টালিউডে জয়ার ১০ বছর

বাংলাদেশের টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে জয়া বরাবরই ছিলেন উজ্জ্বল। আছেন এখনো। ‘ব্যাচেলর’, ‘ডুবসাঁতার’, ‘ফিরে এসো বেহুলা’, ‘গেরিলা’ ও ‘চোরাবালি’ সিনেমার পর শুরু হয় জয়ার টালিউড অধ্যায়। ২০১৩ সালে অরিন্দম শীলের হাত ধরে কলকাতার সিনেমায় জয়ার যাত্রা শুরু। ওই বছর পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় ‘আবর্ত’। জয়ার প্রথম টালিউড সিনেমা। শুরুর কাজেই প্রশংসিত হন তিনি।

এ সিনেমার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় কৌশিক গাঙ্গুলী, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অতনু ঘোষ, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী, বিরসা দাশগুপ্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নন্দিতা রায়, সুমন মুখোপাধ্যায়ের মতো কলকাতার নামী পরিচালকদের সিনেমার নায়িকা হয়েছেন জয়া। কাজ করেছেন ২০টির মতো সিনেমায়। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল—টালিউডে সাফল্যের সঙ্গে এক দশক পার করলেন জয়া আহসান। টালিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় এখন তাঁর নামটিও সমান গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। জয়া বলেন, ‘২০১৩ সালে অরিন্দম শীলের আবর্ত দিয়ে শুরু করেছিলাম টালিউডে। যত কাজ করেছি, প্রতিটি কাজই অভিনেত্রী হিসেবে আমাকে তৃপ্তি দিয়েছে। তবে আরও বৈচিত্র্যময় কাজের অংশ হতে চাই।’

জয়ার আগেও বাংলাদেশের অনেক অভিনেত্রী কলকাতায় কাজ করেছেন। ববিতা অভিনয় করেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায়। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল কবরীকে। অঞ্জু ঘোষও কাজ করেছেন কলকাতার অনেক সুপারহিট সিনেমায়। গৌতম ঘোষ ও বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতো নামী পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করেছেন চম্পা। রোজিনাও করেছেন কলকাতার কয়েকটি সিনেমায়। তবে তাঁদের তুলনায় জয়ার ইনিংসটা বেশ দীর্ঘই বলতে হয়।

টালিউডে জয়ার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘অর্ধাঙ্গিনী’। কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ২ জুন। চতুর্থ সপ্তাহের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েও হাউসফুল যাচ্ছে অর্ধাঙ্গিনী। এ সিনেমায় মেঘনা মুস্তাফি হয়ে দর্শকদের মনে দাগ কেটেছেন জয়া। এভাবেই একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে টালিউডে এক দশক পার করলেন জয়া। এক সফল যাত্রার বিজয়িনী তিনি।

সম্প্রতি তিনি পা রেখেছেন বলিউডেও। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘কড়ক সিং’ তাঁর প্রথম হিন্দি সিনেমা। বিপরীতে আছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী। এ সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে জয়া বলেন, ‘টনিদা (অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী) খুবই চমৎকার মানুষ। শুটিংয়ের সময় আমি তাঁর হাতে কখনো স্ক্রিপ্ট দেখিনি। সবটাই তাঁর মাথায় থাকে। স্ক্রিপ্টের বাইরেও তিনি অনেক গল্প করেন, যেগুলো চরিত্র বুঝতে আমাদের সাহায্য করে। যেহেতু এটা অন্য ভাষার সিনেমা, তাই শুটিংয়ের আগে আমাদের নিয়ে তিনি ওয়ার্কশপ করেছেন। মনেই হয়নি অন্য ভাষায় বা অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি।’

জয়া জানিয়েছেন, শিগগির বাংলাদেশের ওয়েব কনটেন্টে দেখা যাবে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় নতুন নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। চরকি প্ল্যাটফর্মে অনেক নতুন ও মেধাবী নির্মাতা কাজ করছেন। পরিকল্পনা করছি তাঁদের সঙ্গে একটি প্রজেক্ট করার।’

টালিউডে জয়ার উল্লেখযোগ্য সিনেমা

আবর্ত (২০১৩)

রাজকাহিনি (২০১৫)

ঈগলের চোখ (২০১৬)

ভালোবাসার শহর (২০১৬)

বিসর্জন (২০১৭)

এক যে ছিল রাজা (২০১৮)

বিজয়া (২০১৯)

কণ্ঠ (২০১৯)

রবিবার (২০১৯)

বিনিসুতোয় (২০২১)

ঝরা পালক (২০২২)

অর্ধাঙ্গিনী (২০২৩)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twelve − 4 =