বয়স ৪১ ছুঁইছুঁই। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বোলিংয়ে ধার বেড়েই চলেছে ইংল্যান্ডের পেসার জেমস এন্ডারসনের। সাফল্যের পালকও জমা পড়ছে প্রতিনিয়ত। এ বছর সবচেয়ে বয়স্ক বোলার হিসেবে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে বোলিং তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠে রেকর্ডও গড়েছেন এন্ডারসন।
১৭৯ টেস্টে ৬৮৫ উইকেট নিয়ে পেসারদের মধ্যে সেরা বোলার এখন এন্ডারসন। বর্ষীয়ান পেসার এন্ডারসনের বিশ্ব ক্রিকেটে সাফল্যের পেছনের রহস্য জানালেন ইংল্যান্ডের আরেক অভিজ্ঞ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। ক্যারিয়ারে দশম অ্যাশেজ খেলার দ্বারপ্রান্তে থাকা এন্ডারসনকে নিয়ে ব্রড বলেন, ‘ক্রিকেটের প্রতি আসক্ত এন্ডারসন।’
২০০২ সালের ডিসেম্বরে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় এন্ডারসনের। পরের বছরের মে মাসে লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে পথচলা শুরু হয় তার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এন্ডারসনকে।
টেস্ট-ওয়ানডে ফরম্যাটে ইংল্যান্ডের প্রথম সারির পেসার হিসেবে দলে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠিত করেন এন্ডারসন। ২০১৫ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে খেললেও, টেস্টে এখনও বল হাতে দাপট দেখাচ্ছেন এন্ডারসন। টেস্ট ক্রিকেটে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড এন্ডারসনের দখলে। এমন অনন্য রেকর্ড নিয়ে ১০মবারের মত ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ শুরু করতে যাচ্ছেন এন্ডারসন।
সতীর্থ এন্ডারসনের সাফল্যে উচ্ছসিত ব্রডও। ক্রিকেটের প্রতি আসক্তি থেকেই এন্ডারসনের এমন সাফল্য বলে মনে করেন ব্রড। একত্রে নবমবারের মত এন্ডারসনের সাথে অ্যাশেজ শুরুর আগে ‘লিজেন্ডস অব অ্যাশেজ’ পডকাস্টে এক সাক্ষাৎকারে ব্রড বলেন, ‘অবিশ্বাস্য এক প্রতিন্দ্বন্দি জিমি। এটাই তার মূল শক্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় যেভাবেই খেলুক না কেন, জস বাটলারকে বাদ দিলে সে বোধহয় আমার দেখা সবচেয়ে লড়াকু একজন। এন্ডারসন দৃঢ় সংকল্পের অধিকারী। সত্যি বলতে কি, সে ক্রিকেটে আসক্ত, সে অনুশীলনে আসক্ত। আরও ভালো করতে ও উন্নতি করতে মুখিয়ে আছে সে।’
৪০ বছর বয়সে অতীতের চেয়েও আরো ভাল বোলিং করছে এন্ডারসন বলে মনে করেন ব্রড। তিনি বলেন, ‘এটা তো এখন দেখাই যাচ্ছে। তার বয়স এখন ৪০ এবং সে সম্ভবত চার বছর আগের চেয়ে ভালো বোলিং করছে। নিজের প্রতি ও খেলার প্রতি এটাই তার নিবেদনের অবিশ্বাস্য একটা প্রমাণ।’
গত অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৪-০ ব্যবধানে হারের পর আশ্চর্য্যজনকভাবে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল থেকে বাদ পড়েন এন্ডারসন-ব্রড জুটি। অধিনায়ক হিসেবে বেন স্টোকস ও কোচ হিসেবে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম দায়িত্ব নেয়ার পর পুনরায় দলে ফিরেন এন্ডারসন-ব্রড। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ১২ টেস্টে ইংল্যান্ডের ১০ জয়ে অবদান রাখেন তারা।
ব্রড বলেন, ‘বাজ ও স্টোকসি দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছর থেকে আরও উন্নতি হয়েছে এন্ডারসনের।’ টেস্ট ক্যারিয়ারে একত্রে ১৩৪ টেস্টে ১০১৭টি উইকেট নিয়ে ইতিহাসের সফলতম বোলিং জুটি এন্ডারসন-ব্রড। আসন্ন অ্যাশেজেও আবারও এন্ডারসন-ব্রডের জ্বলে উঠার অপেক্ষায় ইংল্যান্ড।
এন্ডারসনের সাথে নিজের বোলিং নিয়ে ব্রড বলেন, ‘আমাদের জুটিকে আমি এভাবে দেখি, প্রথম ১০ ওভারে নতুন বলে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের চেয়ে দ্রুত কন্ডিশন বুঝতে পারা। আর তখনই আমরা ব্রেক-থ্রু পাই এবং এটি ভালো সর্ম্পকের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। এটি ক্রমাগত তথ্যপ্রবাহের মতো এবং এটিই আমাদের জুটিকে পরের ধাপে নিয়ে গেছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।’
২০০৭ সালে টেস্ট অভিষেকের পর ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬২ ম্যাচে ৫৮২ উইকেট নিয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্রড। ১২১ ওয়ানডেতে ১৭৮ ও ৫৬ টি-টোয়েন্টিতে ৬৫ উইকেটও আছে তার। টেস্টের পাশাপাশি ১৯৪ ওয়ানডেতে ২৬৯ এবং ১৯টি টি-টোয়েন্টিতে ১৮ উইকেট আছে এন্ডারসনের।
বাসস