প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কবিরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২০ জানুয়ারি। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতিতে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আলমগীর কবির। ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর কবির।
যার হাত ধরে ঢাকাই সিনেমা পেয়েছে বেশকিছু কালজয়ী চলচ্চিত্র। আজও সেইসব সিনেমা দর্শককে বিনোদিত করে, ছুঁয়ে যায় জীবনের নানামুখী ভাবনায়। বাংলাদেশে অন্যধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের নেতৃত্বদান করা ছাড়াও আলমগীর কবির নেতৃত্ব দিয়েছেন চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনে, নেতৃত্ব দিয়েছেন চলচ্চিত্র সমালোচনা ও চলচ্চিত্র গবেষণার মননশীল আন্দোলনেও। বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রসারে আলমগীর কবিরই প্রথপ্রদর্শক ছিলেন। আলমগীর কবিরকে ঘিরেই শুরু হয় বাংলাদেশেন বিকল্প চলচ্চিত্র আন্দোলনের বাতাবরণ।
১৯৩৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে আলমগীর কবিরের জন্ম হলেও তার পৈত্রিক বাড়ি বরিশাল। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে তিনি চলচ্চিত্রের উপর প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৬৬ সালে ঢাকায় একটি ইংরেজি পত্রিকায় কাজ করেন এবং চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭১ সালে জহির রায়হানের সাথে এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ পাঠক ছিলেন আলমগীর কবির।১৯৭১ সালে লিবারেশন ফাইটার্স নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন এবং জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইডের ধারা বর্ণনা দেন। চলচ্চিত্র সংসদ ফেডারেশনের প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি।
ফিল্ম আর্কাইভ অ্যান্ড ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পর অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সের সমন্বয়কারী ছিলেন। আলমগীর কবির চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রযোজক, সাংবাদিক, সমালোচক, কাহিনী সংলাপ ও চিত্রনাট্য লেখক, চিত্রগ্রাহক, সুরকার এবং চলচ্চিত্র প্রশিক্ষক ছিলেন।
তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধীরে বহে মেঘনা, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, রূপালী সৈকতে, মোহনা, মহানায়ক, পরিনীতা, ভোর হলো দোর খোল।