সালেক সুফী
২০২৪ আইপিএলে শিরোপাধারী চেন্নাই সুপারকিংসের হয়ে নিজেকে দারুন ভাবে মেলে ধরেছে বাংলাদেশের কাটার মাস্টার সাতক্ষীরার মুস্তাফিজুর রহমান। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ডেভিড ওয়ার্নার আদর করে ওর নাম দিয়েছিল ফিজ। ধুমকেতুর মত আবির্ভুত হয়ে বিশ্বক্রিকেটকে চমক লাগিয়েছিল ফিজ।
দেশের মাটিতে ২০১৫ ওডিআই ক্রিকেটে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলগুলোকে নাকানি চুবানি খাইয়েছিল। স্লোয়ার কাটার, পেস পরিবর্তন আর কার্যকরী ইয়র্কার দিয়ে। আইপিএলে প্রথম আবির্ভাবে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের আতঙ্কে পড়তে হয়েছিল।
বাংলাদেশের হয়ে ওডিআই ক্রিকেটে অনেক সাফল্য এনেছিল। কিন্তু ইদানিং সাফল্য ধারাবাহিক না থাকায় নিজের উপর অনেকটা আস্থাহীন দেখা গেছে। এমনকি সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ শ্রীলংকা ম্যাচে ছিল নিষ্প্রভ।
সেই ফিজকে আইপিএল ২০২৪ মাহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল কিনে নেওয়ায় অনেকেই নিশ্চিত ছিল না ওকে বসিয়ে রেখে পানি টানানো হবে কি না। কিন্তু দেখেন প্রথম খেলায় সুযোগ পেয়েই ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা। ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে এখন শীর্ষ উইকেট শিকারী হয়ে পার্পেল কাপের অধিকারী।
বিশ্ব টি২০ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে। ফিজকে ফিরতে হবে জাতীয় দলের জন্য খেলতে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলতে। আইপিএলে খেলে যদি অনুশীলন ভালো হয় সুপারিশ করবো ওকে শেষ পর্যন্ত খেলতে দেওয়া। বাংলাদেশের হাতে এখন অন্তত জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলার মত অনেক বিকল্প আছে। আশা করি বিচক্ষণ প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু ভেবে দেখবেন।
বলতেই হবে একজন কুশলী অধিনায়ক পারেন কোনো খেলোয়াড়ের সেরা নিংড়ে নিতে। ধোনি এখন ক্যাপ্টেন নয়। তবু জহুরির মত যেভাবে উইকেটের পেছনে সঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে এবং সঠিক কৌশলে ফিল্ডিং সাজিয়ে ফিজের সেরাটি নিংড়ে নিচ্ছেন সেটি অবশ্যই অনুকরণ যোগ্য। মুস্তাফিজ ফিরে পেয়েছে আস্থা, মোক্ষম মারণাস্ত্র গুলো সঠিক সময়ে সঠিকভাবে প্রয়োগ করছে।
শেষ ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সদের বিরুদ্ধে যেভাবে ১৮ম এবং ২০ম ওভার করেছে সেটি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মত। বাংলাদেশের পেস আক্রমণ তাসকিন, শরিফুল, তানজিম সাকিবকে নিয়ে অনেক সমৃদ্ধ।
নিজেকে ফিরে পাওয়া মুস্তাফিজ টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তুরুপের তাস হবে বলে আমি মনে করি। আশা করি নাজমুল শান্ত এবং হাতুরাসিংহে এবারের আইপিএলে মুস্তাফিজের খেলার ফুটেজ গুলো দেখবে।