ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা আহমেদ শরীফের আজ (১২ আগস্ট) জন্মদিন। এই খল-অভিনেতা প্রায় ৮ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
কুষ্টিয়ার সম্ভ্রান্ত ওইতিয্যবাহী আহমেদ পরিবারে পিতা মাতা কোল আলোকিত করে ১৯৪৩ সালের ১২ ই আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আহমেদ শরীফ ঢাকাই সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় জীবন ৫০ বছর পার করেছেন। নায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করে, খলনায়ক হিসেবে সফল হলেও অনেক চলচ্চিত্রে ভিন্ন চরিত্রেও অভিনয় করেছেন প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্র ব্যাক্তিত । ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য সুপার ডুপার হিট সিনেমা।
পারিবারিক জীবনে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জনক । শত ব্যাস্ততার মাঝেও তিনি একঝাক তরুন প্রজন্ম কে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন গরিব অসহায় পথশিশুদের জন্য। তিনি তার জন্মস্থান কুষ্টিয়ার সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রত্যয় যুব সংঘের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেও নিরলস ভাবে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন ইভটিজিং মাদক বাল্য বিবাহ রোধে সুন্দর সমাজ গড়ার লক্ষে।
ঢাকাই সিনেমার ‘খলনায়ক’ বলতে যে কজন আছে তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেতা আহমেদ শরীফ। আশি ও নব্বই দশকে রুপালি পর্দার দুষ্ট চরিত্র বলতে তার কথাই ভাবত সবাই। অনেক সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছে পর্দায় তার উপস্থিতির জন্যই।
তবে অনেক দিন অভিনয়ে দেখা যাচ্ছে না এই বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। জানা গেছে, বর্তমানে নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন এ অভিনেতা। আড়ালে চলে গেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সক্রিয় তিনি। ফেসবুকে নিজের নানান আপডেট দেন, তার অভিনীত সিনেমার দৃশ্য, বর্ণনা দিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। ভক্ত-অনুরাগীদের সঙ্গে এভাবেই যুক্ত থাকছেন এ অভিনেতা।
আহমেদ শরীফ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ অসংখ্য পুরুস্কার অর্জন করেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্য রয়েছে অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী,দেনমোহর (১৯৯৬), তিন কন্যা (১৯৮৫),বন্দুক প্রভৃতি। তার অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। সুভাষ দত্ত পরিচালিত এ ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন আহমেদ শরীফ। তবে খলনায়ক হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম অভিনয় করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় ‘বন্দুক’ ছবিতে।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি দেশবরেণ্য অভিনেতা আহমেদ শরীফ, টেলিভিশনের জন্য কিছু নাটক-টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। ২০০১ সালে প্রথম নির্মাণ করেন টেলিফিল্ম ‘ক্ষণিক বসন্ত’। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য তিনি নির্মাণ করেন নাটক ‘ফুল ফুটে ফুল ঝরে’। দীর্ঘ আট বছর পর নাদের খানের প্রযোজনা ও রচনায় হাস্যরসাত্মক গল্পের এ নাটকের নাম ‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি প্রতিষ্ঠার সময়ে প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আহমেদ শরীফ। এরপর আরো দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক এর এবং চার মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন গুণী এই অভিনেতা।