চট্টগ্রামকে হারিয়ে শুভ সূচনা করলো খুলনা টাইগার্স

মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উইলিয়াম বোসিসতোর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ১১তম আসর জয় দিয়ে শুরু করলো খুলনা টাইগার্স। আজ টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচে খুলনা ৩৭ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম কিংসকে। খবর বাসস।

এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৩ রান করে খুলনা। অঙ্কন ২২ বলে ৫৯ ও বোসিসতো ৫০ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। পঞ্চম উইকেটে ৩৫ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন অঙ্গন ও বোসিসতো। জবাবে শামিম হোসেনের ৩৮ বলে ৭৮ রানের লড়াকু ইনিংসের পরও ১৬৬ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। ম্যাচ সেরা হন খুলনার অঙ্কন।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরু করেন খুলনা টাইগার্সের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও বোসিসতো। ২৭ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন দু’জনে। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৭ বলে ২৬ রান করে চট্টগ্রামের স্পিনার অ্যালিস আল ইসলামের বলে আউট হন নাইম।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে খুলনার রানের চাকা সচল রাখেন বোসিসতো ও অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি আসার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। চট্টগ্রামের পেসার খালেদ আহমেদের শিকার হবার আগে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ১৮ রানে থামেন মিরাজ।

দলীয় ৮৮ রানে মিরাজের বিদায়ের পর খুলনার মিডল অর্ডারের দুই ব্যাটার আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান ও আফিফ হোসেন দ্রুত বিদায় নেন। জাদরান ৬ ও আফিফ ৮ রান করেন।

১৫তম ওভারে ১১৭ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর ক্রিজে আসেন উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। চট্টগ্রামের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন অঙ্কন। ৫ ছক্কা ও ১টি চারে ১৮ বলে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অঙ্কন। বিপিএলে যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির তালিকায় নাম তুলেন অঙ্কন।

৩৬ বলে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন বোসিসতো। ইনিংসের শেষ ৩৫ বলে বোসিসতো ও অঙ্কনের ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৩ রানের পাহাড় গড়ে খুলনা।

৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫০ বলে অপরাজিত ৭৫ রান করেন বোসিসতো। অন্যপ্রান্তে ১টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারিতে ২২ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন অঙ্কন।

অ্যালিস ১৭ রানে ও খালেদ ৪৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন।

জবাবে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরও উইকেট পতন অব্যাহত ছিলো চট্টগ্রামের। ফলে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১১তম ওভারে ৭৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। এতে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে চট্টগ্রাম। কিন্তু সেটি হতে দেননি ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামে শামিম হোসেন।

নবম উইকেটে অ্যালিসকে নিয়ে খুলনার বোলারদের উপর চড়াও হন শামিম। ১৩তম ওভারে স্পিনার নাসুম আহমেদের বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২১ রান তুলেন শামিম।

পেসার আবু হায়দারের ১৫তম ওভারে ১টি ছক্কা ও ২টি চারে ১৬ রান নেন শামিম। ঐ ওভারেই ছক্কা দিয়ে ২৩ বলে টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শামিম।

শামিম ঝড়ের পরও জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি চট্টগ্রাম। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য ৫৩ রান দরকার হয় চট্টগ্রামের। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে শামিমকে থামান আবু হায়দার। ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৭৮ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন শামিম।

শামিম ফেরার পর ১৮.৫ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম। শেষ দিকে খালেদ ২টি ছক্কায় ৪ বলে ১৪ এবং অ্যালিস ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আবু হায়দার ৩.৫ ওভার বল করে ৪৪ রানে ৪ উইকেট নেন। টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয়বার ৪ উইকেট নিলেন আবু হায়দার।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 + three =