উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও লিডের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

সিলেট টেস্টে নিউ জিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও দ্বিতীয় দিন শেষে লিডের স্বপ্ন দেখছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩১০ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮৪ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৬ রান করেছে নিউ জিল্যান্ড। ২ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ৪৪ রানে পিছিয়ে কিউইরা। উইলিয়ামসন ১০৪ রানের দারুন ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের সফল বোলার স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৮৯ রানে ৪ উইকেট নেন।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে ৮৫ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১০ রান করেছিলো বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলে বাংলাদেশের শেষ উইকেটের তুলে নেন নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক পেসার টিম সাউদি।

আগের দিন ১৩ রানে অপরাজিত থাকা শরিফুল ইসলামকে লেগ বিফোর আউট করেন সাউদি। অন্যপ্রান্তে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম।

নিউ জিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ৫৩ রানে ৪ উইকেট নেন। কাইল জেমিসন-আজাজ প্যাটেল ২টি করে এবং ইশ সোধি-সাউদি ১টি করে উইকেট নেন।

এরপর নিজেদের ইনিংস শুরু করে সাবধানে খেলতে থাকেন নিউ জিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম লাথাম ও ডেভন কনওয়ে। জুটিতে ৩৬ রান আসার পর ১৩তম ওভারে নিউ জিল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল। শর্ট ফাইন লেগে ২১ রান করা লাথামের ক্যাচ নেন নাইম।

১৬তম ওভারে নিউ জিল্যান্ড শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। সিলি পয়েন্টে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে ১২ রান করা ডেভন কনওয়ের ক্যাচ নেন শাহাদাত।

৪৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে নিউ জিল্যান্ড। এ অবস্থায় তৃতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস। জুটিতে ৫৪ রান যোগ হবার বিচ্ছিন্ন হন তারা। পেসার শরিফুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১৯ রানে বিদায় নেন নিকোলস।

৩২তম ওভারে নিকোলসকে হারানোর পর আবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল। এই জুটি ৩৪তম ওভারেই বিচ্ছিন্ন হতে পারতো। কিন্তু বাংলাদেশের ভুলে সেটি আর হয়নি। শরিফুলের বলে টাইমিং মিস হলে বল ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে জমা পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশের আবেদন সাড়া দেননি আম্পায়ার। তারপরও রিভিউ নেয়নি টাইগাররা। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, মিচেল আউট ছিলেন। ৪ রানে জীবন পেয়ে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪১ রান করা মিচেল শেষ পর্যন্ত তাইজুলের বলে স্টাম্প আউট হন । চতুর্থ উইকেটে উইলিয়ামসন-মিচেল ৬৬ রান যোগ করেন।

মিচেল ফেরার পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ ঠিকতে পারেননি উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেল। তাকে ৬ রানে থামিয়ে দেন স্পিনার নাইম হাসান।

১৭৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে চিন্তায় পড়ে নিউ জিল্যান্ড। দলকে চিস্তামুক্ত করতে ফিলিপসকে নিয়ে বড় জুটির চেষ্টায় সফল হন ততক্ষণে টেস্টে ৩৪তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেয়া উইলিয়ামসন।

ব্যক্তিগত ৬৪ রানে নাইমে বলে মিড উইকেটে তাইজুলের হাতে জীবন পান উইলিয়ামসন। জীবন পেয়ে ফিলিপসকে নিয়ে ৭৮ রান যোগ করেন তিনি। ৭৫তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই সাফল্য তুলে নেন অকেশনাল স্পিনার মোমিনুল হক। স্লিপের শান্তর দারুন ক্যাচে ফিলিপসকে ৪২ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে সময়মত ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোমিনুল।

ফিলিপস ফেরার পর পরের ওভারে টেস্টে ২৯তম ও বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ সেঞ্চুরি পূর্ন  করেন  উইলিয়ামসন। ১১টি চারে ১৮৯ বলে টানা চার টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন তিনি।

সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ ঠিকতে পারেননি উইলিয়ামসন। দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে ৮১তম ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে উইলিয়ামসনকে বোল্ড করেন তাইজুল। প্রতিরোধ গড়ে তোলা ইনিংসে ১১টি চারে ২০৫ বলে ১০৪ রান করেন উইলিয়ামসন।

উইলিয়ামসন ফেরার পর ইশ সোধিকে খালি হাতে বিদায় দেন তাইজুল। এরপর দিনের বাকী সময় আর কোন উইকেট পড়তে দেননি কাইল জেমিন ও সাউদি। জেমিসন ৭ ও সাউদি ১ রানে অপরাজিত আছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − 18 =