কষ্টার্জিত জয় পেলো বেলজিয়াম

দ্বিতীয়বারের মত বিশ্ব মঞ্চে খেলতে নামা কানাডার বিপক্ষে কর্ষ্টাজিত জয় দিয়ে ২২তম ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে  র‌্যাকিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে থাকা  বেলজিয়াম। দলের জয়ের নায়ক থিবো কোর্তোয়া। গত বুধবার রাতে এফ গ্রুপে এবং দিনের শেষ ম্যাচে ১৩বার বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বেলজিয়াম ১-০ গোলে হারিয়েছে কানাডাকে। পুরো ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলা  কানাডা। প্রতিপক্ষের  গোলবারে ২২টি শট নিয়েও কাঙ্ক্ষিত গোল পায়নি ।

অষ্টম মিনিটে কানাডা স্ট্রাইকার আলফোনসো ডেভিসের পেনাল্টি শট বেলজিয়ামের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া রুখে না দিলে, ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। শুধুমাত্র পেনাল্টিই নয়, ম্যাচে কানাডার আরও কয়েকটি গোলের ভালো সুযোগ ভেস্তে দিয়েছেন কোর্তোয়া। ৪৪ মিনিটে বেলজিয়ামের পক্ষে জয়সূচক গোলটি করেন স্ট্রাইকার মিশি বাটশুয়াই।

আল-রাইয়ানের আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়ামে ৩৩ বছর পর ফুটবলের মঞ্চে দেখা হয় বেলজিয়াম ও কানাডার। ১৯৮৯ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে প্রথম ও শেষবার মুখোমুখি হয়েছিলো এই দু’দল। ঐ লড়াইয়ে ২-০ গোলে জয় পেয়েছিলো বেলজিয়াম। র‌্যাকিংয়ে ৪৯তম দল কানাডার বিপক্ষে স্পষ্টভাবে ফেভারিট ছিলো দ্বিতীয়স্থানে থাকা বেলজিয়াম। তবে প্রতিপক্ষ  ফেভারিট থাকলেও ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ খেলার সুযোগটা দারুন স্মরনীয় করে রাখাই প্রধান লক্ষ্য ছিলো কানাডার। ১৯৮৬ সালে প্রথম ও শেষবারের মত বিশ্বকাপ খেলেছিলো কানাডা।

বেলজিয়ামের বিপক্ষে দারুন শুরুর সুযোগ হাতছাড়া করে কানাডা। অষ্টম মিনিটে বেলজিয়াম ডি-বক্সের ভেতর মিডফিল্ডার ইয়ানিক কারাসকোর হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন কানাডার স্ট্রাইকার আলফোনসো ডেভিস। ডান পাশে ঝাপিয়ে পড়ে ডেভিসের পেনাল্টি শট রুখে দেন বেলজিয়ামের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। এগিয়ে যাবার সেরা সুযোগ হাতছাড়া করে কানাডা। গোল না পাবার হতাশায় না পুড়ে বেলজিয়াম দূর্গে আক্রমণের পর আক্রমণ চালাতে থাকে   কানাডা। ১১ ও ১৩ মিনিটে কানাডার দু’টি আক্রমণ প্রতিহত করেন বেলজিয়ামের রক্ষণভাগ।

২৭ ও ৩০ মিনিটে কানাডার আবারও দু’টি আক্রমণে  কোনঠাসা হয়ে পড়া বেলজিয়ামকে  রক্ষা করেন কোর্তোয়া। ৩০ মিনিটের আক্রমণে গোল পেয়েই গিয়েছিলো কানাডা। কর্নার থেকে বল পেয়ে বেলজিয়ামের গোলমুখে শট নিয়েছিলেন ডিফেন্ডার এ্যালিস্টার জনস্টোন। কিন্তু এবারও তার শট দারুন দক্ষতায় ঝাপিয়ে পড়ে আটকে দেন কোর্তোয়া।

৪৩ মিনিট পর্যন্ত বেলজিয়ামকে চাপে রেখে দুর্দান্ত লড়াই করেছে কানাডা। ৪৪ মিনিটে কানাডার আত্মবিশ্বাসে বড়সড় ধাক্কা দেয় বেলজিয়াম। মধ্যমাঠ থেকে উড়ে আসা বল ডি বক্সের সামনে পান স্ট্রাইকার মিশি বাটশুয়াই। বল পেয়ে আর দেরি না করে  অন টাচ শটে গোল করেন বাটশুয়াই। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। শেষ পর্যন্ত  ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বেলজিয়াম। এই অর্ধে বেলজিয়ামের জালে ৬টি শট নিয়েও গোল না পাওয়ার হতাশা ছিল  কানাডা দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের চোখে-মুখে।   বেলজিয়াম শট নিয়েছিলো মাত্র ২টি।

ম্যাচে সমতা আনতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমন অব্যাহত রাখে কানাডা। ৪৮ ও ৫০ মিনিটে কানাডার দু’টি সুন্দর আক্রমণও জাল খুঁজে পায়নি। ৬৩ ও ৬৭ মিনিটে আবারো  আক্রমন করে কানাডা। এই দু’টি আক্রমনও ভেস্তে যায় বেলজিয়ামের ডিফেন্ডারের দৃঢ়তায়। ৭৭ ও ৮০ মিনিটেও দু’টি আক্রমণ করেছিলো কানাডা। কিন্তু ভাগ্য সহায়তায় না হওয়ায় বলকে বেলজিয়ামে জালে পাঠাতে পারেনি তারা।

কানাডার আক্রমণের চাপে কোনঠাসা হয়ে পড়া বেলজিয়াম দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে আক্রমণের মাত্রা বাড়ালেও  কোন ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত বাটশুয়াই’র দেয়া একমাত্র গোলেই ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে বেলজিয়াম।জয় নিয়ে বেলজিয়াম মাঠ ছাড়লেও, দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ে কানাডা। পুরো ম্যাচে ২২টি শট নিয়েছিলো কানাডা। অন্যদিকে মাত্র ৯টি শট ছিলো বেলজিয়ামের। বেশিরভাগ সময়ই মধ্যমাঠ ছিল  কানাডার দখলে। তারপরও হার বরণ করতে হয় তাদের।

বাসস

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

12 − five =