যেকোনো সিনেমার সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখা হয় পাইরেসিকে। প্রযোজকদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতিরও কারণ এই পাইরেসি। প্রায়ই দেখা যায়, হলে সিনেমা মুক্তির কয়েক দিনের মধ্যেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে পাইরেটেড কপি। তাতে হলে দর্শকসংখ্যা কমে যায়, নির্মাতাদের মাথায় হাত ওঠে। তবে এই পাইরেসি আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল আমির খানের জীবনে। আমির অকপটে স্বীকার করলেন তাঁর তারকাখ্যাতির পেছনে পাইরেসির ভূমিকা অনেক।
এবিপি নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘আইডিয়াস অব ইন্ডিয়া সামিট’ অনুষ্ঠানে গত শনিবার অংশ নেন আমির খান। সেখানে তাঁর ক্যারিয়ার ও সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে ৪০ মিনিটের বেশি সময় আলোচনা করেন। সেখানেই জানান, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে পাইরেসি। কীভাবে? গল্পে গল্পে আমির ফিরে গেলেন ২০০৯ সালে।
সে বছর আমিরের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’ মুক্তি পায়। ভারতে সিনেমাটি তুমুল সাফল্য পায়। কয়েক মাস পর অনেকের মারফত খবর পেলেন, চীনেও থ্রি ইডিয়টস নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। সেখানকার তরুণ প্রজন্ম বলতে গেলে এ সিনেমায় বুঁদ তখন। অথচ তখনো চীনের হলে থ্রি ইডিয়টস মুক্তি পায়নি। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল এ সিনেমার সুনাম। ব্যাপকসংখ্যক তরুণ থ্রি ইডিয়টস পাইরেসি করে উপভোগ করছিল। আমির বলেন, ‘পাইরেসির কল্যাণে চীনে আমার নাম ছড়িয়ে পড়ল। পাইরেসিই আমাকে সেখানে তারকা বানিয়ে দিয়েছে। এই কৃতিত্ব অবশ্যই চীনের দর্শকদের, ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সিনেমা হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা থ্রি ইডিয়টস এতটা উপভোগ করেছেন।’
বছর দুয়েক পর চীনে থ্রি ইডিয়টস মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও তত দিনে ব্যাপকসংখ্যক দর্শক দেখে ফেলেছেন, তবু চীনের হলে ভালোই সাড়া পেয়েছিলেন নির্মাতারা। দেশটিতে থ্রি ইডিয়টসের এ সাফল্যে চীনে ভারতীয় সিনেমার দুয়ার খুলে যায়। বিশেষ করে আমিরের সিনেমা নিয়ে মুখিয়ে থাকেন সেখানকার দর্শক।
পরবর্তী সময়ে তাঁর ‘পিকে’, ‘দঙ্গল’ ও ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ চীনের হলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সিক্রেট সুপারস্টার শুধু চীনের বাজার থেকে আয় করে প্রায় আড়াই শ কোটি রুপি।