আজ পুনে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট যুদ্ধ

সালেক সুফী

বলিউড নগরী মুম্বাই থেকে পুনে খুব বেশি দুরে নয়। সেখানে আজ অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণীয় ক্রিকেট ম্যাচ। ভারত স্বাগতিক খেলবে সাম্প্রতিক সময়ে ওডিআই ক্রিকেটে চোখে চোখ রেখে খেলা দল বাংলাদেশের সঙ্গে।  ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যে দলটি ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা দলকে ভড়কে দিয়েছিলো সেই ম্যাচে  অর্ধশত রান করা সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রাহিম এখন বাংলাদেশ দলের মহীরুহ। থাকতে পারতেন তামিম ইকবাল।  যাহোক সেই সোনালি স্মৃতি।  বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে লন্ডভন্ড করে দিয়েছিলো ওদের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন স্বাদ।  আজ কি এমন কিছু হতে পারে?

দেখলাম কাল পুনেতে উইকেট পরিদর্শনে গিয়েছিলো বাংলাদেশ, ভারত দুটি দল।  আইসিসির নিয়ন্ত্রণে বিসিসিআই আয়োজন করছে ১০ জাতির বিশ্বকাপ। উইকেট প্রস্তুত করেছে আইসিসি কিউরেটর।  কিন্তু অবাক বিস্ময়ে দেখলাম ভারত কোচ এবং অধিনায়ককে উইকেট উলঙ্গ করে দেখানো হলেও সাকিব, হাতুরাকে দেখানো হয়েছে ঘোমটা পরিয়ে। কেন এই বৈষম্য? নাকি এটি দাদাগিরি?

যাহোক দুই দলের বর্তমান অবস্থানে যত ব্যবধান থাকুক বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ কিন্তু ইদানিং অনেক উত্তাপ ছড়ায়। সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং এশিয়া কাপ মিলে চারবারের মোকাবিলায় ৩ বার হেরেছে ভারত।  তাই এবারের টুর্নামেন্টে আপাতত অজেয় ভারত বাংলাদেশ বাধা অনায়াসে পেরুনো সহজ না-ও হতে পারে।

নানা বিতর্ক আর নাটকে বাংলাদেশ দল বিপর্যস্ত বাংলাদেশের পিঠ দেয়ালে থেকে আছে। পিছে যাবার পথ নেই। নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আজ বাংলাদেশকে বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং তিন ক্ষেত্রেই জ্বলে উঠতে হবে। টস জয়ী হলে অবশ্যই ব্যাটিং করে লিটন, শান্ত, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করে নিদেন পক্ষে ২৮০-৩০০ করতে হবে। টপ অর্ডারের অন্তত দুইজনকে দীর্ঘ সময়ে ব্যাট করতে হবে।

বুমরা, সিরাজ, পান্ডিয়া, কুলদীপ, জাদেজার কুশলী আগ্রাসী বোলিং সামাল দিতে হলে নিজেদের সেরা নিবেদন করতে হবে। আমি আজ জুনিয়র তামিমকে বিশ্রাম দিয়ে লিটনের সঙ্গে মেহেদী মিরাজকে দিয়ে ইনিংস সূচনার পরামর্শ দিবো। সেই ক্ষেত্রে শান্ত, মুশফিক, সাকিব, মাহামুদুল্লাহ পর পর ব্যাটিং করে তাওহীদ হৃদয়, নাসুমদের জন্য প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারবে।

আজ বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিন জন পেসার না খেলিয়ে নাসুম, শেখ মেহেদী দুইজনকেই দলভুক্ত করা যায়  কি না? সেইক্ষেত্রে মুস্তাফিজের সঙ্গে আজ  মনস্তাত্ত্বিক কারণে তানজিম সাকিবকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। জানিনা সাকিব কতটা ম্যাচ ফিট? এই খেলার পরেও কিন্তু ৫টি ম্যাচ আছে বাংলাদেশের।  ঝুঁকি নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত সেটি অবশ্যই বিবেচনার বিষয়।

তুখোড় ফর্মে থাকা ভারত অবশ্যই আজ ফেভারিট।  তাই বলে বিনাযুদ্ধে জয় পাবে সেটি কিন্তু আশা করা অমূলক হবে। এই বিশ্বকাপে পর পর দুই দিন আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে এবং নেদারল্যান্ড দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। বাংলাদেশ আশা করে আইসিসির আয়োজন নিরপেক্ষ হবে।  সমতল খেলার মাঠে খেলবে দুটি দল।  বাংলাদেশের অবশ্যই সামর্থ আছে ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার। একটি জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক হিসাব নিকাশ পাল্টে দিবে।

সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 + eighteen =