মাসুম আওয়াল
দৃশ্য ১: ঘরে ছড়ানো ছিটানো বইপত্র দেখা যাচ্ছে। দেয়ালে শোভা পাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সুফিয়া কামাল, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসসহ বিখ্যাত সব লেখকের ছবি। এলোমেলো চুলে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছেন আসাদুজ্জামান নূর। কবিতা লিখতে লিখতে জীবনের একটা বড় সময় পার করেছেন তিনি। বয়স সত্তর ছাড়িয়ে গেছে। আরাম কেদারায় হেলান দিয়ে ঘোরের মধ্যে ডুবে কী কী বলে চলেছেন আনমনে।
দৃশ্য ২: বাড়ির ছাদে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন আসাদুজ্জামান নূর। অভিনেত্রী তারিন তার চুল আঁচড়ে দিচ্ছেন। কোথায় এমন দৃশ্যের দেখা মিললো? ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই মঙ্গলবার উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে এক শুটিং বাড়িতে দেখা বাকের ভাই খ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে। সেদিন ‘জলছবি’ নামের একটি টেলিছবির শুটিং করছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। শুভাশিস সিনহা রচিত টেলিছবিটির পরিচালক ছিলেন হাসান রেজাউল। এতে আসাদুজ্জামান নূরের সহকারীর চরিত্রে অভিনয় করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারিন। আসাদুজ্জামান নূরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন জ্যোতি সিনহা। শুটিংয়ের এক ফাঁকে আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে কথাও হয়েছিল নানা বিষয় নিয়ে। সেদিন অল্প একটুখানি সময় বেশ কেটেছিল নূর ভাইয়ের সঙ্গে। এছাড়া নানা সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমিতে কথা হয়েছে তার সঙ্গে। অভিনয়জীবনে তিনি এতটাই সফল যে তাকে চরিত্রের নাম ধরেই ডাকেন অসংখ্য দর্শক। নূর ভাই ডাকের পরিবর্তে ‘বাকের ভাই’ ডাকটি তাকে শুনতে হয়েছে অনেক বেশি। অক্টোবর মাসে এই গুণী মানুষটির জন্মদিন। নানা গুণের অধিকারী আসাদুজ্জামান নূরের জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার আছে তরুণ প্রজন্মের।
জলপাইগুড়ির সেই ছেলেটি
আসাদুজ্জামান নূর জন্মেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়। ১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী ও মাতা আমিনা বেগমের ঘর আলোকিত করে এসেছিলেন তিনি। পরে নীলফামারী চলে আসেন তারা। নূরের মা-বাবা দুজনেই শিক্ষক ছিলেন। তারা দুই ভাই, এক বোন। ছোট ভাইয়ের নাম আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী। বোনের নাম কাওসার আফসানা। নূর পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে।
সাংস্কৃতিক পরিবেশে বেড়া ওঠা
আসাদুজ্জামান নূরের মা-বাবা দুজনই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ ছিলেন। তাদের কারণেই ছোটবেলা থেকেই দারুণ এক পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট শহর নীলফামারীতে যখন কোনো অনুষ্ঠান হতো, আমার বাবা সেগুলোতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। আমাদের বাড়িতে রিহার্সাল হতো। সেখান থেকেই উৎসাহ পাই। স্কুলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তো ছিলই। পরে আস্তে আস্তে আমার নিজের ভেতরও আগ্রহ তৈরি হলো।’
অন্যরকম কর্মজীবন
পেশাগত জীবনে নানা রকম কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। প্রথমদিকে বিজ্ঞাপনী সংস্থা বিটপিতে চাকরি করতেন। পরে ১৯৭২ সালে বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক চিত্রালীতে সাংবাদিকতা করার মধ্যদিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অধীনে একটি ছাপাখানায় ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত দূতাবাসের (বর্তমানে রাশিয়া) প্রেস রিলেশন অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেড এ (বর্তমানে এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি) সাধারণ ব্যবস্থাপক পদে কাজ শুরু করেন।
মঞ্চ থেকেই অভিনয় শুরু
‘চিত্রালী’ ম্যাগাজিনে সাংবাদিকতা করা সময় একদিন অভিনেতা আলী যাকেরের সাক্ষাৎকার নিতে যান নূর। সেখানেই একদিন নূরকে আলী যাকের বললেন, ‘আপনি রিহার্সাল দেখতে আসেন, সাংবাদিক হিসেবে।’ আসাদুজ্জামান নূর গিয়ে দেখেন আতাউর রহমান, আবুল হায়াত, গোলাম রব্বানী, কাজী তামান্না, ড. ইনামুল হক, লাকী ইনামরা নিয়মিত সেখানে যান। স্বাধীনতার আগে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে নাটক হতো, তখন সবাইকে পাওয়া যেত একসঙ্গে। তখন থেকেই উনাদের সঙ্গে পরিচয় ছিল নূরের। এই টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান নূর। তারপরের গল্পটি সবার জানা।
নাক ফাটে আবুল হায়াতের, অভিনয় জীবন শুরু হয় নূরের
আসাদুজ্জামান নূরের অভিনয়ের শুরুর গল্পটা অন্যরকম। একটি নাটকের রিহার্সেল চলছিল। নাটকের নাম ‘তৈল সংকট’। রশীদ হায়দারের লেখা এই নাটকে একটা মারামারির দৃশ্য ছিল। ভুল-বোঝাবুঝির কারণে বাদল রহমানের ঘুষি লেগে আবুল হায়াতের নাক ফেটে গেল রিহার্সেলের সময়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। অথচ এক দিন পরেই নাটক। বিজ্ঞাপনও চলে গেছে পত্রিকায়। পরিচালক আলী যাকের বললেন, ‘নূরকে নামিয়ে দেওয়া হোক। ও প্রম্পট করে, ওর নাটকটি মোটামুটি মুখস্থ আছে।’ ১৯৭৩ সালের ঘটনা। এভাবেই অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন আসাদুজ্জামান নূর। এর আগে ১৯৭২ সাল থেকেই মঞ্চদল ‘নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়’ এর সাথে ছিলেন নূর। এই নাট্যদলের ১৫টি নাটকে তিনি ৬০০ বারের বেশি অভিনয় করেছেন। এই দলের দুটি নাটকের নির্দেশনা প্রদান করেছেন, যার মধ্যে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ছোট পর্দায় নূর
আসাদুজ্জামান নূর টেলিভিশনে কাজ শুরু করেছেন ১৯৭৪ সালে। তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘রঙের ফানুস’। আবদুল্লাহ আল-মামুনের এই নাটকে ছোট্ট একটা চরিত্র ছিল তার। যার পরিসর মাত্র দুই-আড়াই মিনিটের। এরপর নূর ১১০টিরও বেশি টেলিভিশন নাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। টেলিভিশনে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫), অয়োময় (১৯৮৮), কোথাও কেউ নেই (১৯৯০), আজ রবিবার (১৯৯৯) ও সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)। রেডিওতে প্রচারিত তার নাটকের সংখ্যা ৫০ এরও অধিক। টেলিভিশনে নূরের পছন্দের চরিত্রটি হলো ‘অয়োময়’ ধারাবাহিকের ছোট মির্জা। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে ‘কোথাও কেউ নেই’ বলে জানান আসাদুজ্জামান নূর। মানুষের কাছে এখনো জনপ্রিয় সেই নাটকের বাকের ভাই চরিত্রটি। এ ছাড়া ‘পিঞ্জিরার মধ্যে বন্দী হইয়া রে’ নাটকে খুনির চরিত্রটাও প্রিয়। চরিত্রের নাম নান্দাইলের ইউনূস। ‘নিমফুল’ নাটকে চোরের চরিত্রটিও বেশ জনপ্রিয়।
বড় পর্দায় নূর
আসাদুজ্জামান নূর প্রথম অভিনয় করেছিলেন ‘হুলিয়া’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। এটির পরিচালক ছিলেন তানভীর মোকাম্মেল। নির্মলেন্দু গুণের কবিতার চলচ্চিত্ররূপ ছিলো এটি। এরপর ‘দহন’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। শেখ নিয়ামত ছিলেন সিনেমাটির নির্মাতা। এতে নূর আর হুমায়ূন ফরীদি ছিলেন। এরপর অভিনয় করেছেন শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও আগুনের পরশমণি (১৯৯৪) সিনেমায়। এই দু’টোই তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা। ‘আগুনের পরশমণি’ সিনেমাতে মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে দেখা যায় তাকে।
উপস্থাপক ও আবৃত্তিকার নূর
আসাদুজ্জামান নূর বাংলাদেশের একজন নন্দিত আবৃত্তি শিল্পী। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। উপস্থাপনাও করেছেন টেলিভিশনে। দেশ টিভিতে প্রচারিত ‘কে হতে চায় কোটিপতি’ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্বও পালন করেন তিনি। সেই সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির ব্যবস্থাপক ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর।
নূরের রাজনৈতিক জীবন
১৯৬৩ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন আসাদুজ্জামান নূর। ১৯৬৫ সালে তিনি নীলফামারী কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীনের পর কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে নিজেকে বিরত রেখে সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে নানান সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি পর্যায়ে তিনি আবারও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন।
আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী ২ আসন থেকে ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ৯ম জাতীয় সংসদের বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবার পর ১২ই জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য ও বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
লেখক নূর
আসাদুজ্জামান নূর মঞ্চের জন্য ব্রেখটের নাটকের বাংলা অনুবাদ, রবীন্দ্রনাথের তিনটি উপন্যাসের টিভি নাট্যরূপ এবং টিভির জন্য একটি মৌলিক নাটক রচনা করেছেন। এ মোর অহংকার ও দেওয়ান গাজীর কিসসা তার পুস্তাকাকারে প্রকাশিত নাটক।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি
সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে আসাদুজ্জামান নূর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও দর্শকের প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছেন সব সময়। তবে এক সাক্ষাৎকের নূর বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো শিল্পী জয়নুল আবেদিন থেকে কবি শামসুর রহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক; সবার সান্নিধ্য পাওয়া। তিনি আরও বলেন, ‘গোলাম মুস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, রওশন জামিল, সৈয়দ হাসান ইমামের মতো মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ হয়েছে। হয়তোবা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আমি কখনো যেতে পারিনি, তবে অনেক বড় নেতার সঙ্গে ওঠাবসার সুযোগ হয়েছে, সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এগুলোই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’
ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন
ডা. শাহীন আখতারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আসাদুজ্জামান নূর। শাহীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। পুত্র সুদীপ্ত ও কন্যা সুপ্রভা তাসনীম। পুত্র সুদীপ্ত বাংলাদেশি কূটনীতিক এম আমিনুল ইসলামের কন্যা কাজলি শেহরিন ইসলামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কন্যা সুপ্রভা ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর টিমথি স্টিফেন গ্রিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নূরের বোন কাওসার আফসানা ব্র্যাক, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিভাগের পরিচালক। তার ছোট ভাইয়ের নাম আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদের কন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারপারসন অধ্যাপক সিতারা পারভীন।
শেষ কথা
আসুজ্জামান নূরের জীবনকথা এতো অল্প পরিসরে কতটুকু আর বলা সম্ভব। এখন আর অভিনয়ে তেমন দেখা মেলে না তার। ২০১৭ সালের ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ছেলে নুহাশ হুমায়ূনের পরিচালনায় ‘হোটেল অ্যালব্যাট্রস’ নামের একটা নাটকে অভিনয় করেছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। তার দুই বছর পরে অভিনয় করেন ‘জলছবি’ টেলিফিল্মে। দর্শকরা এখনো নূরের অভিনয় দেখতে চায়। কিন্তু সময় অনেক কিছু কেড়ে নেয় আমাদের থেকে। নিয়মিত অভিনয় ফেরার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘নিয়মিত আর অভিনয়ে ফেরা হবে না। নিয়মিত অভিনয় করতে গেলে যে সময় দিতে হয় সেটা দেওয়া এখন সম্ভব না। রাজনৈতিক জীবন তো চলছে। আমি সংসদ সদস্য। নিজের নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য আছে। তেমনি জাতীয় পর্যায়েও আমরা যারা সংসদ সদস্য আছি তাদের ভূমিকা রাখতে হয়। তাই নিয়মিত অভিনয় করে যাওয়া আর সম্ভব না। কিন্ত যেহেতু অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ও দুর্বলতা আছে সেহেতু মঞ্চে নিয়মিত কাজ করার ইচ্ছে আছে। আর টেলিভিশনের জন্য যদি ভালো গল্প ও পাশাপাশি আমার সময় মেলাতে পারি তাহলে অভিনয় করবো।’ দীর্ঘজীবী হন, নূর ভাই। শুভকামনা জানিয়ে আজকের মতো এখানেই ইতি।
লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ব্যক্তিত্ব