২০১৩ সালে ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত সুপারহিট হিট সিনেমা ‘দেহরক্ষী’ দিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা শিমুল খান। এরপর সময়ের পরিক্রমায় এই পর্যন্ত তিনি ৫০ টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চলেছেন। যার ভেতরে ৩৫ টি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার এক ডজনেরও বেশি সিনেমা। মাঝখানে কিংবদন্তী পাবলিকেশন থেকে তার লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সভ্যতার ময়নাতদন্ত : Autopsy Of Civilization’ প্রকাশ হবার খবর পাওয়া গেলেও মূলত বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি চলচ্চিত্র বিষয়ক হালনাগাদ খবরের বাইরে আছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও বেশ কিছুদিন যাবত তার নতুন কোনো কাজের খবর তিনি প্রকাশ করেন না বলেই চলে। অবশেষে দীর্ঘদিন পর তিনি নতুন সংবাদ দিলেন। তবে সেই সেই চমকপ্রদ খবরটি এলো একদম ভিন্নভাবে। হ্যা এবার চলচ্চিত্র অভিনেতা শিমুল খান অভিনয় এবং লেখালেখির বাইরে ‘সাদা মনোলিথ : The White Monolith’ শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন। সে উপলক্ষে গত ১১ জানুয়ারী তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘মীর শহীদ পিকচার্স’ এর সাথে উক্ত চলচ্চিত্রটির লেখক এবং নির্মাতা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এসময় নতুন এ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জনাব মীর শহীদ এবং সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক জনাব এটিএম রাকিবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
অভিনয় রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রসংগে শিমুল খান বলেন- আসলে বহু আগেই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম যে একদিন অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবো। ভেবেছিলাম অভিনেতা হিসেবে আরো একটু সিনিয়র হবার পর চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করবো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি আর সবার মতো আমার জীবনের গতিপথও দ্রুত পাল্টে দিয়েছে। তাই সময় নষ্ট না করে শুরু করে দিলাম। বাঁচবোইবা কয়দিন! নিজের লেখা কিছু বাস্তবভিত্তিক গল্পে একজীবনে কয়েকটি অমর চলচ্চিত্র নির্মাণ করে মরতে চাই। তবে চলচ্চিত্র নির্মাণ ভাবনার শুরু থেকে নির্মাতা হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হবার এই সময়কালটা আমার জন্য সত্যিই মারাত্মক চ্যালেঞ্জিং ছিলো। এতো সহজে সবকিছু হয়ে যায়নি। গত দুই বছর যাবত নিরবে আমাকে আমার যোগ্যতা, ধৈর্য্য এবং তুমুল চেষ্টা দিয়েই এই অবস্থায় এসে পৌছাতে হয়েছে। আমার সিনেমাটির প্রযোজক মীর শহীদ ভাই এবং নির্বাহী প্রযোজক এটিএম রাকিবুল বাসার ভাইয়ের কাছে আসলেই আমি চিরঋনী হয়ে থাকলাম। তারা আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন না করলে হয়তো নির্মাতা হিসেবে আমার যাত্রা আরো খানিকটা বিলম্বিত হতো। আমি অবশ্যই বাংলাদেশকে ‘সাদা মনোলিথ : The White Monolith’ শিরোনামের অমর একটি চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে আমার প্রতি তাদের এই বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এবং হবু চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে এটাই আমার চূড়ান্ত শপথ। চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে আমার সকল অতীত ভুলত্রুটি গুলোকে দূরে ঠেলে- চলচ্চিত্র চলচ্চিত্র নির্মাতা হবার এই মহাযাত্রায় আমি সবাইকে নিবিড়ভাবে আমার পাশে চাই।
উল্লেখ্য নির্মাতা শিমুল খান মূলত বিশ্বের প্রথমসারির সব আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে ‘সাদা মনোলিথ : The White Monolith’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। ছবিটির আন্তর্জাতিক পরিবেশক হিসেবে যুক্ত থাকবেন আমেরিকার চলচ্চিত্র প্রযোজনা-পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান মাংকি ফিল্মস আইএনসি। এরপর আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল সফর শেষ হলে নির্মাতা শিমুল খান তার প্রথম চলচ্চিত্রটিকে একে একে সিনেমা হল, টেলিভিশন, ডিজিটাল সহ সম্ভাব্য সকলপ্রকার মাধ্যমে প্রদর্শন করতে চান।
সিনেমাটিতে কারা অভিনয় করবেন সে বিষয়ে নির্মাতা শিমুল খান সিনেমাটির কঠোর গোপনীয়তার স্বার্থে এখনই কিছু বলতে না চাইলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন বর্তমান ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ জনপ্রিয় একজন নায়িকার সাথে থিয়েটার এবং টেলিভিশনের প্রখ্যাত একজন অভিনেতার মেলবন্ধন ঘটাতে চান নিজের নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘সাদা মনোলিথ : The White Monolith’ চলচ্চিত্রে। পরিশেষে শিমুল খান জানান- বঙ্গোপসাগরের একটি নির্জন দ্বীপে আগামী মার্চ মাসের এক তারিখ থেকে একটানা শ্যুটিং করে একদম নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলচ্চিত্রটির শ্যুটিং পর্ব শেষ করা হবে।