গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামানের জন্মদিন আজ

বাংলা ভাষার প্রখ্যাত গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান ৮১ বছরে পা রাখছেন ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। ১৯৪৩ সালের এই দিনে তিনি ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান নামটির সঙ্গে পরিচিত গত শতকের সত্তর দশক থেকে। সত্যি বলতে কি সেই বয়সে রবীন্দ্রসংগীত অথবা নজরুলগীতি অতটা পছন্দ ছিল না। আব্দুল আলীম এবং নীনা হামিদের পল্লীগীতি ছিল ভীষণ প্রিয়। আর এই গানের অধিকাংশ গীতিকার ছিলেন কানাইলাল শীল এবং আব্দুল লতিফ। পল্লীগীতির ফাঁকে বেশকিছু আধুনিক গান শুনতে ভালো লাগত। আশির দশকের শুরুতে যাদের গানের কথা আমার পছন্দ ছিল তাদের মধ্যে মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান অন্যতম। এছাড়াও ভালো লাগত মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রমুখ গীতিকারের গান।

‘পাহাড়ের কান্না দেখে তোমরা তাকে ঝরনা বলো’, ‘পোড়া চোখ কেন তুই বন্ধ থাকিস না’, ‘আমার মন পাখিটা যায়রে উড়ে যায়’- এমন অনেক গান আমাকে মাতিয়ে রাখত। কেমন করে যেন মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান নামটি আমার হৃদয়ে গেঁথে গেল। ক্রমশ তার গানের অন্ধভক্ত হয়ে গেলাম। তার সঙ্গে দেখা করতে মন চাইত, কথা বলতে মন চাইত, কিন্তু সে সুযোগ ছিল না। এরকম একটি সময় মোহাম্মদ রফিকুজ্জামানের সঙ্গে পত্র যোগাযোগের সুযোগ করে দিল একজন নকল মো. রফিকুজ্জামান। এখানে সেই মজার ঘটনাটি উল্লেখ করছি।

মোহাম্মদ রফিকুজ্জামানের  ছায়াছবির জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘ভালোবাসা যতো বড় জীবন ততো বড় নয়’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ সংসারে’, ‘জনম জনম ধরে প্রেমও পিয়াসী’, ‘এই রাত ডাকে ঐ চাঁদ ডাকে হায় তুমি কোথায়’, ‘বলো কে বা শুনেছে এমন পিরিতি গাথা’, ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’ ‘পৃথিবীর যত সুখ -আমি তোমারি ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’, ‘কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল’, ‘আমার বুকের ভেতর নাইগো পরান/ আছে তোমার নাম’, ‘কী জাদু করেছো বলো না/ ঘরে আর থাকা যে হলো না’ ইত্যাদি।

দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে রয়েছে- ‘যদি মরণের পরে কেউ প্রশ্ন করে কী দেখেছি’, ‘সেই রেললাইনের ধারে/ মেঠো পথটার পাড়ে দাঁড়িয়ে’, ‘ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেলেও তবু রয়ে যায় গন্ধ যেমন চন্দনে’, ‘মাঠের সবুজ থেকে সূর্যের লাল’, ‘আমার বাউল মনের একতারাটা’, ‘পলাশের দিনে পলাশ হয়েই ঘরে ফিরেছিলো খোকা’, ‘চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ’, ‘নদীর ধারে পথ, পথ পেরুলে গাঁ/ গ্রামের পরে গ্রাম পেরোলেও সবুজ ফুরায় না’ ইত্যাদি।

আধুনিক গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আকাশটাতো নীল চিঠি নয়’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার শত্রæ বলে গণ্য হলাম’, ‘তুমি- ভয় পেও না-/ ভয় পেও না-/ আমি- চাঁদকে বলেছি আজ রাতে’, ‘সুখ-পাখিরে পিঞ্জিরা তোর খুলে দিলাম আজ’, ‘দরদিয়া- তুই যে আমার অন্তরের অন্তর’, ‘আকাশের সব তারা ঝরে যাবে’, ‘যে আমার হৃদয় করল চুরি’, ‘আজ- ফিরে না গেলেই কি নয়’, ‘আমাকে দেখার সে চোখ তোমার কই গো’, ‘তুলে বান্ধি চুলরে/ খোঁপায় পলাশ ফুলরে’, ‘দিন কী রাতে সাঁজ প্রভাতে/ তোমারই আছি এই তো’, ‘অন্তরে কান্দন আমার/ চোখে আমার জল’ ইত্যাদি।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

19 − one =