ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে বন্ধ ৩ দেশের আকাশসীমা, বিশ্বজুড়ে বহু ফ্লাইট ব্যাহত

ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতের জেরে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের তিন দেশের আকাশসীমা বন্ধ হওয়া ছাড়াও বিশ্বজুড়ে ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ইরান ইতিমধ্যেই দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।

আপাতত ইরানে বন্ধ আছে ফ্লাইটও। তাছাড়া, ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার পরই আকাশসীমা বন্ধ করেছে প্রতিবেশী দেশ ইরাক এবং জর্ডান। এসব দেশের আকাশপথ ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতে পারছে না কোনও উড়োজাহাজ।

ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তিন দেশের আকাশসীমা বন্ধ হওয়ায় ব্যাহত হয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিমান পরিষেবা।

বহু উড়োজাহাজের যাত্রাপথ বদলানো হচ্ছে। আবার অনেক উড়োজাহাজকে মাঝপথ থেকেই ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যাওয়া বহু ফ্লাইট বাতিলও হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে সংঘাতপূর্ণ এলাকা বেড়ে যাওয়ার কারণে এয়ারলাইনগুলো বিমান পরিষেবা পরিচালনায় অসুবিধায় পড়েছে। ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও আরও বেড়েছে।

ফ্লাইটরাডারের ডাটায় দেখা গেছে, ইরান, ইরাক এবং জর্ডানের আকাশসীমা খালি হয়ে আছে। সেখান দিয়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোকে সৌদি আরব কিংবা মিশরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার এখন পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসা এবং ইউরোপ অভিমুখী প্রায় ১,৮০০ ফ্লাইট ব্যাহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫০ টি ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ইউরোকন্ট্রোল।

ইসরায়েলের এল আল এয়ারলাইনস জানিয়েছে, তারা ইসরায়েল থেকে যাওয়া এবং ইসরায়েল অভিমুখী ফ্লাইট বন্ধ করেছে। একইভাবে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে এয়ার ফ্রান্স, রায়ানএয়ার এবং উইজ এয়ারলাইন্সও।

উইজ জানায় তারা ওই অঞ্চলে আকাশসীমা আগামী ৭২ ঘণ্টা বন্ধ থাকার কারণে তাদের ফ্লাইটগুলোর যাত্রাপথ পরিবর্তন করেছে।

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া এবং ইউক্রেইন দুই দেশেরই আকাশসীমা বন্ধ। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলটি ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের গুরুত্বপূর্ণ যাত্রাপথ।

ইরানের সীমান্তবর্তী পূর্ব ইরাক বিশ্বে উড়োজাহাজ চলাচলের অন্যতম ব্যস্ত পথ।এই আকাশপথ ধরে প্রতিনিয়তই পশ্চিমের কোনও দেশে কিংবা ইউরোপে যায় এশিয়ার দেশগুলোর বিমান।

আবার ফেরার সময়ও এই পথ ব্যবহার করে উড়োজাহাজগুলো। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প পথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে উড়োজাহাজগুলোকে। এর ফলে বাড়ছে জ্বালানির খরচও।

বিমান সংস্থা লুফথানসা জানিয়েছে, আপাতত তারা ইরানমুখী সব বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখছে। আরেক বিমান সংস্থা এমিরেটস জানিয়েছে, তারা ইরাক, জর্ডন, লেবানন এবং ইরানে পরিষেবা বন্ধ রাখছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার ইউরোপগামী উড়োজাহাজগুলোও বর্তমান পরিস্থিতিতে বিকল্প পথ ধরে গন্তব্যে যাচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা ১৬টি উড়োজাহাজের যাত্রাপথ বদলেছে কিংবা সেগুলোকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen − thirteen =