টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডে প্রথম বাংলা সিনেমা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের দুই শিশুর মধ্যকার বন্ধুত্ব ও বিচ্ছেদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে কলকাতার সিনেমা ‘‌দোস্তজী’। বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ ঘুরে ইউনেস্কো সিফেজ অ্যাওয়ার্ড, জাপানের গোল্ডেন শিকা অ্যাওয়ার্ডসহ আটটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে ভারতীয় নির্মাতা প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের এ সিনেমা। বাংলা সিনেমার নতুন এক ইতিহাস গড়ল এটি। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের বিখ্যাত টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডে প্রায়ই দেখা মেলে বিশ্বের জনপ্রিয় সিনেমার ট্রেলার ও টিজার। তবে এবারে বিলবোর্ড স্থান পেল প্রসূনের দোস্তজী। টাইমস স্কয়ারে এই প্রথম কোনো বাংলা সিনেমার পোস্টার এবং ট্রেলার দেখানো হলো।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দোস্তজীর যাত্রা নিয়ে প্রসূন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‌অনুভূতিটা আসলে ঠিক কেমন, সেটা বলে বোঝাতে পারব না। যখন নিজের দেশে, নিজের শহরে দোস্তজী মুক্তি পেয়েছিল, তখন আমরা একটা বড় পোস্টার, একটা হোর্ডিং, কিছুই দিতে পারিনি। আমাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য ছিল না। তবুও সে সিনেমা বাংলার দর্শকদের ভালোবাসায় একটানা ১২ সপ্তাহ সিনেমা হলে চলেছে।’

নিজের অনুভূতি নিয়ে বলতে গিয়ে এ নির্মাতা বলেন, ‘‌আমি যুক্তরাষ্ট্র এসে জেনেছিলাম, দোস্তজীর ট্রেলার চলছে নিউইয়র্ক শহরের বিখ্যাত টাইমস স্কয়ারের বিশাল দানবীয় সব বিলবোর্ডে। যেখানে হলিউডের সব তাবড়-তাবড় ছবির ট্রেলার চলে, সেখানে বাংলা ভাষার এক সিনেমা। বাংলা ভাষার প্রথম সিনেমা হিসেবে দোস্তজী চলল টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডে। নিউইয়র্ক শহরের টাইমস স্কয়ারে বাংলা ছবির এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম আমি নিজেও।’

দোস্তজী কলকাতায় মুক্তি পায় গত ১১ নভেম্বর। মুক্তির প্রথম দিন থেকেই সিনেমাটি দর্শকের প্রশংসা পেয়েছে। ১৭ মার্চ মুক্তি পায় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায়। ক্যালিফোর্নিয়ার ফিল্ম ডিসট্রিবিউশন সংস্থা বায়োস্কোপ ফিল্মস এলএলসি পেয়েছে মার্কিন মুলুকে ‘দোস্তজী’ দেখানোর স্বত্ব। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২৬টি প্রদেশের ৭৫টি শহরে দেখানো হচ্ছে দোস্তজী। এছাড়া কানাডার ১৫টি শহর, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের ১০টি শহর, আরব দেশের আবু ধাবি, শারজা, দুবাই ও আজমানেও মুক্তি পাচ্ছে এ সিনেমা। ক্যালিফোর্নিয়ার ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থা বায়োস্কোপ ফিল্মস এলএলসি মূলত বাংলাদেশী দম্পতি রাজ হামিদ ও রুবনা রশীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত।

বাংলাদেশের নির্মাতাদের সঙ্গে সিনেমা নির্মাণের ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে প্রসূন বলেন, ‘‌আমি বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চাই। যদি সেরকম কিছু হয় তবে সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং বাংলাদেশে করব। এতে বাংলাদেশের অনেক তারকাও থাকবেন। আমার বাবা-মায়ের জন্ম বাংলাদেশে। যদিও আমি একবারই বাংলাদেশে গিয়েছি।’

দোস্তজী সিনেমাটি দেখার পর এক টুইট বার্তায় এর প্রশংসা করেছিলেন খোদ বলিউড শাহেন শাহ অমিতাভ বচ্চন। সিনেমাটি মুক্তির পর একটানা ১২ সপ্তাহ কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছিল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

six − two =