ওয়েস্ট ইন্ডিজে ইতিহাস সৃষ্টি করে টি২০ জয় করলো বাংলাদেশ

সালেক সুফী

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওদের মাটিতে টি২০  সিরিজ জয় দূরে থাক কোন ম্যাচ আগে জিততে পারেনি। এবারে কয়েকজন প্রথম চয়েস খেলোয়াড় দলে না থাকা সত্ত্বেও তরুণ দল দিয়ে টিম টাইগার্স পর পর দুই ম্যাচ জিতে নিয়ে টি২০ সিরিজ জিতে নিয়েছে। বিজয় দিবসে ১৪৭ রান করে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বোলারদের কৃতিত্বে ৭ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। আজ কিন্তু কঠিন উইকেটে বাংলাদেশের পুঁজি ছিল মাত্র ১২৯/৭। আবারো বাংলাদেশের আগ্রাসী এবং নিখুঁত বোলিং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ২৭ রানের সহজ জয় এনে দেয়।  এমনিতেই বিজয় মাসে বিজয় উৎসবে মেতে আছে বাংলাদেশ।  জাতীয় ক্রিকেট দলের বহুল কাঙ্ক্ষিত সিরিজ জয় নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের উৎসবকে রাঙিয়ে দিবে।

কিংস্টনের আরোনডেলের উইকেটে অসম বাউন্স ছিল। স্পিন এবং পেস দুই ধরনের বোলারদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করায় চ্যালেঞ্জ ছিল।  এই ধরনের উইকেটে ব্যাটিং করায় অনভ্যস্ত বাংলাদেশের ব্যাটিং তাসের ঘরের মতোই ঝরে পড়েছিল। লিটন, তানজিদ তামিম, সৌম্য দাঁড়াতেই পারেনি। মেহেদী মিরাজ ( ২৬) এবং জাকের (২১) ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেনি।

৮৮ রানে ৭ম উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের লেট অর্ডারে বিকশিত হতে থাকা শামীম হোসেন (৩৫* ) ওর অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সারথি তানজিদ তামিমকে সঙ্গী করে অবিচ্ছিন্ন ৮ম উইকেট জুটিতে ৪১ রান যোগ করে বাংলাদেশকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেয়। ভরসা ছিল যে উইকেটে গুডাকেশ মতি, আকিল হোসেন, রাস্টোন চেসকে খেলতে নাভিশ্বাস ওঠে সেখানে মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেনদের খেলা সহজ হবে না।

তদুপুরি তাসকিন আহমেদের নেতৃত্বে হাসান মাহমুদ, তানজিম সাকিব এখন অনেক উন্নত মানের পেস বোলার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে বাটসমেনদের বাংলাদেশ শুরু থেকেই কোনঠাসা রেখে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নেয়। তাসকিন (৩/১৬), রিশাদ (২/১২), মাহেদী (২/২০) এবং তানজিম সাকিব ( ২/২২) সমন্বিত ভাবে জ্বলে উঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে ১০২ রানে গুটিয়ে দেয়। ওদের ইনিংসে রোস্টন চেস (৩২) আর আকিল হোসেন (৩১) ছাড়া কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি।

২৭ রানে ম্যাচ জয় করে বাংলাদেশ তিন ম্যাচ সিরিজে একটি ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ সিরিজ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি২০ সিরিজ জয়ের নতুন মাইলফলক স্থাপন করে। তরুণ এই দলের অনেক সম্ভাবনা আছে। ভাবনা শুধু ব্যাটিং নিয়ে। বিশেষত লিটন দাসের ব্যাট কথা বলছে না। ওকে শেষ ম্যাচে  বিশ্রাম দিয়ে পারভেজ ইমনকে সুযোগ দিয়ে দেখা যেতে পারে।

টাইট ম্যাচ জয়ের অভিজ্ঞতা গড়ে ওঠায় দলটি ক্রমাগত পরিণত হচ্ছে। নতুন টিম ম্যানেজমেন্ট সঠিক ভাবে পরিচর্যা করলে এই দলটি আরো গৌরব বয়ে আনবে সন্দেহ নেই। দলের হার না মনমানসিকতা ভালো লাগছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 × three =