অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ছাড়াই আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য ১৭ সদস্যের দল ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দলে নতুন মুখ ঘরোয়া ক্রিকেটে জুনিয়র তামিম নামেই বেশ পরিচিত তানজিদ তানজিদ হাসান তামিম। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
পিঠের ইনজুরির কারনে মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়া তামিম ইকবালের জায়গায় ওপেনিং পজিশনে সুযোগ হয়েছে সদ্য সমাপ্ত ইমার্জিং এশিয়া কাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করা জুনিয়র তামিমের। দলে আরেক ওপেনার হিসেবে আছেন নাইম শেখ।
বিসিবির ভবিষ্যত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য তানজিদ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দারুন পারফরমেন্সের সুবাদে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে তানজিদের সতীর্থ শামীম পাটোয়ারী।
ধারনা অনুযায়ী দলে সুযোগ হয়নি মাহমুদুল্লাহর। এদিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থতার পরও দলে জায়গা ধরে রেখেছেন আফিফ হোসেন। ফিটনেস ক্যাম্পে ডাক পাওয়ায় দলে ফেরার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিলো মাহমুদুল্লাহর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উপেক্ষিতই থেকে গেলেন তিনি।
আজ দল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট একটা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দিয়েছে। ভবিষ্যতে কোন দলের বিপক্ষে এবং কোথায় খেলবে, সব নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করেছে। সব বিষয় বিবেচনা করে মাহমুদুল্লাহকে বাদ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, সামনে এগিয়ে যেতে টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক পরিকল্পনা সাজিয়েছে। কীভাবে দল পরিচালনা করতে চান সেটি পরিষ্কারও করেছেন প্রধান কোচ। আমরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাথেও আলোচনা করেছি এবং এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
গত মার্চে সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৩৭ বছর বয়সী মাহমুদুল্লাহ। ঐ সিরিজের তিন ইনিংসে যথাক্রমে ৩১, ৩২ এবং ৮ রান করেছিলেন তিনি। তার স্ট্রাইক রেট নিয়েও প্রশ্ন আছে। এমনকি ফিল্ডিংয়ের বেশ নড়বড়ে ছিলেন তিনি। যে কারণে গুরুত্বপুর্ন কিছু রানের ক্ষেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বিশ্রামের নামে মাহমুদুল্লাহকে দল থেকে বাদ দেন নির্বাচকরা।
শামীম, আফিফ ও মাহেদিকে এগিয়ে রাখায় উপেক্ষিত হলেন মাহমুদুল্লাহ। সাম্প্রতিক ফিটনেস ক্যাম্পে ইয়ো-ইয়ো টেস্টে ১৭ স্কোর পান তিনি। যা যথেষ্টই ছিলো।
দলে ফিরেছেন ২০২১ সালে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলা অফ-স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মাহেদি হাসান। এছাড়াও দলে ফিরেছেন চলতি বছরের মার্চে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে সর্বশেষ খেলা বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
আবেদিন জানান, এশিয়া কাপের কন্ডিশন এবং প্রতিপক্ষের শক্তি বিবেচনায় রক্ষণাত্মক স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলামের পরিবর্তে নাসুমকে বেছে নিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তিনি বলেন, তাইজুল ‘আক্রমণাত্মক স্পিনার এবং নাসুম হলো রক্ষণাত্মক স্পিনার। এই মুহূর্তে নাসুমের মতো স্পিনার দরকার।’
বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকে কোন চমক নেই। দলে আছেন নিয়মিত পেস বোলিং বিভাগ সামলানো তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান এবং হাসান মাহমুদ।
হাইব্রিড মডেলে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপ। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও শ্রীলংকা। গ্রুপ পর্বে ৩১ আগস্ট ক্যান্ডিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে এবং ৩ সেপ্টেম্বর লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।
প্রতিটি গ্রুপের সেরা দু’টি দল সুপার ফোরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। সুপার ফোরের সেরা দুই দল ফাইনাল খেলবে।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শেখ মাহেদি, নাসুম আহমেদ, শামিম হোসেন, আফিফ হোসেন, শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন ও নাইম শেখ।
স্ট্যান্ড বাই: তাইজুল ইসলাম, সাইফ হাসান ও তানজিম হাসান সাকিব।
বাসস