গত শুক্রবার রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে চলচ্চিত্রের ‘মুভিলর্ড’খ্যাত ডিপজলের বড় ছেলে সৌমিকের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওমর সানি ও জায়েদ খানের মধ্যে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, পূর্বে মৌসুমীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে ওমর সানি সবার সামনে জায়েদ খানকে চড় মারেন। জায়েদ খানও নাকি পিস্তল বের করে তাকে গুলি করার হুমকি দেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন কাণ্ডে অনেকে হতবাক হয়েছেন।
যদিও জায়েদ এটি ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাকে হেয় করার জন্য এমন সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে বলেও দাবি জায়েদ খানের। এ অভিনেতা বলেন—‘ওই দিন রাতে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে পিস্তল নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তা ছাড়া আমি পিস্তল বহনও করি না। পুরো বিষয়টি ভিত্তিহীন। এসব ঘটনা মামলার রায় সামনে রেখে পরিস্থিতি ঘোলা করার অপচেষ্টা। সবচেয়ে বড় কথা, ওমর সানি আমাকে চড়ও দেননি। এটা একেবারে একটি মিথ্যা কথা।’
এ বিষয়ে ডিপজলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কিছু দিন ধরে আমার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কেটেছে। বিয়েতে আমার সহকর্মীসহ অনেক অতিথি এসেছিলেন। একটি পত্রিকায় দেখলাম, কোনো এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে আমার কথা ছেপেছে। আসলে বিষয়টি আমি জানিই না। জানার কোনো কারণও নেই। শত শত অতিথিকে অভ্যর্থনা জানানো এবং তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় নিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। একটি সামজিক অনুষ্ঠানে এমন কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে কোনো ভদ্রলোক বিশ্বাস করবেন না। আরো অনেক গণ্যমান্য অতিথিদের সঙ্গে ওমর সানি-জায়েদকেও আমি অভ্যর্থনা জানিয়েছি।’
ডিপজল আরও বলেন, ‘যদি ধরেও নিই, তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য রয়েছে, তাহলে কি তারা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে এমন ঘটনা ঘটাবে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তারা তো শিল্পী, তারা জানে কোথায় কী ধরনের আচরণ করতে হয়। ফলে পুরো বিষয়টিই ভিত্তিহীন ও অসত্য। এখন কেউ কেউ যদি কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এ ধরনের কথা ছড়িয়ে থাকে, তাহলে বলব তারা ভালো কাজ করেননি। এত ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে কথা বলাও তো অশোভন।’
যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা কাজটি ঠিক করছেন না বলে মনে করেন ডিপজল। তিনি বলেন, ‘যারা এসব কথা ছড়িয়েছে, তারা চলচ্চিত্রের বদনাম করার জন্য করছে। কারণ, আমরা সেলিব্রেটি। আমাদের সামাজিক মানমর্যাদা ও দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমাদের মধ্যকার যেকোনো ধরনের অশোভনীয় আচরণ চলচ্চিত্রের সুনাম ক্ষুণ্ন করে। ফলে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আমাদের সতর্ক থাকতে হয়। আমরা সমাজের বাইরে নই। আমাদেরও পারিবারিক-সামাজিক জীবন রয়েছে। এমন কোনো আচরণ করা যাবে না, যা আমাদের দর্শকের মনে খারাপ ধারণা সৃষ্টি করে।’
বিয়ের অনুষ্ঠানের ভেন্যুতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তা উল্লেখ করে ডিপজল বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান যেখানে হয়েছে, সেটি অত্যন্ত সুরক্ষিত এবং নিরাপত্তা বেষ্টিত ছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল। প্রবেশের ক্ষেত্রে মেটাল ডিটেক্টর ছিল। প্রত্যেককেই এই নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পিস্তল বা অন্যকোনো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ নেই। কাজেই জায়েদ বা অন্য যে কেউ হোক না কেন, কারো পক্ষেই অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না। যারা জায়েদ ও ওমর সানির কথিত ঘটনা ছড়িয়েছে, তারা ভালো কাজ করেনি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের এক ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য এর পেছনে কাজ করেছে বলে আমি মনে করি।’
রাইজিংবিডি