গুগলের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি ডলারের প্রাইভেসি মামলা ‘চলবে’

গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যবহারে গোপনে নজরদারি চালিয়ে কোটি মানুষের গোপনীয়তা ভঙ্গ করেছে গুগল, এমন একটি মামলা খারিজ করার আবেদন করেছিল গুগল। সে আব্দার নাকচ করে দিয়েছে একটি মার্কিন আদালত।

গ্রাহকের ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কোনো অনুমতি গুগল নিয়েছে –এমন কোনো প্রমাণ পাননি বলেছেন মার্কিন ডিস্ট্রিক জজ ইয়োভন গনজালেজ রজার্স। কারণ, এ বিষয়ে গ্রাহকদের কখনওই স্পষ্ট করে কিছু বলেনি অ্যালফাবেট।

আদালতের এই সিদ্ধান্তকে “লাখ লাখ আমেরিকানের প্রাইভেসি  স্বার্থ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” বলেছেন অগণিত ভুক্তভোগীর পক্ষে করা পাঁচশো কোটি ডলারের মামলাটির বাদী পক্ষের আইনজীবি ডেভিড বোয়ে।

গুগল অ্যানালিটিকস, কুকিজ ও অ্যাপের মাধ্যমে, এমনকি ক্রোম ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড কিংবা অন্যান্য ব্রাউজারের প্রাইভেট ব্রাউজিংয়ের বেলাতেও কোম্পানিটি তাদের ওপর নজরদারি চালায় বলে অভিযোগ করে বাদী পক্ষ।

তারা আরও বলেন, তাদের বন্ধু-পরিজন, শখ-আগ্রহ, প্রিয় খাবার, কেনাকাটার অভ্যাস, এবং “সম্ভাব্য বিব্রতকর জিনিসও” অনলাইনে সংগ্রহ করতে করতে কোম্পানিটি “জবাবদিহিতার উর্ধ্বে পৌঁছে গিয়ে এতো বিস্তারিত বিস্তৃত একটি তথ্যের ভাণ্ডার হয়ে গেছে যা খোদ জর্জ অরওয়েলও কল্পনা করতে পারতেন না। জর্জ অরওয়েল ‘১৯৮৪’ নামে একটি কাল্পনিক উপন্যাস লিখেছিলেন যার পটভূমি ছিল এমন এক শাসনব্যবস্থা যেখানে কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের সবকিছুতে নজরদারী করে।

৩৬ পৃষ্ঠার সিদ্ধান্তে বিচারক রজার্স বলেন, একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পে ব্যবহারকারিদের একদিনের ব্রাউজিং হিস্ট্রির জন্য তাদের তিন ডলার করে দিয়েছে গুগল– এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাদী পক্ষ দেখায় তাদের ডেটার একটি বাজার রয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ড ভিত্তিক এই বিচারক কোম্পানিটির প্রাইভেসি পলিসি থেকে একাধিক অংশ উদ্ধৃত করে বলেন, কোম্পানিটির সীমিত সংখ্যক ডেটা সংগ্রহ করার কথা। “সামগ্রিক ব্যাপারটিকে দেখলে বুঝা যাচ্ছে, গুগল যেখানে জোর দিয়ে প্রতিজ্ঞা করে বলছে যে, তারা গ্রাহকদের প্রাইভেট ব্রাউজিংয়ের ডেটা সংগ্রহ করবে না, সেখানে এমন কর্মকাণ্ড বিচারযোগ্য ঘটনা।”

বাদী পক্ষের এমন অভিযোগকে শক্তভাবে অস্বীকার করে গুগল এবং কোম্পানিটি সর্বাত্বকভাবে  তাদের আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে, বলেছেন গুগলের মুখপাত্র হোসে কাস্টানিডা। “আপনার ব্রাউজিং অ্যাক্টিভিটি ডিভাইস বা ব্রাউজারে সেইভ না করে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে ক্রোমের ইনকগনিটো মোডে,” তিনি বলেন, “প্রতিবার আপনি ইনকগনিটো মোড খুললে আমরা স্পষ্ট করে বলে দিই আমরা আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন সময়ের তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।”

এই মামলায় ২০১৬ সালের ১ জুন থেকে গুগল ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফেডারেল আড়িপাতা আইন এবং ক্যালিফর্নিয়ার প্রাইভেসি আইন আনুসারে মামলাটিতে প্রত্যেক ভুক্তভোগীকে অন্তত পাঁচ হাজার ডলার করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে বাদী পক্ষ।

বিডি নিউজ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

17 − one =