নাম তার রহমত। আফগানিস্তান থেকে কলকাতায় এসেছে জীবিকার খোঁজে। এখানে এসে তার বন্ধুত্ব হয় ছোট্ট এক বাঙালি মেয়ের সঙ্গে। মেয়েটির নাম মিনি। নিজ দেশে মিনির মতোই রহমতের একটি মেয়ে আছে। মেয়ের কথা মনে পড়লেই মিনিকে একপলক দেখার আশায় ছুটে আসে রহমত। একদিনের এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা রহমতের জীবন থেকে কেড়ে নেয় ১০টি বছর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের অমর চরিত্রটি ১৯৬৫ সালে সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন ছবি বিশ্বাস। পরিচালক তপন সিংহের সেই কালজয়ী সিনেমা এখনো বাঙালি হৃদয়ে স্থান করে আছে। সুমন ঘোষের পরিচালনায় নতুন আঙ্গিকে আসছে সিনেমা ‘কাবুলিওয়ালা’।
এবার কাবুলিওয়ালা চরিত্রে পর্দায় দেখা যাবে মিঠুন চক্রবর্তীকে। সেই সঙ্গে মিনির মায়ের চরিত্রে থাকছেন সোহিনী সরকার আর বাবার চরিত্রে আবির চট্টোপাধ্যায়। তবে মিনির চরিত্রে কে থাকছেন তা এখনো জানাননি নির্মাতা। গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে সিনেমার শুটিং।
একই গল্পে নতুন করে সিনেমা তৈরি বেশ চ্যালেঞ্জিং। এ ক্ষেত্রে সিনেমা সমালোচকদের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে ক্ল্যাসিক সিনেমার আধুনিক রিমেকের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। এ বিষয়ে পরিচালক সুমন ঘোষ ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তুলনা বা সমালোচনা তো থাকবেই, কিন্তু ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে তো কাজই হবে না। আমার কাছে কাবুলিওয়ালা এই সময়ের প্রাসঙ্গিক একটা গল্প। ধর্ম, জাতি, ভাষা—সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে রহমত আর মিনির মধ্যে যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল, তার মধ্যে একটা মানবিকতার বার্তা আছে। পৃথিবীর এখন যে অবস্থা, তাতে এ গল্পটা আবার মনে করিয়ে দেওয়া দরকার।’
পরিচালক সুমন ঘোষের সঙ্গে এর আগেও ‘নোবেল চোর’ সিনেমায় কাজ করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। এবার করছেন ‘কাবুলিওয়ালা’। সিনেমাটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। মিঠুন বলেন, ‘কাবুলিওয়ালা গল্পটি আমাকে বেশ আবেগতাড়িত করে। রহমত চরিত্রের মাঝে আমি যেন নিজেকেই খুঁজে পাই কখনো কখনো। আমরা অনেকটা সময় নিয়ে নিজেদের তৈরি করেছি সিনেমাটির জন্য। চেষ্টা থাকবে একটি ভালো সিনেমা দর্শকদের উপহার দেওয়ার।’
মূল কাহিনি ঠিক রেখে ১৯৬৫ সালের প্রেক্ষাপটে সিনেমার গল্প লিখেছেন পরিচালক নিজেই। ১০ বছর ধরে এটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন তিনি। শুরু থেকেই মিঠুনকে কাবুলিওয়ালা চরিত্রে ভেবে রেখেছিলেন। সিনেমাটি প্রযোজনা করছে এসভিএফ এবং জিও স্টুডিওজ। আগামী ডিসেম্বরে মুক্তির পেতে পারে কাবুলিওয়ালা।