২১ অক্টোবর ইংল্যান্ডে নিজ বাসভবনে মারা গেছেন বিশ্বখ্যাত গায়ক পল ডি’আনো। তিনি বিখ্যাত ব্রিটিশ হেভি মেটাল ব্যান্ড আয়রন মেডেনের গায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। পরিবারের বরাত দিয়ে রেকর্ড লেবেল কনকুয়েস্ট মিউজিক গায়কের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করেছে। তবে, মৃত্যুর কারণ জানায়নি তারা।
পলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আয়রন মেডেনের বর্তমান সদস্যরা। ব্যান্ডের বেজ গিটারিস্ট স্টিভ হ্যারিস বলেন, ‘তাঁর এই চলে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। আমরা সবাই তাঁকে খুব মিস করব।’ ব্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আয়রন মেডেনের দীর্ঘ পথচলায় পলের অবদান অপরিসীম। বিশ্বজুড়ে আয়রন মেডেনের খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা পাওয়ার এবং আমাদের দীর্ঘ পাঁচ দশকের পথচলায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ব্যান্ডের ভোকাল ও সম্মুখভাগের যোদ্ধা হিসেবে প্রথম দুই অ্যালবাম ও স্টেজ পারফম্যান্সের কথা শুধু আমরাই নই, সারা বিশ্বের আয়রন মেডেন ভক্তরা মনে রাখবে।’
১৯৫৮ সালের ১৭ মে পূর্ব লন্ডনের চিংফোর্ডে জন্ম পল ডি’আনোর। তরুণ বয়সেই বিভিন্ন ব্যান্ডে গাইতেন। ১৯৭৭ সালে আয়রন মেডেনের প্রতিষ্ঠাতা ও দলনেতা স্টিভ হ্যারিস যখন ব্যান্ডের জন্য একজন ভোকাল আর্টিস্ট খুঁজছিলেন, তখন অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হন পল। ১৯৭৯ সালে রেকর্ড লেবেল ইএমআইয়ের সঙ্গে চুক্তি হয় ব্যান্ডের। পরের বছর ইএমআই প্রকাশ করে ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম ‘আয়রন মেডেন’। বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয় গানগুলো। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘কিলারস’। এটিও বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়। এরপর গান নিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্যুরে বের হয় দলটি। ট্যুর শেষে বেশ কিছু কারণে ব্যান্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় পলকে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ব্রুস ডিকিনসন। পল পরে স্বীকার করেছেন, ব্যান্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কচ্ছেদের ঘটনা তাঁর জীবনের বড় ভুল ছিল। অনেকেই মনে করতেন দল ছাড়ার পর আয়রন মেডেন ও পল পরস্পরকে অপছন্দ করতেন। তবে পল এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এমন ধারণা একেবারেই ভুল। আয়রন মেডেনের সবার সঙ্গেই আমার সুসম্পর্ক রয়েছে।’
আয়রন মেডেন থেকে বের হয়ে নিজের নামে ‘ডিআনো’ ব্যান্ড গড়েন পল। এরপর ব্যাটেলজোন, কিলারস, রক ফেলারসহ বেশকিছু ব্যান্ড নিয়ে গান করেছেন পল। ২০১০ সালে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ২০১৪ সালে হাঁটুর অস্ত্রোপচার করতে হয়। এর ফলে প্রায়ই তাঁকে হুইলচেয়ারে লাইভ শো করতে দেখা যেত।