এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সৌর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন ও উদ্যোক্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কপ২৮ এর অধিবেশনে সোলারএক্স স্টার্টআপ চ্যালেঞ্জ চালু করেছে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স (আইএসএ)। আফ্রিকাতে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি সোলারএক্স এপিএসি বিশ্বের নানা প্রান্তে তাদের সৌরশক্তির এইসকল উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত।
এই যুগান্তকারী উদ্যোগের লক্ষ্য হল ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা, বৈশ্বিক শক্তির রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা এবং বিনিয়োগকে শক্তিশালী করা। আইএসএ-এর মহাপরিচালক অজয় মাথুর কৌশলগত প্রচারণার মাধ্যমে সৌরশক্তি স্থাপনের উপর জোর দিয়েছেন।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সৌরশক্তি স্থাপন ও উন্নয়নের সুবিধার্থে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার ও ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স। চুক্তিটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বর-এর মধ্যে বাস্তবায়িত হবে যার মূল লক্ষ্য বিনিময়যোগ্য সৌর প্রকল্পের পাইপলাইন এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ করে বাংলাদেশকে সৌরশক্তি উৎপাদনে একটি নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে পৌছে দেওয়া।
আইএসএ-এর মহাপরিচালক ড. অজয় মাথুর বলেন, “সোলারএক্স স্টার্টআপ চ্যালেঞ্জ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সৌর স্থাপনাকে ত্বরান্বিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। নবায়নযোগ্য শক্তির প্রয়োজন এমন অর্থনীতিতে আমরা প্রকল্পগুলো সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছি। আইএসএ উভয় দিক থেকেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। আমরা সরকারের সাথে সহযোগিতা করছি ব্যবসায়িক অনুকূল নীতি প্রতিষ্ঠা করতে এবং সোলারএক্স-এর মাধ্যমে বিনিয়োগে আকর্ষণ করতে। আফ্রিকায় সোলারএক্স-এর সাফল্যের উপর ভিত্তি করে ও নারী-নেতৃত্বাধীন স্টার্টআপকে উৎসাহিত করতে ‘সোলার ফর শী’ নামক আরেকটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই উদ্যোক্তারা অ্যামাজন ও গুগল-এর মতো সাফল্য অর্জন করবে।”
সোলারএক্স স্টার্টআপ চ্যালেঞ্জের অধীনে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে ২০টি স্টার্টআপ নির্বাচন করা হবে যেখানে প্রত্যেকে ১৫,০০০ মার্কিন ডলার করে মোট ৩০০,০০০ মার্কিন ডলার অনুদান পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সাফল্য, উদ্ভাবন এবং কৌশলগত নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মের সুযোগ করে দিবে। এছাড়াও, এর মাধ্যমে সফল উদ্যোক্তারা অভিজ্ঞ পেশাদারদের কাছ থেকে পরামর্শ পাবে। বাজারের অনুপ্রবেশ এবং সম্প্রসারণের সুবিধার্থে, সোলারএক্স বিজয়ীদের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সাথে সংযুক্ত করা হবে এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে।
ডা. মাথুর আরও বলেন, “আইএসএ বিনিয়োগ সঞ্চালনায় একটি গ্লোবাল সোলার ফ্যাসিলিটি প্রতিষ্ঠা করেছে এবং উদ্যোক্তাদের সাথে এর পরিচয় করার মাধ্যমে, আমরা স্থানীয়ভাবে প্রাসঙ্গিক ব্যবসায়িক মডেলগুলোকে উৎসাহিত করতে এবং একটি শক্তিশালী প্রকল্পের পাইপলাইন তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। উদ্যোক্তা, অর্থায়ন এবং বিনিয়োগের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমরা এনার্জি ট্রানজিশনে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছি৷ আমাদের লক্ষ্য হলো সৌরশক্তির ভবিষ্যত গঠন ও বৈশ্বিক জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।”
এছাড়াও, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সোলারএক্স চ্যালেঞ্জকে সমর্থন করছে সিকোইয়া ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন। সিকোইয়া ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টি উলম্যান বলেন, “আইএসএ সদস্য দেশগুলোতে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী শক্তির সমাধানে এবং গ্লোবাল এনার্জি ট্রানজিশনে সর্বদা সহযোগীতা করে যাচ্ছে সিকোইয়া ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন। সেই লক্ষ্যে, আমরা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং তার বাইরেও সৌর স্কেল-আপ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সোলারএক্স চ্যালেঞ্জের সাথে সহযোগীতায় আগ্রহী।”
আফ্রিকাতে ধারাবাহিক সাফল্যের পর থেকে বিশ্বের ২৮টি দেশ থেকে ১৮২টি আবেদন পেয়েছে যাদের মধ্যে সাতটি মহিলা-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগসহ ২০টি বিজয়ী প্রতিষ্ঠান পেয়েছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল একটি টেকসই এবং সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যত গড়তে আইএসএ-এর এই উদ্যোগটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।