কবি হেলাল হাফিজের জন্মদিন আজ শনিবার (৭ অক্টোবর)। ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে নিজ শহরেই। কবির বাবার নাম খোরশেদ আলী তালুকদার। মায়ের নাম কোকিলা বেগম। ১৯৬৫ সালে নেত্রকোনা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ওই বছরই কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।
কবি হেলাল হাফিজের লেখালেখির সূচনা ঘটে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। ‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ কালজয়ী কবিতার এ লাইন দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। হেলাল হাফিজ বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি যিনি স্বল্পপ্রজ হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
কবি প্রথম জীবনে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসবে বেছে নিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক ‘পূর্বদেশে’ সাংবাদিকতায় যোগদান করেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য-সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক ‘দেশ’ পত্রিকার সাহিত্য-সম্পাদক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক ‘যুগান্তরে’ কর্মরত ছিলেন।
কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে হেলাল হাফিজকে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তিনি পেয়েছেন- যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা। অকৃতদার এই কবি বর্তমানে রাজধানীতে বসবাস করছেন।