটায় মামা বাড়িতে তার জন্ম। বাড়ি বগুড়া জেলায়। লেখাপড়া ম্যাট্রিক বগুড়ায়, ইন্টারমিডিয়েট ঢাকায় এবং অনার্স ও মাস্টার্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৬৪)। এরপর কর্মজীবন শুরু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজের বাংলার প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তার অনন্য সৃষ্টিকর্মের মধ্যে রয়েছে: গল্পগ্রন্থ- অন্যঘরে অন্য স্বর, খোঁয়ারি, দুধভাতে উৎপাত, দোজখের ওম, জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবান্বিত মুহূর্ত ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে গড়ে উঠেছে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্পের বৃহত্তর একটা অংশ।

১৯৭৩ সালে তিনি বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সুরাইয়া তুতুল। ইলিয়াস মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেন, গোপনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তার বিভিন্ন লেখায় মুক্তিযুদ্ধ এসেছে। যেমন ‘প্রতিশোধ’, ‘অন্য ঘরে অন্য স্বর’, ‘খোঁয়ারি’, ‘মিলির হাতে স্টেনগান’, ‘অপঘাত’, ‘জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল’, ‘রেইনকোট’ প্রভৃতি গল্পে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী রাজনৈতিক এবং সামাজিক বাস্তবতার কাহিনী।

‘সংস্কৃতির ভাঙা সেতু’ নামে একটি মূল্যবান প্রবন্ধের বইও রয়েছে তার। খুব কমই লিখতেন ইলিয়াস। কিন্তু যা লিখতেন তার সাহিত্যমান তাকে বাংলা সাহিত্যে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

১৯৭৭ সালে তিনি হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৬ সালে খোয়াবনামার জন্য পান প্রফুল্ল কুমার সরকার স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার এবং সাদাত আলী আকন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ওপার বাংলার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর মূল্যায়ন, ‘কি পশ্চিম বাংলা কি বাংলাদেশ সবটা মেলালে তিনি শ্রেষ্ঠ লেখক।’

রাইজিংবিডি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × three =