জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশের স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরীর আজ জন্মদিন। ১৯৬৬ সালের এই দিনে (২৮ আগস্ট) দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন এই তারকা। তার বাবা বিখ্যাত সংগীতব্যক্তিত্ব মাহমুদুন নবী। তার বড় বোন ফাহমিদা নবী ও ছোট ভাই পঞ্চমও গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। প্রতিবারের মতো এবারও পারিবারিকভাবেই নিজের জন্মদিন পালন করছেন বলে জানান এই গায়িকা।
সামিনা চৌধুরী জানান, জন্মদিনটা জমকালোভাবে পালিত না হলেও সাধারণত বিশেষ এই দিনে কোনো কাজই রাখেন না তিনি। কারণ এই দিনটি পরিবারের সঙ্গেই কাটাতে পছন্দ করেন তিনি। প্রতি জন্মদিনে মায়ের হাতে একটা উপহার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ছেলের কাছ থেকে তিনি উপহার পান। এই বিষয়গুলো তাকে আনন্দ দেয়।
চলচ্চিত্র ও আধুনিক গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীতেও সামিনা চৌধুরী মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন শ্রোতাদের মধ্যে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগীতশিল্পী হিসেবে সামিনার জন্ম হয়েছিল ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’ চলচিত্রের গানের মাধ্যমে। এরপর সিনেমার গানে নিয়মিত থেকেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে গাওয়া সামিনার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’, ‘আমার মাঝে নেই এখন আমি’, ‘হও যদি ঐ নীল আকাশ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ‘শৈশবের দিনগুলো’ শিরোনামে সামিনা চৌধুরীর প্রথম অডিও অ্যালবাম। গানের সুর ও সংগীত পরিচালনায় ছিলেন নকীব খান। আধুনিক গানের তালিকায় কাওসার আহমেদ চৌধুরীর রচনায় লাকী আখন্দের সুরে ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ সামিনা চৌধুরীকে কালজয়ী করেছে।
সামিনার আরও অন্যান্য গানের মধ্যে আছে ‘ঐ ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায়’, ‘এই যাদুটা সত্যি হয়ে যেতো’, ‘কোনো এক সুন্দরী রাতে’, ‘তুমি এলে পায়ে পায়ে ফুল ফোটে ফুল ঝরে’, ‘আমার দুই চোখে দুই নদী’ ও ‘সাত ভাই চম্পা’ ইত্যাদি। বর্তমানে খুব একটা নিয়মিত নন গানে। কয়েক বছর ধরে নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নতুন গান করে যাচ্ছেন তিনি। এর বাইরে তাকে খুব কম পাওয়া যায়। সামিনা চৌধুরী সর্বশেষ বৃষ্টি নিয়ে ডা. রুখসানা পারভীন সুরমার কথায়, মুরাদ নূরের সুরে ‘মেঘবরষা’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক পুরস্কার-সম্মাননা জয় করেছেন তিনি। তার মধ্যে ১৯৮১ সালে আলাউদ্দিন আলীর সুরে ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ এবং আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুরে ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় গান গেয়ে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ‘রানি কুঠির বাকী ইতিহাস’ ছবির ‘আমার মাঝে নেই এখন আমি’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ২০০৬ সালে।