আজ ধর্মশালায় বাংলাদেশের ইংরেজি পরীক্ষা

সালেক সুফী

হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুন্দর পরিবেশে অসুন্দর মাঠে আজ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বেঙ্গল টাইগার্সদের ইংরেজি পরীক্ষা।  অসুন্দর বলছি কারণ মাঠটির বোলিং রান আপ এবং অউটফিল্ড বালুময়।  যেকোনো মুহূর্তে খেলোয়াড়দের আহত হবার শংকা। এই মাঠে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পেয়ে শুভ সূচনা করেছে সাকিব বাহিনী।

অপরদিকে শিরোপাধারী ইংল্যান্ড কিন্তু আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে প্রায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে শোচনীয়ভাবে হেরে গেছে নিউ জিল্যান্ডের কাছে। আজ তাই মরিয়া হয়ে ইংরেজ সিংহরা লড়াই করবে। ছলে বলে কলে কৌশলে চাইবে ম্যাচটি জিতে নিতে। ইতিমধ্যেই ওদের কয়েকজন হুঙ্কার দিয়েছে আজ বাংলাদেশকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে।

ওরা কি ভুলে গেছে ২০১৫ এডিলেড ওভালের কথা।  এই বাংলাদেশ সেইদিন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অসাধারণ শতরান আর রুবেল হোসেনের ঘাতক বোলিংয়ে কুপোকাত হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছিল।  বাংলাদেশের সেই বিশ্বকাপ জয়ী দলের কয়েকজন এবারের দলেও আছে। বাংলাদেশ নিজেদের সেরা দিয়ে খেললে আজও কিন্তু জয় ছিনিয়ে নিতে পারে। আর তাই যদি হয় তবে এবারেও কিন্তু ইংরেজ সেনাদের আর বিশ্বকাপ আসর থেকে বিদায় দেওয়ার পথ প্রশস্ত হয়ে যাবে।

আজ জয় ছিনিয়ে নিতে পারলে বাংলাদেশ স্বপ্নের সেমি ফাইনালের দিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। আজ কিন্তু দিনের খেলা।  বাংলাদেশ ইতিমধ্যে কয়েকদিন এখানে থেকে পরিবেশ পরিস্থিতি এবং উইকেটের সঙ্গে ধাতস্ত হয়ে গাছে। প্রথম ম্যাচে দেখা গাছে উইকেটে তাজা ঘাস থাকায় বাউন্স থাকে, স্পিন ধরে।  সাকিব, মেহেদী দুইজন আফগানদের ঘাতক হয়েছিল।

আজ হয়তো ইংল্যান্ডের স্পিন দুর্বলতার কথা স্মরণে রেখে একজন বাড়তি স্পিনার বাম হাতি নাসুম আহমেদের কথা ভাবতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থায় যেন সেই ভাবনা থেকে এডিলেড জয়ের নায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভাবা না হয়। আবার যেহেতু উইকেটে বাউন্স আছে তাই একজন পেস বোলার কম খেলানো ঠিক হবে না।

ওদিকে আবার ওপেনিং নিয়েও সমস্যা।  লিটন একেবারে নড়বড়ে, প্রথম বিশ্বকাপের স্নায়ুর চাপে আছে ছোট তামিম।  যদিও মেহেদী মিরাজ তুখোড় ফর্মে আছে তবুও ওকে দিয়ে ওপেনিং করানোর ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না।

সাম কুরান, ক্রিস ওকস কিন্তু ঘাসে আচ্ছাদিত উইকেট থেকে নতুন বলে ফায়েদা তুলে নিতে চাইবে। তাই বাংলাদেশকে অনেক বুঝে শুনে দল সাজাতে হবে।  তামিম, শান্তকে দিয়ে ওপেন করিয়ে লিটনকে মিডল অর্ডারে খেলানো যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে তাওহীদ হৃদয়কে বিশ্রাম দিয়ে নাসুমকে খেলানো যায়। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিকভাবে মাহমুদুল্লাহ ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী থাকবে।  ওকে বরং একটু ওপরে ব্যাটিং করিয়ে দেখা যেতে পারে।

আজ টস কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হবে।  বাংলাদেশ সুযোগ থাকলে প্রথম ব্যাটিং করে ২৭০-২৮০ টার্গেট দিলে ইংল্যান্ড মরিয়া হয়ে তাড়া করবে।  ইংল্যান্ডের কিন্তু মেহেদী মিরাজ-সাকিব জুটির স্পিন ভীতি আছে। মিরপুরে এই জুটি কিন্তু টেস্টে এক সেশনে ১০ উইকেট নিয়ে টেস্ট জিতিয়েছিল।

বাংলাদেশকে বেয়ার্স্ট ,জো রুট এবং বাটলারের উইকেটগুলো চটজলদি তুলে নিতে হবে।  জানি ইংল্যান্ডের মঈন আলী, ডেভিড মালান, সাম কুরান বা লিয়াম লিভিংস্টোন জ্বলে উঠতে পারে। কিন্তু আঁটসাঁট বোলিং এবং নিখুঁত ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ আজ স্টার মার্কস নিয়ে ইংলিশ পরীক্ষায় পাস করতে পারবে। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।

সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

fifteen + 7 =