ইমপ্রেসন অব রোকেয়া’স: নকশা খোদাই পদ্ধতির কর্মশালা শুরু

কসমস ফাউন্ডেশনের প্রিন্টমেকিং স্টুডিও ‘কসমস আতেলিয়ার ৭১’ এর আয়োজনে ইমপ্রেসন অব রোকেয়া’স শিরোনামে প্রখ্যাত শিল্পী ও শিল্পকলার শিক্ষক অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানার চার দিনের একক ‘নকশা খোদাই পদ্ধতির কর্মশালা’ শুরু হয়েছে। সোমবার রাজধানীর কসমস সেন্টারে এটির উদ্বোধন করা হয়। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মশালা চলবে।

কসমস ফাউন্ডেশনের শৈল্পিক শাখা গ্যালারি কসমসের সহযোগিতায় এই কর্মশালায় বিশিষ্ট বাংলাদেশি শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, বীরেন সোম, নাসির আলী মামুন এবং আনিসুজ্জামান আনিস উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি দেশ ও বিদেশের ১০ জন শিল্পী- অস্মিতা আলম শাম্মী, রুজভেল্ট বেঞ্জামিন, ছবি জুলফিকার, রিফাত জাহান কান্তা, ফারজানা রহমান ববি, মোহাম্মদ রেজওয়ানুর রহমান, বাচ্চু মিয়া আরিফ, কামরুজ্জোহা, শুক্লা পোদ্দার ও এসএম এহসান এতে অংশগ্রহণ করছেন। শিল্পীরা এই কর্মশালায় সফট গ্রাউন্ড এবং স্টেনসিল মিডিয়াতে নকশা খোদাইকর্ম করবেন।

কসমস আতেলিয়ার ৭১ এবং গ্যালারি কসমসের নির্বাহী পরিচালক সৌরভ চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেক শিল্পী কর্মশালায় দু’টি প্রিন্টমেকিং আর্টওয়ার্ক শেষ করবেন। পরে আমরা এই শিল্পকর্মগুলো ২৮ জানুয়ারি বারিধারা গার্ডেন গ্যালারিতে প্রদর্শনী ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন করতে যাচ্ছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রিন্টমেকিং বিভাগের বর্তমান অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস থেকে স্নাতক করেন। এরপর তিনি ১৯৮৩ সালে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী থেকে প্রিন্টমেকিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

পোল্যান্ড, জার্মানি, মরক্কো, ওমান (বাইত আল জুবায়ের জাদুঘর), ফ্রান্স, ইরান, মিশর, তুরস্ক, তাইওয়ান, নেপাল, কোরিয়া, জর্ডান, ডেনমার্ক, পাকিস্তান, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র— ডেনভার ,ওয়াইমিং, এনওয়াই (আর্ট স্টুডেন্ট লীগ) এবং জাপানে তার প্রদর্শনী হয়েছে।

রোকেয়া সুলতানা অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বৃত্তি এবং পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি মর্যাদাপূর্ণ ফুলব্রাইট বৃত্তির আওতায় তিনি নেব্রাস্কা-লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ মাস আবাসিক শিল্পী ছিলেন। তিনি ঢাকা, শান্তিনিকেতন এবং সিডনির শিল্পকলা জগতের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

শিল্পীর পাওয়া পুরষ্কারগুলোর মধ্যে ক্রয় পুরস্কার, সোমারস্টাউন গ্যালারি, চতুর্থ বিয়েনাল, এনওয়াই, ইউএসএ (১৯৯২), তৃতীয় ভারত ভবন প্রিন্ট বিয়েনেলে(১৯৫৫), ১৪তম জাতীয় শিল্প প্রদর্শনীতে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন পুরস্কার(১৯৯৯), নবম এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল সম্মাননা (১৯৯৯), জাতীয় শিল্প প্রদর্শনীতে(২০০২) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। ২০০৩ সালে তিনি প্যারিসের এল আতিলিয়ার লি কুরিয়ার ইট ফ্রিলট-এ ফরাসি সরকারের বৃত্তি লাভ করেন এবং ২০১৭ সালে তিনি কানাডার টরন্টোতে ওপেন প্রিন্ট স্টুডিওতে একজন আবাসিক শিল্পী।

তার শিল্পকর্ম রয়েছে: বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি; রাষ্ট্রপতি ভবন, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, ১৯৭১ গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভস ও জাদুঘর তাইওয়ানের জাতীয় মিউজিয়াম অব ফাইন আর্টস; বাংলাদেশ আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক; সিডনির ব্ল্যাকটাউন আর্ট সেন্টার, নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুকারম্যান মিউজিয়াম অব আর্ট, জর্জিয়ার এসজিসি ইন্টারন্যাশনালের আর্কাইভস; আর্ট ইউনিভার্সিটি একাডেমি, সান ফ্রান্সিসকো; দ্য মিউজিয়াম অব ইন্টারন্যাশনাল কনটেম্পোরারি গ্রাফিক, ফ্রেডরিকস্টাড, নরওয়ে; ইউনিভার্সাল গ্রাফিক মিউজিয়াম, কায়রো; জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি, কলকাতা; ইয়ং ওয়ান কালেকশন, কোরিয়ায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

18 + 7 =