তখন কলেজে পড়তেন অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা। অনেক দিন ধরেই কোনো ক্লাস ছিল না বলে ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিতেন অনেকটা সময়। সে রকম একদিন ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গিয়ে তিনি চমকে ওঠেন। দরজাটি ছিল বাইরে থেকে আটকে রাখা। ঘাবড়ে যান তিনি। অনেক ডাকাডাকির প্রায় ১৫ মিনিট পর দরজা খোলা হলে দেখলেন, তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে চমক। সেদিন ছিল অর্ষার জন্মদিন। এখনো প্রতি জন্মদিনেই সেই দিনের কথা মনে পড়ে যায় অর্ষার, যেমনটি পড়ছে আজও।
আজ অর্ষার জন্মদিন। তখন জন্মদিন উদযাপিত হতো ঘরোয়াভাবে। থাকত কেক, পেতেন উপহার। সেবার কোনো এক কারণে কলেজ প্রায় ছয় মাস বন্ধ ছিল। অর্ষার দিন কাটছিল বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘সেদিন ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি দরজা খুলছে না। বাইরে কোলাহল শুনতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের বাড়িতে এত মানুষ ছিল না। ঘটনায় আমি কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর দরজা খুললেই আমার চোখ ছানাবড়া। আমার সব বন্ধু একসঙ্গে চিৎকার করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল। কলেজে ক্লাস না থাকায় তারা সবাই বাড়িতেই ছিল। আমাদের বাড়িতে এসে পুরো বাড়ি সাজিয়েছিল।’
শৈশবে জন্মদিন তাঁর কাছে ছিল বিশেষ। বছরে এই একবার কেক কাটার জন্য মুখিয়ে থাকতেন তিনি।
এই অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘বছরে একবারই কেকের দেখা পেতাম। সেই জায়গায় এখন কোনো উৎসব হলেই কেক কাটা হয়।’ এবারও জন্মদিনের প্রথম প্রহরে কেক কেটেছেন তিনি। পরিবারের ছোট থেকে বড়, প্রায় সবাই তাঁকে কিছু না কিছু উপহার দিয়েছেন। এগুলোই তাঁর কাছে বিশেষ। জন্মদিন মানেই বয়স বেড়ে যাওয়া। দিনটি নিয়ে যদিও তাঁর তেমন আগ্রহ নেই, তবে পরিবারের অন্যদের আগ্রহে তিনি আনন্দ পান।
করোনার কারণে গত দুই বছরে কাজ কমিয়ে দিয়েছেন অর্ষা। এবারের ঈদে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে তাঁর অভিনীত দুটি নাটক। চলচ্চিত্র ও ওটিটিতে তাঁর ব্যস্ততা বাড়ছে। নতুন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির প্রযোজনায় তাঁকে দেখা যাবে ওয়েব ফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’তে। এটি পরিচালনা করেছেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। এতে আরও অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, ইয়াশ রোহান, ফারিণ, তাসনুভা তিশা, খায়রুল বাশার, জোনায়েদ বোগদাদী প্রমুখ। গল্পটি নিয়ে খুবই আশাবাদী তিনি।
নাটক, চলচ্চিত্র ও ওটিটি—তিন মাধ্যমে নিয়মিত কাজ করলেও ওটিটির কাজগুলো তাঁকে আলাদা করে টানে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিন মাধ্যমেই অভিনয় করতে ভালো লাগে। তবে ওয়েব ফিল্ম বা ফিল্মে কাজ করলে চরিত্রের মধ্যে থাকা যায়। এই কাজগুলো অনেক পরিকল্পনা নিয়ে করতে হয়। কাজগুলো গোছানো থাকে। অভিনয়ের জায়গা থেকে চিন্তার সুযোগ বেশি থাকে।’ কিছুদিন পরই অর্ষা আবারও ব্যস্ত হবেন ‘১৯৭১: সেই সব দিন’ সিনেমায়।