উম্বলডনের ব্লকবাস্টার ফাইনালে জকোভিচ, আলকারাজ

বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম উইম্লডন শুরু হবার আগে থেকেই এবার ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর তারকা আলকারজ ও সাবেক শীর্ষ তারকা নোভাক জকোভিচের সম্ভাব্য দ্বৈরথ নিয়ে টেনিস বিশ্বের একটি প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা পূরণ  করেছেন  জকো-আলকারাজ। রোববার উইম্বলডনের হাই-ভোল্টেজ ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন দুই প্রজন্মের দুই শীর্ষ খেলোয়াড়।

এর আগে শুক্রবার সেমিফাইনালে নিজেদের ম্যাচে দাপুটে জয় দিয়ে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছেন এবারের আসরের দুই শীর্ষ তারকা। বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় ও ইউএস ওপেন বিজয়ী আলাকারাজ শেষ চারে দানিল মেদভেদেভকে দাঁড়াতেই দেননি। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ঘাসের-কোর্টের টুর্ণামেন্টে তিন নম্বর মেদভেদেভকে ৬-৩, ৬-৩, ৬-৩ গেমের সরাসরি সেটে পরাজিত করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ এই তরুণ।

আরেক সেমিফাইনালে বর্তমান অস্ট্রেলিয়ান ও ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ ইতালিয়ান নাম্বার এইট ইয়ানিক সিনারকে ৬-৩, ৬-৪, ৭-৬ (৭/৪) গেমে পরাজিত করে নবম ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন। এটি গ্র্যান্ড স্ল্যামে জকোভিচের রেকর্ড ৩৫তম ফাইনাল।

রোববারের ফাইনালে ৩৬ বছর বয়সী সার্বিয়ান তারকা জকোভিচ কিংবদন্তী রজার ফেদেরারের অষ্টম উইম্বলডন শিরোপা এবং মার্গারেট কোর্টের সর্বকালের সর্বোচ্চ ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করার লক্ষ্যে কোর্টে নামবেন।

জুনে ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালে আলকারাজতে পরাজিত করেছিলেন জকোভিচ । স্প্যানিয়ার্ড আলকারাজ অবশ্য ইনজুরির কারনে ঐ ম্যাচে খুব একটা বেশীদুর যেতে পারেননি। ২০ বছর বয়সী আলকারাজ বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি জকোভিচকে পরাজিত করার ক্ষমতা আমার আছে। সবাই জানে তিনি একজন কিংবদন্তী খেলোয়াড়। আমি লড়াই করবো। আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে। এখানে ভয় পাবার কোন কারন নেই, পরিশ্রান্ত হবার কোন সময় নেই।’

এদিকে জকোভিচ বিশ্বাস করেন গ্র্যান্ড স্ল্যামের অভিজ্ঞতা তাকে রোববারের ফাইনালে এগিয়ে রাখবে এবং এই বিষয়টি ফাইনালে গুরুত্বপূর্ন নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু একইসাথে আলকারাজকে নিয়ে সতর্কবার্তাও উচ্চারণ করেছেন  জকোভিচ, ‘সে দারুন ছন্দে রয়েছে। তার মধ্যে এগিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। বয়সে তরুণ, তার মধ্যে শিরোপা জয়ের ক্ষুধা রয়েছে। একইসাথে আমি ক্ষুধার্ত। দেখা যাক কি হয়।’

দুই বছর আগে উইম্বলডনে মেদভেদেভের কাছে দ্বিতীয় রাউন্ডে সরাসরি সেটে পরাজিত হয়ে আলকারাজ যখন বিদায় নিয়েছিলেন তখন স্প্যানিশ এই তরুণ  মাত্র সাতটি গেমে জয়ী হয়েছিলেন। ঐ সময় আলকারাজ ছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭৫ নম্বরে, মেদভেদেভের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। শুক্রবার আলকারাজ তার শক্তিশালী সার্ভিস দিয়েই প্রথম সেটে ৫-৩ ব্যবধানের লিড তুলে নেন। দ্বিতীয় সেটের দ্বিতীয় গেমে মেদভেদেভ শুধুমাত্র একবার ব্রেক পয়েন্ট পেয়েচিলেন। কিন্তু তৃতীয় সেটে আবারো নিজেকে স্বরুপে ফিরিয়ে আনের ইউএস ওপেন বিজয়ী আলকারাজ। তৃতীয় সেটে আলকারাজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাবার পর চারটি ব্রেক পয়েন্ট হারান। এক ঘন্টা ৫০ মিনিটের লড়াইয়ে ২৭তম ফোরহ্যান্ড উইনিং শট দিয়ে প্রথমবারের মত উইম্বলডনের ফাইনাল নিশ্চিত করেন আলকারাজ।

এদিকে সিনারের বিরুদ্ধে জকোভিচের জয় কিছুটা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দ্বিতীয় সেটে ধীর গতির ম্যাচের জন্য জকোভিচকে সতর্ক করা হয়। ক্যারিয়ারের ১২তম উইম্বলডন সেমিফাইনালে খেলতে নামা জকোভিচ প্রথম সেটে তিনটি ব্রেক পয়েন্ট রক্ষা করেন। দ্বিতীয় সেটের প্রথম গেমেই অবশ্য তিনি ব্রেক পয়েন্ট তুলে নিয়েছিলেন।

সেমিফাইনালের আগে ৩৬ বছর বয়সী জকোভিচ নিজেকে ফেবারিট ঘোষনা করেছিলেন। আর সেই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে ইতালিয়ান সিনারের বিপক্ষে আরো একটি ব্রেক পয়েন্ট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় সেটে ২-১’এ এগিয়ে যান। চতুর্থ গেমে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ ৩-১ ব্যবধানে লিড পান। তৃতীয় সেটের তৃতীয় গেমে তিনটি ব্রেক পয়েন্ট নষ্ট করেন জকোভিচ। এরপর ১০ম গেমে দুটি সেট পয়েন্ট রক্ষা করেন। দুই ঘন্টা ৪৭ মিনিটের লড়াইয়ে আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি সিনার।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − ten =