চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫: বাংলাদেশের সম্ভাবনা

আজ রাত পোহালে কাল শুরু হতে চলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৫।  হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজিত এই বৈষয়িক টুর্নামেন্টটি ভারতের একগুঁয়েমির কারণে হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজিত হচ্ছে করাচী ,লাহোর ,রাওয়ালপিন্ডি এবং শুধুমাত্র ভারতের কারণে দুবাইতে। অংশগ্রহণকারী ৬ টি দলের পাকিস্তানে খেলায় কোনো ওজর আপত্তি না থাকলেও আইসিসির একচোখা নীতির কারণে ভারতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা জামাই আদর।

কাল টুর্নামেন্ট শিরোপাধারী এবারের আয়োজক পাকিস্তান খেলবে শক্তিশালী নিউ জিলণ্ড দলের বিরুদ্ধে। আমাদের বাংলাদেশ খেলবে ২০ ফেব্রুয়ারী টুর্নামেন্ট ফেভারিট তুখোড় ফর্মে থাকা ভারতের বিরুদ্ধে। টুর্নামেন্টে আইসিসি রাংকিংয়ে থাকা শীর্ষ ৮ দল দুই গ্ৰুপে বিভক্ত হয়েছে নিজেরা পরস্পরের মুখোমুখি হবে. দুই গ্রূপের শীর্ষ দুটি দল খেলবে সেমী ফাইনাল।

গ্ৰুপ এ তে বাংলাদেশ খেলবে ভারত ,পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।  গ্রূপ বিতে আছে অস্ট্রেলিয়া ,ইংল্যান্ড ,দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আফগানিস্তান।  ওডিআই ফরম্যাটে বর্তমান ফর্ম ,ফিটনেস এবং উইকেট ,পরিবেশ পরিস্থিতির বিবেচনায় শীর্ষ চার দল নিউ জিলণ্ড ,অস্ট্রেলিয়া ,ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।  কিন্তু শিরোপাধারী স্বাগতিক দল পাকিস্তান এবং সাদা বল ক্রিকেটে তুখোড় দল আফগানিস্তান কিছু অঘটন ঘটাবে না কে নিশ্চয়তা দিবে।

আমি সাধারণ দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা খুব একটা দেখি না. সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দুই কিংবদন্তি বাংলাদেশ তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানকে দলে নিতে পারে নি. তামিম সঠিক সিদ্ধান্ত কেন নিলো না কে বলবে। সাকিবের ক্ষেত্রে আমি বিসিবি এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দূরদৃষ্টিকে দায়ী করবো। সাকিব দলে না থাকায় প্রতিপক্ষের কৌশল সাজানো অনেক সহজ হয়ে গেছে। সাকিব দলে ত্রিমুখী দায়িত্ব পালন করে থাকে। খেলাধূলোকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত করা নিন্দনীয়। সাকিবের মত বিশ্বমানের প্রতিভাকে ঠুনকো কারণে বঞ্চিত করে বাংলাদেশকেই বঞ্চিত করা হলো.

বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে স্বল্প প্রস্তুত দল।  পাকিস্তান ,দক্ষিণ আফ্রিকা ,নিউ জিলণ্ড ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ করলো। অস্ট্রেলিয়া দুবাইতে নিজেদের ঝালাই করে নেয়ার পর শ্রীলংকায় টেস্ট এবং ওডিআই খেলেছে। ভারত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ খেললো।  বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা অপেক্ষাকৃত সাধারণ মানের বিপিএল টি ২০ খেলেছে মাত্র।

টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রথম খেলা শিরোপার প্রধানতম দাবিদার আইসিসির নীল নয়না দল ভারতের বিরুদ্ধে। ভারত দলে নেই এক্স ফ্যাক্টর বুমরা এবং তুখোড় ব্যাটসম্যান জয়সোয়াল।  কিন্তু ভারতের ব্যাটিং বোলিং গভীরতা এবং বিচিত্রতা এত ব্যাপক যে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন দেখার সাহস নেই. কিন্তু অতীতে বাংলাদেশ ভারতকে বিশ্বমঞ্চে এবং দিপাক্ষিক আসরে হারিয়েছে। এমননা যে পরিকল্পনা করে নিজেদের প্রয়োগ করে খেললে বাংলাদেশ ভারতকে কাঁপিয়ে দিতে পারবে। সেই ক্ষেত্রে ভালো ব্যাটিং করতে হবে. অন্তত ২৮০-৩০০ করতে হবে. সমস্যা টপ অর্ডার নিয়ে। সৌম্য ভালো ফর্মে থাকলেও বিপিএল খেলেনি খুব একটা হাতের আঘাতের কারণে। তানজিদ তামিম ভালো খেললেও দ্রুত সময়ে ওডিআই মোডে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে হবে. বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য লিটন কুমার দাস ধারাবাহিকতা হারিয়েছে। মূল সমস্যা হবে অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে। কেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল নাজমুল শান্তকে একেবারেই সুযোগ দিলো না সেটি রহস্যজনক। তাওহীদ হৃদয় এবং মুশফিক নিজেদের মত খেলতে পারেনি বিপিএল।  যতটুকু সুযোগ পেয়েছে ভালো খেলেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী অনিক। যদি দলে থাকে অবদান রাখবে মেহেদী মিরাজ এবং রিশাদ হোসেন। আমি তিন পেসার দুই স্পিনার নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে দল সাজানোর সুপারিশ করবো।

আমার একাদশ

সৌম্য সরকার ,তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, , মুশফিকুর রাহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ , মেহেদী হাসান মিরাজ,জাকের আলী অনিক,  রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ ,মুস্তাফিজুর রহমান এবং নাহিদ রানা।  আমার প্রথম একাদশে তাওহীদ হৃদয়ের স্থান হয় নি।  প্রকৃত অবস্থায় শান্ত অধিনায়ক থাকায় তাওহীদকে স্থান দেয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের টুর্নামেন্ট ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের উপর. থিঙ্ক ট্যাঁক যদি ভারতের সাম্প্রতিক সিরিজ গুলো দেখে স্টার্টেজি সাজিয়ে থাকে তাহলে কিন্তু ভারতকে ছাল্লেঙ্গেচুড়ে দিতে পারবে। প্রথম খেলায় মোমেন্টাম পেলে বাংলাদেশ কিন্তু পাকিস্তান অথবা নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমী ফাইনালে যেতে পারবে। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় সেই স্বপ্ন দেখতেও অনেক সাহসী হতে হবে.

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 2 =