ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে নিহত ৪, আহত কয়েকশ

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হরমোজগান প্রদেশের শহীদ রাজী বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর বিস্ফোরণে বন্দরটি কেঁপে ওঠে বলে তেহরান টাইমস জানিয়েছে।

বিস্ফোরণের একটি সিসিটিভি ভিডিও প্রকাশ করেছে স্থানীয় মেহের নিউজ। সেখানে দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটায় যখন ঠিক দুপুর ১২টা ৬ মিনিট, তখনই বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বন্দর। বড় অংশজুড়ে ওই বিস্ফোরণের পর ব্যাপক ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায় আকাশে।

রয়টার্স লিখেছে, ওমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় দফার পরমাণু আলোচনার মধ্যে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটল। বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। বন্দরটির কয়েকটি কনটেইনার বিস্ফোরিত হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে চারজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে রয়টার্স। ইরানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন জাফারি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বন্দরের রাসায়নিকের কন্টেইনারগুলোর নিম্নমানের মজুদ ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন।

ইরানের বার্তা সংস্থা আইএলএনএ-কে তিনি বলেন, “কন্টেইনারের ভেতরের রাসায়নিকই বিস্ফোরণের কারণ। এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল বন্দরটিতে গিয়ে সতর্কতা দিয়ে এসেছিলেন। সম্ভাব্য বিপদের কথাও তিনি তুলে ধরেছিলেন।”

স্থানীয় একজন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলেন, বন্দরে থাকা বেশ কয়েকটি কন্টেইনারে বিস্ফোরণ হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে তারা হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন। বিস্ফোরণে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণ এলাকা থেকে ট্রাকগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিপজ্জনক পণ্য ও রাসায়নিকও থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের পর ইরানের জাতীয় পেট্রোলিয়াম পরিশোধন ও বিতরণ কোম্পানি বিবৃতিতে বলেছে, ঘটনার সঙ্গে এ কোম্পানির শোধনাগার, জ্বালানি ট্যাঙ্ক, বিতরণ কমপ্লেক্স ও তেল পাইপলাইনের কোনো সংযোগ নেই।

এদিকে বিস্ফোরণের শব্দে কয়েক কিলোমিটার দূরের জানালাও ভেঙে গেছে। ফার্স নিউজ জানিয়েছে, বন্দর আব্বাস থেকে ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণের কেশম দ্বীপ থেকেও শব্দ শোনা গেছে।

বিবিসি লিখেছে, বিস্ফোরণ স্থলের পাশে অফিস ভবনের জানালা ভেঙে চুরমার হয়েছে। একটি ভবনের ছাদ ধসে পড়েছে। রাস্তায় আহত অনেককে দেখা গেছে। ধসে পড়া দেয়ালের নিচে লোকজনের আটকে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এক কর্মকর্তা বলেন, বন্দরের কিছু কর্মী ধসে পড়া ছাদের নিচে আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বন্দরে ছোট আগুন দাহ্য পদার্থের কন্টেইনারে ছড়ালে বিস্ফোরণ হয়। সেসব কন্টেইনারে খুব সম্ভাব্য রাসায়নিকই ছিল। “আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিকট বিস্ফোরণ হয়,” স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।

ইরানের মেহের নিউজ লিখেছে, অজানা কারণে বন্দরের একটি জ্বালানি ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়। ঘটনার পর বন্দরের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। পাঁচ শতাধিক আহতের খবর দেওয়ার পাশাপাশি চারজনের মৃত্যুর কথাও লিখেছে সংবাদমাধ্যমটি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × five =