আসছে হাইড্রোজেন-চালিত এয়ারক্রাফট

সংবাদমাধ্যম নিউ আটলাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থা আলাস্কা এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যৌথভাবে পুরোপুরি হাইড্রোজেন-চালিত বিমান আনার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ-আমেরিকান অ্যাভিয়েশন কোম্পানি জিরোঅ্যাভিয়া। সংস্থাটির দাবি, এই এয়ারক্রাফটটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাইড্রোজেন-চালিত যাত্রীবাহী বিমান। একইসঙ্গে জিরো-এমিশন বা শূন্য কার্বন নিঃসরণকারী সবচেয়ে বড় এয়ারক্রাফটও হবে এটি।

যৌথ উদ্যোগে বিশ্বে প্রথম হাইড্রোজেন-চালিত এয়ারক্রাফট চালু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দু’টি সংস্থা। আগামী ৩ বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০২৪ সালের মধ্যেই এই এয়ারক্রাফট আকাশে উড়বে, একইসঙ্গে সেই বছরই ওই বিমানে চালু হবে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন। চলতি সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম নিউ আটলাস এবং রব রিপোর্ট।

এছাড়া ৭৬ আসনে যাত্রী বহনে সক্ষম এই বিমানটি ২০২৪ সালের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে আকাশে উড়বে। তাদের দাবি, হাইড্রোজেন-চালিত বিমান এখন আর সুদূরপ্রসারী কল্পনা বা ধারণা নয়। ২০২৪ সালের মধ্যেই বিমানটি বাণিজ্যিকভাবে আকাশে উড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।

ব্রিটিশ-আমেরিকান অ্যাভিয়েশন সংস্থা জিরোঅ্যাভিয়া এর আগেও হাইড্রোজেন-চালিত বিমান তৈরি করেছে। তবে সংস্থাটির সর্বশেষ এই প্রকল্পটি অতীতের যেকোনো প্রকল্পের তুলনায় বড়। হাইড্রোজেন-চালিত এই বিমানটিতে মোট ৭৬টি আসন থাকবে।

অবশ্য ইউনিভার্সাল হাইড্রোজেন এবং এইচ২ফ্লাই নামে দু’টি সংস্থাও দুইটি আলাদা হাইড্রোজেন-চালিত বিমান তৈরি করছে। তবে সেই দু’টি বিমানের আসন সংখ্যা ৪০টি করে। আর তাই জিরোঅ্যাভিয়া’র সর্বশেষ প্রকল্পটি এ যাবতকালের বৃহৎ এবং ওই দুইটি সংস্থার নির্মিতব্য বিমানের আসনসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।

নিউ আটলাসের তথ্য অনুযায়ী, ৭৬ আসনবিশিষ্ট এই বিমানে দু’টি প্রোপেলার থাকবে। দুই পাশের দু’টি ডানায় এগুলো যুক্ত থাকবে। তবে এটিতে কোনো বাফার ব্যাটারি সিস্টেম থাকবে না। কারণ বাফার ব্যাটারি সিস্টেম যুক্ত হলে বিমানের ওজন অনেক বেশি বেড়ে যায়।

জেট ফুয়েলে ভর্তি পূর্ণ আকারের ট্যাংকসহ একটি স্ট্যান্ডার্ড কিউ৪০০ মডেলের বিমান ১ হাজার ২৬৮ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। তবে ১৪টি আসন সরিয়ে নেওয়ার পর নিজেদের হাইড্রোজেন-চালিত বিমানের জন্য জিরোঅ্যাভিয়া’র লক্ষ্য ৫০০ মাইল। এরপরও সংস্থাটির বিশ্বাস, অনেক স্বল্পমাত্রার দূরত্বে এই ফ্লাইট রেঞ্জই যথেষ্ট হবে।

জিরোঅ্যাভিয়া’র প্রধান ভ্যাল মিফতাখভ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘অ্যাভিয়েশন শিল্পকে কার্বনমুক্ত করার কাজটি খুব কঠিন। কিন্তু তারপরও নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের আকাশকে কার্বন নিঃসরণ মুক্ত রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে একধাপ এগিয়ে গেছি।’

২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ফলে ওই বছর মোট নিঃসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মোট ২ দশমিক ৪ শতাংশ উৎপাদন করেছিল। আর তাই হাইড্রোজেন-চালিত বিমানের ব্যবহার বেশ পরিবেশবান্ধব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four + seventeen =