জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের গত বছর এই দিনে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। গত বছরেরই ৮ ডিসেম্বর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে ভারতে নেওয়া হয় এবং সেখানে তার ক্যান্সার শনাক্ত হয়। চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে ২০ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর আবারো অসুস্থতা অনুভব করায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
অভিনেতা আবদুল কাদের ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুল জলিল, মায়ের নাম আনোয়ারা খাতুন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন আবদুল কাদের। কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতা দিয়ে। সিংগাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে শিক্ষকতা করেন। এর পর বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং ১৯৭৯ সালে আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাটায় চাকরি নেন। ১৯৭২ সালে টেলিভিশন ও ১৯৭৩ সালে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অমল চরিত্রের মাধ্যমে আবদুল কাদেরের নাটক দিয়ে অভিনয়ের শুরু। থিয়েটারের প্রায় ৩০টি প্রযোজনার সহস্রাধিক প্রদর্শনীতে অভিনয় করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই’, ‘স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’ এবং ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান আবদুল কাদের। সেখানে তাকে দেখা যায় তিন সদস্যের মাস্তান দলের বাকের ভায়ের সহকারীর চরিত্রে। এর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি আবদুল কাদেরকে। টেলিভিশনে দুই সহস্রাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটক ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’, ‘তিন টেক্কা’, ‘যুবরাজ’, ‘আগুন লাগা সন্ধ্যা’, ‘প্যাকেজ সংবাদ’, ‘সবুজ ছায়া’ ইত্যাদি।
আবদুল কাদের অভিনয় করেছেন বড় পর্দাতেও। ২০০৪ সালে ‘রং নাম্বার’সহ কয়েকটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বেশকিছু বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন এ অভিনেতা। এ ছাড়া তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।
বার্তা২৪