কবি কাজী রোজী আর নেই

 

করোনার সঙ্গে লড়ে অবশেষে চলে গেলেন কবি ও রাজনীতিবিদ কাজী রোজী। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় সাবেক এই সংসদ সদস্য মারা যান বলে জানিয়েছেন তার কন্যা সুমী সিকান্দার।

এদিকে বাসস জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশিষ্ট কবি ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রোজীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

রাষ্ট্রপতি এক শোক বার্তায় বলেন, কাজী রোজী তার লেখনীর মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে কাজ করে গেছেন। একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায়ও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। রাষ্ট্রপ্রধান কাজী রোজীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী এক শোক বার্তায় বলেন, কবিতার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তার সাহসী ভূমিকা স্মরণীয় থাকবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

নানান শারীরিক জটিলতা নিয়ে তাকে গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় তাকে আইসোলেশন ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেসময় সুমী সিকান্দার জানিয়েছিলেন, তার মায়ের মস্তিষ্ক কাজ করছিল না, কিডনিতে ইনফেকশন; মাল্টি অর্গান প্রবলেম।

রবিবার সকালে সুমী  জানান, কাজী রোজীর মরদেহ হাসপাতাল থেকে সেগুনবাগিচার বাসভবনে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে মিরপুরে দাফন করা হতে পারে।

কবিতার পাশাপাশি গানও লিখেছেন কাজী রোজী। মাইলসের ‘প্রথম প্রেমের মতো’, প্রবাল চৌধুরীর গাওয়া ‘ভালোবেসে করবো আপন আরও আপন’- এর মতো বেশ কিছু গানের রচয়িতা কাজী রোজী গীতিকবি সংঘের আজীবন সদস্য ছিলেন।

কাজী রোজী ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।

গত শতাব্দির ষাটের দশকে কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন কাজী রোজী। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো— ‘লড়াই’, ‘পথঘাট মানুষের নাম’, ‘আমার পিরানের কোনো মাপ নেই’ প্রভৃতি। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০২১ সালের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

কবিতা চর্চা ছাড়াও তিনি সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন, ২০০৭ সালে তথ্য অধিদফরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর নেন। পরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাতক্ষীরা জেলার জন্য নির্ধারিত সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাংলা ট্রিবিউন

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

fifteen − nine =