চ্যাম্পিয়নস লিগ: রিয়ালকে গুঁড়িয়ে ফাইনালে সিটি

চ্যাম্পিয়নস লিগ মানেই যেন রিয়াল মাদ্রিদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। কিন্তু এবার গল্পটা ম্যানচেস্টার সিটিই লিখল; তবে প্রত্যাবর্তনের নয়, দাপুটে ফুটবলের।

চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজাদের গুঁড়িয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পা রাখল ফাইনালে। ঠিক যেমনটা ওয়েইন রুনি বলেছিলেন।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমিফাইনালের প্রথম লেগ শেষ হয়েছিল ১-১ গোলের ড্রতে। তাই মীমাংসার রাতটা জমা থাকে ইতিহাদের জন্য। ঘরের মাঠে রিয়ালকে অবশ্য পাত্তাই দিল না সিটি। বের্নার্দো সিলভার জোড়া গোলের সুবাদে ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলের অগ্রগামিতায় নিশ্চিত করে ইস্তাম্বুলের টিকিট। একইসঙ্গে গত আসরে হারের প্রতিশোধটাও নিল মধুরভাবে। ঠিক এই পর্যায় থেকেই তো পেপ গার্দিওলার দলকে ছিটকে যেতে হয়েছিল। এবার গল্পের পুনরাবৃত্তিটা করতে পারেনি রিয়াল।

অবশ্য করার মতো সুযোগ পায়নি বললেও ভুল হবে না। ইতিহাদে রেফারি বাঁশি বাজার শুরু থেকেই তাদের চেপে ধরে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে রক্ষণদূর্গ। কিন্তু গোলপোস্টের নিচে থাকা থিবো কোর্তায়াকে পরাস্ত করতে একটু কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। আরলিং হালান্ড দুয়েকবার চেষ্টা করেও পারেননি। বার্নাব্যুতে বোতলবন্ধী থাকা এই ফরোয়ার্ড দ্বিতীয় লেগে একদমই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। সেদিন অবশ্য তাকে আটকে রাখার দায়িত্বটা ভালোভাবেই পালন করেছিলেন আন্তোনিও রুদিগার। কিন্তু এবার জার্মান ডিফেন্ডারকে শুরুর একাদশেই রাখেননি রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

যাইহোক হালান্ড না পারলেও পেরেছেন বের্নার্দো সিলভা। ২৩ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার পাস খুঁজে নিয়েছিল ফাঁকায় থাকা এই মিডফিল্ডারকে। বাঁ পায়ের বুলেট গতির শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন তিনি। ৩৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সিলভা। বক্সের ভেতর ইলকে গুন্দোয়ানের শট এদের মিলিতাও ঠেকিয়ে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। মিলিতাওর পায়ে লেগে হাওয়ায় ভাসতে থাকা সেই বলে হেড দিয়ে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন সিলভা।

প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পরও রিয়ালকে কোনো সুযোগ দেয়নি সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য কিছুটা নরম ছিল তারা। কিন্তু সেই সুযোগ নিতে পারেনি রিয়াল। উলটো নিজেদের ভুলে গোল হজম করতে থাকে। ৭৬ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার ফ্রি কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল ঢুকিয়ে দেন মিলিতাও।   ম্যাচের যোগ করা সময়ে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকান হুলিয়ান আলভারেস। মাঠের নামার মাত্র দুই মিনিটের ভেতরই স্কোরশিটে নাম লেখান বিশ্বকাপজয়ী এই ফরোয়ার্ড। ফিল ফোডেনের বানিয়ে দেওয়া বলে বক্সের ভেতর তিনি শুধু নিজের কাজটাই করে গেছেন। তার কোনাকুনি শট এগিয়ে এসেও ঠেকাতে পারেননি কোর্তোয়া। চার গোল খেলেও রিয়ালের হয়ে সেরা পারফরমার বলতে গেলে তার নামই সবার উঁচুতে থাকবে।

অধরা চ্যাম্পিয়নস লিগ ছুঁয়ে দেখার জন্য গত তিন মৌসুমে এনিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইনালে সিটি। দুই বছর আগে স্বদেশি ক্লাব চেলসির কাছে ১-০ গোলে হারায় পায়নি শিরোপার স্বাদ। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ইতালির ক্লাব ইন্টার মিলান। ১০ জুন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মুখোমুখি হবে দুই দল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

14 − 4 =