আফরোজা আখতার পারভীন
আন্তরিকতা থাকলে বৈশ্বিক পরিস্থিতি কোন বাধা হওয়ার কথা না। বিসিপিসিএল ইপি ক্লাইমেট টকস-এর ১৭তম পর্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের সিইও সৈয়দ জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমরা আশা করেই যাচ্ছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে কোভিডের কারণে বেইল আউটের জন্য ট্রিলিয়ন ডলার সংগ্রহ হতে পারে। জলবায়ু তহবিলের বিষয়ে তারা সেভাবে কাজ করছে না। অধিকাংশই তহবিল দিচ্ছে ঋণ হিসেবে, সেটাকেও তারা হিসাব করছে ৮০ বিলিয়নের মধ্যে। আমরা আশা করছিলাম সহায়তা হিসেবে দেবে। ২০ শতাংশ আসছে অ্যাডাপটেশনের জন্য, ৮০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে মিটিগেশনের জন্য। সেখানেও তাদের দেশের কনসালটেন্সি ফার্ম সুবিধা পাচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ আগে থেকেই ছিল। কোভিড যদি উদাহরণ হিসেবে ধরি, তাহলেও দেখবো তারা অর্থায়ন করতে পেরেছে। এখানে আসলে আন্তরিকতার বিষয়টি বড়। আন্তরিকতা থাকলে বৈশ্বিক পরিস্থিতি কোন বাধা হওয়ার কথা না।
তিনি বলেন, অ্যাডাপটেশনে যদি ফান্ডিং না করা হয়, তাহলে লস অ্যান্ড ড্যামেজ বাড়তে থাকবে। উন্নত বিশ্ব লস অ্যান্ড ড্যামেজকে গুরুত্ব দিয়েছে। অনুন্নত দেশগুলোর অ্যাডাপটেশনের জোর দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের জন্য অ্যাডাপটেশন সবচেয়ে বেশি জরুরি। না হলে আমাদের লস অ্যান্ড ড্যামেজ বাড়তে থাকবে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে যেসব কাজ করেছি, সেগুলোকে তুলে ধরতে হবে। তাহলে তারা আগ্রহী হবে মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশ্নে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকার ও সিভিল সোসাইটি এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মধ্যে কোন কোন নীতির বিষয়ে শক্তভাবে দ্বিমত পোষণ করা হয়। তবে আমার জানা মতে কোন সংগঠন বিদেশে গিয়ে দ্বিমত দেখায় না।
উন্নত দেশের সিভিল সোসাইটির ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যা দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে সিভিল সোসাইটি অনেকটা প্রগ্রেসিভ। তবে আগে সম্মিলিতভাবে অনেক মুভমেন্ট করতে পারতো। এখন কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কপে যোগদান থেকে বিরত থাকার কথা বলেছিলেন। তবে সিভিল সোসাইটির চাপে এখন যোগদানে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উন্নত দেশে সরকারের চেয়ে সিভিল সোসাইটি অনেক বেশি সংবেদনশীল। এনজিওগুলো চলে উন্নত দেশের সিভিল সোসাইটির অর্থায়নে। আমরা দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি ভিডিও মাধ্যমে তুলে ধরছি। এতে সচেতনতা বাড়ছে, জনমত বাড়তেও সহায়ক হবে। উন্নত দেশগুলোর সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি পাবে।
আমি আশা করছি ‘শার্ম আল শেখ প্রোগ্রাম’ নামে কোন ঘোষণা আসলেও আসতে পারে। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোকে আটকানোর আর কোন পথ দেখছি না। সিভিল সোসাইটি মাঝে মাঝে হতাশা ব্যক্ত করে, কারণ ইমিশন হ্রাস করার বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা মিটিগেশন নিয়ে বেশি আগ্রহী। তারা অর্থায়ন নিয়ে কথা বলে, নিজ দেশের মিটিগেশন নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী না। তাদের কার্যক্রমগুলো যদি সচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করা হতো, তাহলে তাদের আন্তরিকতা জানা যেত।
তিনি বলেন, বাস্তবায়ন এবং ক্লাইমেন্ট ফাইন্যান্সের ডেলিভারি প্ল্যানের দিকনির্দেশনা জরুরি। আমার ধারণা অ্যাডাপটেশনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত আসবেই। এবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে কিভাবে কাজ হবে। লস অ্যান্ড ড্যামেজের বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।