কাল শুরু হবে বাঘের ডেরায় বাঘদের কিউই পাখি শিকারের মিশন

সালেক সুফী

মিশ্র সাফল্যের এশিয়া কাপ মিশন শেষে কাল শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম বাঘের ডেরায় শুরু হতে চলেছে তিন ম্যাচের বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ। বিশ্বকাপ অত্যাসন্ন।  দুটি দলের শেষ সুযোগ বিশ্বকাপ দলের কিছু প্রান্তিক খেলোয়াড়দের যাচাই করা।

নিউ জিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বেশ কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছে। তবে ওদের বোলিং আক্রমণের অনেক খেলোয়াড়কে উইকেট এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

পূর্ণ শক্তির নিউ জিল্যান্ড দল কিন্তু কয়েকবার পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দলের কাছে বাংলা ওয়াশ হয়েছে। ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপের প্রাক্কালেও খর্ব শক্তির নিউ জিল্যান্ড দল বাংলাদেশের কাছে সহজেই সিরিজ হেরেছিল। তবুও ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপ ছিল বাংলাদেশের জন্য ভুলে যাওয়ার দুঃস্বপ্ন।

এবারে এশিয়া কাপ ২০২৩ বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট বেশকিছু নবীন উদীয়মান খেলোয়াড় নিয়ে পরীক্ষার মিশনে গিয়েছিল। তামিম ইকবাল ম্যাচ ফিট ছিল না। লিটন অসুস্থতার কারণে বিলম্বে যোগদান করে। তুখোড় ফর্মে থাকা নাজমুল শান্ত দুই ম্যাচ পরে আহত হয়ে ফায়ার আসে।

টপ অর্ডার এবং লেট্ মিডল অর্ডার অধিকাংশ ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ায় ভালো বোলিং ইউনিট নিয়েও বাংলাদেশ দুবার শ্রীলংকা এবং একবার পাকিস্তানের কাছে হেরে যায়। তবে আফগানিস্তান এবং ভারতের সাথে ভালো খেলে বাংলাদেশ ইঙ্গিত দেয় মূল খেলোয়াড়রা নিউ জিল্যান্ড সিরিজে ম্যাচ অনুশীলনের পর দলে যুক্ত হলে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ডার্ক হর্স হবে।

আপাত দৃষ্টিতে কিছুটা খর্ব শক্তির দল মনে হলেও নিউ জিল্যান্ড দলে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান আছে। ওদের সুযোগ দিয়ে যাচাই করা হবে কেউ কেউ বিশ্বকাপের পর টেস্ট সিরিজে দলে সুযোগ দেয়া যায় কি না। নিউ জিল্যান্ডের মূল চ্যালেঞ্জ থাকবে বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং স্পিন আক্রমণ মোকাবিলা করা। টম বান্ডেল, হেনরি নিকোলস এবং ওইলি ইয়ং, রাচীন রাভিন্দ্রা  ছাড়া অধিকাংশ নবীন ব্যাটসম্যান।

তবে লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট, মাঠ হেনরী এবং কাইল জেমাইসন থাকায় কিউই পিসি আক্রমণ সমৃদ্ধ।  বাংলাদেশের উচিত হবে নিজেদের ব্যাটসম্যানদের স্পোর্টিং উইকেটে তুখোড় পেস বোলিং মোকাবিলা করে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়া।

তামিম, লিটন, বিজয়, জাকির, ছোট তামিম আছে বাংলাদেশ দলে।  অন্তত দুজন নাহলেও একজনকে তামিম, লিটনের পাশে থার্ড ওপেনার হিসাবে বেছে নিতেহবে। বেশ কিছুদিন পর মাহমুদুল্লাহ দলে ফিরছে। ওকে ৫-৬ নম্বরে ব্যাটিং করার সুযোগ দিয়ে সুযোগ দিতে হবে পর্যাপ্ত ম্যাচ অনুশীলনের। নাসুম, শেখ মাহেদীদের জন্য সুযোগ নিজেদের যোগ্যতা  প্রমাণের।

নুরুল সোহানকেও যাচাই করা যাবে। আমি মনে করি তৃতীয় ম্যাচটিতে মূল খেলোয়াড়দের অধিকাংশ খেলোয়াড় ফিরিয়ে এনে বিশ্বকাপ যাচাই করা। এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে অভিষিক্ত তানজিদ তামিম, তাসকিন, হাসান মাহমুদের সঙ্গে একসাথে কতটা কার্যকরী হয় যাচাই হয়ে যাবে।

আশা করি দেরিতে হলেও সিরিজ থেকে বাংলাদেশের বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হবে। সিরিজ জিতলে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস সুদৃঢ় হবে। হেরে গেলেও খুব কিছু যাবে আসবে না। তবে বাস্তবতার বিচারে বাংলাদেশ ফেভারিট হয়েই শুরু করবে।

সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

11 − three =