চাকরিহারা জ্যোতিকা জ্যোতি

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যে সংস্কার শুরু হয়েছে তা এখনও চলমান। রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের। বিনোদন অঙ্গনেও বইছে এই হাওয়া। আর তাতেই জাতীয় শিল্পকলা একাডেমি থেকে সরে গেলেন আওয়ামী ঘরানার বলে পরিচিত অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ শিল্পকলা একাডেমিতে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান জ্যোতি। দুই বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল অভিনেত্রীকে। কিন্তু পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন করা হলো না তার। বছর দেড়েক পর দেওয়া হলো অব্যাহতি। বিষয়টি সামাজিকমাধ্যমে নিজেই জানান জ্যোতি। অব্যাহতি পাওয়ার পর প্রজ্ঞাপনটি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে শেয়ার দিয়ে তিনি লেখেন, আজ এক প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো আমার প্রথম সরকারি চাকরি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমার চাকরির মেয়াদ থাকার পরও আমাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

এরপর জ্যোতি লেখেন, আজ থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক পদের দায়িত্বে আমি আর নেই। লেখক, গবেষক, প্রকাশকদের অনুরোধ থাকল আপনারা সরাসরি বিভাগে যোগাযোগ করবেন।

সবশেষে এ তিনি লিখেছেন, দেড় বছরের এই যাত্রায় নতুন নতুন অভিজ্ঞতায় আমাকে ঋদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ।

যদিও জ্যোতিকে শিল্পকলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে তা বোঝা যাচ্ছিল। তবে চাকরি শুধু একা জ্যোতির যায়নি। আওয়ামী লীগ আমলে নিযুক্ত পাঁচ জন পরিচালককেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সংগীত বিভাগের পরিচালক ব্যান্ড তারকা কাজী হাবলুও রয়েছেন।

টলিউডে অপূর্ব, অপেক্ষা বড়দিনের

অনেক আগেই ছোট পর্দার বড় তারকার খেতাব পেয়েছেন অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। তার অভিনয়ের সুবাস এবার ছাড়িয়েছে সীমানা। ওপার বাংলার দর্শকদেরও পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকে আছেন তিনি। ইউটিউবে খুঁজে খুঁজে অপূর্বর নাটক দেখেন তারা। তারই প্রতিফলন যেন টলিউড পাড়ায় এ অভিনেতার অভিষেক। আসছে বড়দিনে মুক্তি পাচ্ছে অপূর্বর চলচ্চিত্র। এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে টিজার। তবে সেখানে খুব একটা গুরুত্ব পাননি বাংলাদেশের অভিনেতা। দুই থেকে তিন ঝলকের জন্য দেখা গেছে। সব মিলিয়ে মনে হয়েছে পার্শ্ব চরিত্রে আছেন তিনি। যদিও এ নিয়ে একমত নন অপূর্ব অনুরাগীরা। তাদের মতে থিয়েটারে মিলবে প্রমাণ। আপাতত প্রিয় তারকার অভিষেক নিয়ে উৎফুল্ল তারা। সে কারণেই অপেক্ষা।

অপূর্বর টলিউডের যোগ হওয়ার খবর এসেছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। ক্যারিয়ারের দুই দশক পেরিয়ে এমন একটি খবর মন ভালো করে দিয়েছিল ভক্তদের। সে সময় অপূর্বও বলেছিলেন, গল্পটা ভালো লেগেছে। আমার চরিত্রটাও দারুণ। ভারতে এই প্রযোজনা সংস্থার ভালো ভালো ছবি বানানোর অভিজ্ঞতায় আমি কাজটি করতে রাজি হয়েছি।

রাইমা সেন, টোটা রায়চৌধুরী, স্বস্তিকা দত্ত, অনির্বাণ চক্রবর্তী প্রমুখের সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। তখন থেকেই অনুরাগীরা অপেক্ষায় ছিলেন কবে আসবে সিনেমা। কলকাতার সিনেমায় কেমন চরিত্রে ধরা দেবেন অপূর্ব। জানা গেছে, চরিত্রটি নাকি নেগেটিভ। আজীবন রোমান্টিক চরিত্রে কাজ করা এ অভিনেতা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করবেন ভাবতেই হোঁচট খেয়েছিলেন অনেকে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে অপেক্ষায় আছেন প্রিয় তারকা সিনেমার।

থ্রিলার গল্পে নির্মিত ‘চালচিত্র’। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দার শাখার একদল অফিসার, যাদের নেতৃত্বে থাকছেন চৌকস অফিসার কনিষ্ক চট্টোপাধ্যায়। এই চরিত্রে দেখা যাবে টোটা রায়চৌধুরীকে। তারা একগুচ্ছ খুনের রহস্য উন্মোচনে নামবেন। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে এক যুগের আগের আরেকটি মামলার সঙ্গে ঘটনার মিল পাওয়া যায়। পাশাপাশি পুলিশ অফিসারের ব্যক্তিজীবনের প্রসঙ্গও উঠে আসে।

বিদ্যা বালানের অজানা গল্প

বলিউডের যেসব অভিনেত্রীদের নাম আলাদাভাবে উচ্চারিত হয় তাদের মধ্যে অন্যতম বিদ্যা বালান। যথেষ্ট গ্ল্যামার থাকা সত্ত্বেও স্রোতে গা ভাসাননি। রাতারাতি স্টার কিংবা সৌন্দর্য সম্বলিত নায়িকা হতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। বরাবরই অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে দেখতে চেয়েছেন। বিচারকের আসন অলংকৃত করেছেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও। এই অবস্থানে যেতে খাটুনি কম যায়নি তার। চরিত্রের প্রয়োজনে নিজেকে বারবার ভেঙেছেন। এমনকি ডার্টি পিকচার ছবিতে তো ভয়াবহ রকম সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। তবে বাস্তব জীবনে বিদ্যা বালান এত সাহসী নন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার অজানা কথাগুলো বলেছেন তিনি। রাজনীতি বিষয়টি নিয়ে খুব ভয় পান বিদ্যা বালান। তিনি জানান, সব বিষয় নিয়ে কথা বললেও রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে মোটেও ইচ্ছুক নন তিনি। কখন কী বলে বসে আবার বয়কট হতে হবে। এ কারণেই রাজার নীতি নিয়ে যত্রতত্র মুখ খোলেন না অভিনেত্রী। আজকাল বয়কট শব্দটি বলিউডে এক আতঙ্কের নাম। মতের বিরুদ্ধে গেলেই মানুষজন ধরে ধরে বয়কট করে দিচ্ছে তারকাদের। শাহরুখ থেকে শুরু করে অনেক ডাকসাইটে তারকাদের এই জ্বালা সইতে হয়েছে। সে কারণেই বিদ্যা এর থেকে দূরে থাকতে চান। মনে করেন এর পেছনে দায়ী সোশ্যাল মিডিয়া। এখানে সর্বস্তরের মানুষের মত প্রকাশের সুযোগ রয়েছে। সে কারণেই কেউ কিছু না বুঝেই মন্তব্য করে বসেন। এবং তারা নিজেদের মতো জোর করে অন্যকে মানাতে বসেন।  সে কারণেই সৃষ্টি হয় বিব্রতকর পরিস্থিতির।

এ নিয়ে অভিনেত্রীর বক্তব্য, ‘রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে ভয় করে। কী জানি বাবা, কখন বয়কট করে দেবে আমাকে।’ ডার্টি পিকচার সিনেমায় খোলামেলা পোশাকে দেখা গিয়েছিল বিদ্যাকে। এ নিয়ে বলেন, ‘স্বল্পদৈর্ঘ্যরে পোশাক, শরীর দেখানো পোশাক পরা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম। তার ওপর ওই ধরনের নাচ…! যখন ভেবেছিলাম, অভিনেত্রী হব, কখনও কল্পনা করিনি যে এই ধরনের কাজ করব। সাময়িকভাবে মনে হয়েছিল, এটা আমার জন্য বড় সুযোগ। আবার পরক্ষণেই মনে হয়েছিল, ক্যামেরায় দর্শক আমাকে ওইভাবে দেখবেন…!’

ছবিটিতে বিদ্যাকে ধূমপায়ী হিসেবে দেখা গেছে। পর্দায় চরিত্রটি জীবন্ত করে তুলতে সত্যি ধূমপান করতে হয়েছে তাকে। ফলে এটি করতে গিয়ে ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। এ ছবিতে সহঅভিনেতা হিসেবে পেয়েছিলেন কিংবদন্তি বলিউড তারকা নাসিরুদ্দিন শাহকে। তার সঙ্গে রসায়ন বেশ মনে ধরেছিল দর্শকের। দক্ষিণী অভিনেত্রী স্মিতা পাতিলের বায়োপিক ছিল এটি। বিদ্যা স্মিতার চরিত্রে রূপদান করেন। ছবিটি বিদ্যাকে অভিনেত্রী হিসেবে বেশ উঁচুতে নিয়ে গেছে।

শেলবি হয়ে ফিরছেন কিলিয়ান

এই গল্পটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের। ওই সময় গড়ে ওঠা একটি গ্যাংস্টার গ্রুপকে ঘিরে এগিয়েছে। কাল্পনিক ওই গ্যাংস্টার গ্রুপের নাম পিকি ব্লাইন্ডার্স। টমি শেলবি এই গ্যাংয়ের দলনেতা। খুব চতুর ব্যক্তি। মূলত তাকে ঘিরেই এ গল্পের এগিয়ে যাওয়া। এটি একটি টিভি সিরিজ। জনপ্রিয় মার্কিন টিভি ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। যা শুরুটা হয়েছিল ২০১৩ সালে। কিলিয়ান মারফি এই সিরিজে শেলবি চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

নতুন খবর হচ্ছে, এবার ছোটপর্দা থেকে বড় পর্দায় আসছে পিকি ব্লাইন্ডার্স। এখানেও শেলবি চরিত্রে থাকছেন কিলিয়ান মারফি। বিষয়টি নিয়ে অস্কারজয়ী এ অভিনেতা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মনে হচ্ছে টমি শেলবি হিসেবে আমার কাজ শেষ হয়নি। পিকি ব্লাইন্ডার্সের ফিল্ম সংস্করণে স্টিভেন নাইট এবং টম হার্পারের সঙ্গে পুনরায় কাজ করা খুবই আনন্দদায়ক হবে। এই কাজটি আমার ভক্তদের জন্য।’

অবশ্য শেলবিরূপে কিলিয়ানের থাকায় এবার ভক্তদের অবদান রয়েছে। কেননা শুরু থেকেই তাদের দাবি ছিল তাকে ছাড়া পিকি ব্লাইন্ডার্স সম্পূর্ণ হবে না। নির্মাতাদেরও একই মত ছিল। নেটফ্লিক্সে আসবে সিনেমাটি। পরিচালনা করবেন টম হার্পার এবং চিত্রনাট্য করছেন স্টিভেন নাইট। তিনিই এই সিরিজের স্রষ্টা।

লেখটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেমবন্দি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

one × 3 =