ইউনাইটেডকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লিভারপুল

কোডি গাকপো, ডারউইন নুনেজ ও মোহাম্মদ সালাহর জোড় গোলে কাল এ্যানফিল্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লিভারপুল। এর মাধ্যমে ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে সফল দুটি ক্লাবের মধ্যে পরাজয়ের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে জার্গেন ক্লপের দল। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত ক্লপ বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন পর এটা আমাদের অন্যতম একটি সেরা পারফরমেন্স। সবাই দেখেছে ছেলেরা কি করতে পারে। প্রথমার্ধটা ভাল কাটেনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের বিপক্ষে খেলাটা ইউনাইটেডের জন্য কঠিন হয় পড়েছিল।’

সব ধরনের প্রতিযোগিতা ২৩ ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয় পরাজয়ে কার্যত এক দশক পরে ইউনাইটেডের লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই শেষ করে দিয়েছে। এখনো তৃতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে ১৯৩১ সালের পর প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক কোন ম্যাচে সবচেয়ে বড় পরাজয়ে ইউনাইটেডের সম্মানহানির বিষয়টি এখন সামনে চলে এসেছে। এই ধরনের পরাজয়ের রেশ সাধারনত দীর্ঘদিন রয়ে যায়। এর থেকে বেরিয়ে আসাটাও সহজ নয়।

বিশাল এই জয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা টটেনহ্যামের থেকে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে তিনে নামিয়ে এনেছে লিভারপুল। হাতে রয়েছে বাড়তি একটি ম্যাচ। গত মৌসুমে দুই লিগ ম্যাচ মিলিয়ে ক্লপের দল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৯-০ ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল।  কিন্তু এবারের মৌসুমে শুরুতেই জয় তুলে নিয়েছিল রেড ডেভিলসরা। আগস্টে ২-১ গোলে জয়ী হয়েছিল ইউনাইটেড। ইউনাইটেডের বস হিসেবেই সেটাই টেন হাগের প্রথম জয় ছিল। এখনো লিভারপুলের তুলনায় ১০ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে ইউনাইটেড।

ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বিদায়ের মুখে রয়েছে লিভারপুল। ক্লপ বলেন, ‘সবাই আমাদের জন্য অনুভব করে। সবাই জানে এখনো আমরা অনেক কিছুই করে দেখাতে পারি। আর এই মুহূর্তে আমরা এটাই প্রমান করে চলেছি।’

২০১৬ সালের পর থেকে এ্যানফিল্ডে জিততে পারেনি ইউনাইটেড। আর ম্যাচের শুরুতে এ্যানফিল্ডের কঠিন পরিস্থিতির কথাই শিষ্যদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন টেন হাগ। কিন্তু আবারো সেই এ্যানফিল্ডেই হতাশ হতে হলো ইউনাইটেডকে। বিরতির দুই মিনিট আগে গাকপোর হাত ধরে গোলের দরজা উন্মুক্ত হয়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৪৩ মিনিটে এন্ডি রবার্টসন ইউনাইটেডেরর রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে ডাচ স্ট্রাইকার গাকপোর দিকে বল বাড়িয়ে দেন। কোনাকুনি শটে গাকপো লিভারপুলকে এগিয়ে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিভারপুলের নতুন সাজানো আক্রমনভাগ শেষ পর্যন্ত জ¦লে ওঠে। হার্ভি এলিয়টের ক্রস থেকে উরুগুইয়ান নুনেজ ৪৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। তিন মিনিট পর কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ডেভিড ডি গিয়াকে পরাস্ত করে গাকপো নিজের দ্বিতীয় গোল পূরন করেন। রবার্টসন ও ইব্রাহিমা কোনাটের শট অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৬৬ মিনিটে নুনেজের থ্রু বল থেকে সালাহ গোল করলে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৪-০। জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রস থেকে একেবাওের ফাঁকায় দাঁড়ানো নুনেজ হেডের সাহায্যে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন।

৮৩ মিনিটে ইউনাইটেডের বিচ্ছিন্ন রক্ষনভাগকে সহজেই কাটিয়ে সালাহ নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। লিভারপুলের বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ ১২৯ গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন মিশরীয় এই তারকা। সালাহ বলেছেন, ‘মিথ্যা বলবো না, এটা আমার জন্য সত্যিই বিশেষ এক অর্জন। এখানে আসার পর থেকে এই রেকর্ড আমার মাথায় ছিল। প্রথম মৌসুম থেকেই আমি এই রেকর্ডের পিছনে ছুটেছি।’ ৮৮ মিনিটে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে আসা রবার্তো ফিরমিনো দলের হয়ে সপ্তম গোলটি করেন। এ সপ্তাহেই ফিরমিনো ঘোষনা দিয়েছেন মৌসুমে শেষে তিনি লিভারপুল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

18 + 16 =