সালেক সুফী
মেরুদন্ডহীন ব্যাটিং বাংলাদেশকে দ্বিতীয় দিন শেষে নিশ্চিত পরাজরের কালো গহ্বরে নিয়েছে। পরিত্রান পেতে চেন্নাই টেস্টেঅতিমানবীয় বা অলৌকিক কিছু হতে হবে। নাহলে ইতিমধ্যে ঘুরতে থাকা উইকেটে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ প্রলয় নৃত্য দেখবে। তাসকিন হাসান মাহমুদের দাপুটে বোলিং আক্রমণের মুখে ভারতের ইনিংস ৩৭৬ রানে শেষ হয়। নাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কিন্তু উইকেট, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাথ হলে ৪৭.১ ওভারেই ১৪৯ রানে সাঙ্গ হয় বাংলাদেশ ইনিংস। দ্বিতীয় দিন শেষে ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ৮১ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০৮ রানে এগিয়ে। বলা যায় ম্যাচ থেকে ছিটকে গাছে বাংলাদেশ। কাল হয়তো ভারত ৪০০ রান লিড নিয়ে ছেড়ে দিবে ইনিংস। উইকেট এন্ড ম্যাচের পরিস্থিতি দেখে অনুমান করতে কঠিন না যে টেস্ট ম্যাচে বিশাল ব্যাবধানে জয়ী হতে চলেছে ভারত।
ম্যাচে অবস্থান সঙ্গিন হলেও বাংলাদেশের বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। তাসকিন, হাসান মাহমুদ নিখুঁত লাইন লেংথ বজায় রেখে তৃতীয় দিন সকালে ভারত ইনিংসকে ৩৭৬ রানে বেঁধে ফেলে। তরুণ হাসান মাহমুদ (৫/৮৩) ভারতের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশী হিসাবে পেস বোলার হিসাবে ৫ উইকেট অর্জন করে. পেস বোলিং সঙ্গী তাসকিন আজ সকালে ঝটপট ৩ টি উইকেট তুলে নিলে ভারতের ইনিংস ৩৭৬ রানে সীমিত হয়। গতকালের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রবিচন্দ্র অশ্বিন (১১৩), রবীন্দ্র জাদেজা (৮৬) তাসকিন, হাসান মাহমুদের তোপের মুখে পার্টনারশীপ আরো বিস্মৃত করতে পারে নি। কিন্তু এই জুটির ১৯৯রান এই টেস্টের ফলাফল নির্ধারণে মূল ভূমিকা পালন করবে নিঃসন্দেহে।
বাংলাদেশ ব্যাটিং করতে এসেই ভারতীয় বোলারদের চাপে তাসের ঘরের মত ঝুরঝুরিয়ে ভেঙে পরে। পেস সহায়ক উইকেটে বুমরাহ, আকাশ দীপ এবং সিরাজের ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে বাংলাদেশ বাটসমেনদের অনুপযোগী টেকনিক নগ্ন ভাবে ধরা পরে। সাদমান, জাকের, মোমিনুল আনাড়ির মত দ্রুত আউট হলে ২২ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ শিবিরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ব্যার্থ হন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত, মুশফিকুর রহমান। ৪০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা অবস্থানে সাকিব, লিটন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও দুই জন দায়িত্ব হীনের মত উইকেট বিসর্জন দিলে ১৪৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ, ২২৭ রানে এগিয়ে থাকলেও ভারত ফলো অন প্রয়োগ করেনি।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে আবারো তাসকিন এবং নাহিদ রানা দ্রুত রোহিত শর্মা এবং য়াশাবি জাসোয়ালকে ফিরিয়ে দিলে টেস্টে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর কিছুটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও শুভমান গিল এবং বিরাট কোহলি ধস থামায়। মিরাজের বলে একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ফিরে যায় বিরাট। ম্যাচের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ভারত। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের চমৎকার বোলিং করে বাংলাদেশ বোলাররা ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুললেও ব্যাটসম্যানদের শোচনীয় ব্যার্থতা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।