আমদানিকৃত এলএনজি নির্ভরতার চ্যালেঞ্জ

সালেক সুফী

নানা কারণে দেশের প্রধান জ্বালানি সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাসের আবিষ্কৃত সঞ্চয় আশংকাজনক ভাবে নিঃশেষ হতে থাকায় এবং সরকার ভুল পরামর্শে উঁচু মানের আবিষ্কৃত কয়লা সম্পদ আহরণে বিরত থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়ে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এনার্জি ট্রানজিশনের ক্ষেত্রেও বিশ্বব্যাপী এলএনজি প্রথম পছন্দের জ্বালানি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আজ হোক বা দু’দিন পরে হোক বাংলাদেশকে তরল জ্বালানি বা কয়লা হতে বেরিয়ে আসতে হবে। কিন্তু মাত্র  ০..৪২ টন মাথাপিছু কার্বন এমিশন নিয়ে  বাংলাদেশকে এখনই তাড়াহুড়ো করে জ্বালানি বিদ্যুৎ সেক্টর কার্বন শূন্য করার তাগিদ নেই।

বাংলাদেশ কিন্তু ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে শুধু আমদানিকৃত জ্বালানি  নির্ভর হতে পারবে না। বৈষয়িক কারণে ২০২৪ -২০৩০ বিশ্ব জ্বালানি বাজারে এলএনজি সরবরাহে প্রাচুর্য থাকবে। কিন্তু বিপরীতে বিপুল চাহিদা থাকায় মূল্য কখনো বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে না.

দেখুন গ্রিড নন গ্রিড মিলিয়ে ৩০,০০০ মেগাওয়াট+ উৎপাদন সক্ষমতা নিয়েও এবারের তীব্র গ্রীষ্মের সময় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ১৭,০০০ -১৮০০০ মেগাওয়াট চাহিদা মেটাতে পারে নাই। ঢাকা এবং কয়েকটি মহানগরীতে তীব্র দাবদাহের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহে খুব একটা সংকট না থাকলেও ঢাকার বাইরে ৬-৮ ঘণ্টা লোড শেডিংয়ে বিপর্যস্ত ছিল দেশ পুরো এপ্রিল মাস জুড়ে।

এখন দেখছি নিজেদের গ্যাস আহরণ এবং উত্তোলন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আমলা নির্ভর জ্বালানি মন্ত্রণালয় অশুভ মহলের প্ররোচণায় গত ১০-১২ বছর ঘুমিয়ে ছিল। কিছু জ্ঞানপাপীর অসৎ পরামর্শে কয়লা উত্তোলন করছে না। নিজেদের জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতকে স্বনির্ভর করার বঙ্গবন্ধুর দর্শন থেকে বহু দূর সরে থাকা বাংলাদেশ নিশ্চিত গভীর সংকটের দিকে এগিয়ে চলেছে।

এখনো সময় আছে সঠিক পেশাদারদের সম্পৃক্ত করে কয়লা উত্তোলন করা, দ্রুততার সঙ্গে গ্যাস আহরণ-উত্তোলন করার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি  উন্নয়ন বেগবান করার। প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শকদের ভ্রান্ত পরামর্শ থেকে মুক্ত করার। বাংলাদেশ কোনোভাবেই শুধু আমদানিকৃত এলএনজি  নিভর হয়ে কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করতে পারবে না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eight − five =