আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টিকে থাকার লক্ষ্যে কাল ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় । খবর বাসস।
ভারতের কাছে ৬ উইকেটের হার দিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। যে কারণেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি টাইগারদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিউইদের কাছে হারলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়বে বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল হিসেবে বিবেচিত নিউ জিল্যান্ডকে হারানো মোটেই সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। স্বাগতিক পাকিস্তানকে ৬০ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে নিউজিল্যান্ড।
আইসিসির কোনো ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোন ব্যাটার হিসেবে এবং নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তার মতে মতে, দুবাই এবং রাওয়ালপিন্ডির কন্ডিশন অনেকটাই ভিন্ন।
হৃদয় বলেন, ‘আমরা জানি পাকিস্তানের কন্ডিশন ভিন্ন হবে। পরের ম্যাচে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করব। আমাদের পরিকল্পনা আছে এবং আমরা তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে এ পর্যন্ত ৪৫ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ১১টিতে জিতেছে, ৩৩টিতে হেরেছে টাইগাররা। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছে এবং চারটিতে হেরেছে বাংলাদেশ।
একমাত্র জয়টি এসেছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নেপিয়ারে, কিউইদের বিপক্ষে শেষ দেখায়। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে ফরম্যাটে সেবারই প্রথম জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচে স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল টাইগাররা। জবাবে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৪২ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে মাত্র ১৫ দশমিক ১ ওভারে জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা। ২০৯ বল বাকী রেখে ম্যাচটি জিতেছিল টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে যা বাংলাদেশের রেকর্ড।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ স্মৃতি অবশ্যই বাড়তি উৎসাহ দিবে বাংলাদেশকে। বিশেষ করে অধিনায়ক শান্তকে। যদিও সম্প্রতি ব্যাট হাতে ছন্দে নেই তিনি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেলে সেমিফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে যাবে নিউ জিল্যান্ড। যে কারণে টাইগারদের বিপক্ষে ম্যাচকে হালকাভাবে নিচ্ছে না কিউইরা।
ভারতের বিপক্ষে খেলার কথা ছিল অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লা রিয়াদ এবং নতুন পেস বোলিং সেনসেশন নাহিদ রানার। কিন্তু ম্যাচটিতে তাদের অনুপস্থিতি অনেকেই অবাক করেছে। পরে জানা যায়, ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ।
নিজের শেষ পাঁচ ওয়ানডের চারটিতেই হাফ সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল্লাহ আগামীকাল নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারবেন কি-না, এখনও নিশ্চিত নয়। ভারতের বিপক্ষে খেলা মুস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় একাদশে সুযোগ পেতে পারেন নাহিদ রানা। ঐ ম্যাচে ৯ ওভারে ৬২ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন ফিজ।
ভারতের বিপক্ষে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দলীয় ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। হৃদয় এবং জাকের আলির ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১৫৪ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ২২৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
মাহমুদুল্লাহর জায়গায় খেলতে নামা জাকের ৪টি চারে ৬৮ রনের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। সুতরাং নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল্লাহ খেলতে একাদশ কেমন হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ দল: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, পারভেজ হোসেন ইমন, নাসুম আহমেদ, তানজিদ হাসান, নাহিদ রানা।
নিউ জিল্যান্ড দল: মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, ম্যাট হেনরি, টম লাথাম, ড্যারিল মিচেল, উইল ও’রুর্ক, গ্লে¬ন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, বেন সিয়ার্স, নাথান স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন, উইল ইয়ং।