সালেক সুফী
বিসিবি প্রধান নিজেই বলেছিলেন, এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পরবর্তী ২০২৪ বিশ্বকাপের জন্য শিক্ষা সফর করতে গেছে। টুর্নামেন্টের এক পর্যায়ে অধিনায়ক সাকিব বললেন, আমরা কিছু জয় করতে আসিনি। ৬ দলের সুপার ১২ গ্রুপে ৫ম স্থান অর্জন করে দেশে ফেরা বিশেষত আইসিসি সহযোগী দেশ নেদারল্যাডসের পরে অবস্থান সাফল্য না ব্যার্থতা তার বিচার বিশ্লেষণের বিষয়। টুর্নামেন্টে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বাংলাদেশ ৯ আর ৩ রানে জয় পেয়েছে নিচের সারির নেদারল্যান্ডস আর জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে। এগুলো নিয়ে উচ্ছাস করার অবকাশ কম আছে। বাকি তিনটি ম্যাচের একটিতে উড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিরুদ্ধে। কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গেলেও ৫ উইকেটে হেরেছে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। টুর্নামেন্ট এখন সেমি ফাইনাল পর্যায়ে। কিন্তু তল্পিতল্পা নিয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ।
অনেকেই বলেছে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ স্থান নিতে পারেনি কারণ তারা ছিল সবচেয়ে অপ্রস্তুত দল। টুর্নামেন্ট চলার সময়েও অনেক এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। টি২০ বিশ্বকাপ আসরে পজিটিভ ব্যাটিং করার মতো ন্যূনতম সংখ্যার মানসম্পন্ন মারকুটে ব্যাটসম্যান ছিল না। উল্লেখ করার মতো দুটি ইনিংস খেলেছে শান্ত আর একটি লিটন। আফিফ প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেও মিডল অর্ডারে মুশফিক মাহমুদুল্লার শূন্যতা পূরণ করতে বার্থ হয়েছে ইয়াসির, মোসাদ্দেক সোহান। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই সাকিবের ব্যাট হাসেনি। বাজে বাটিঙের কারণে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়েও জয়ী হতে পারেনি ভারত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তাসকিন টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো বোলিং করেছে। মুস্তাফিজ কিপ্টে বোলিং করলেও ম্যাচ জয়ী কিছু করতে পারেনি।
বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে কোনো বড় দলের বিরুদ্ধে জয় না পেলেও আয়ারল্যান্ড হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে, নেদারল্যান্ড জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে, পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে , নামিবিয়া হারিয়েছে শ্রীলংকাকে, স্কটল্যান্ড হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সৌভাগ্য বাংলাদেশের কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলতে হয়নি। নাহলে বিপদ হতে পড়তো।
অথচ অনেক আশায় বুক বেঁধে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিপুল সংখ্যায় প্রতিটি খেলার ভেনুতে জড় হয়ে উৎসাহ জুগিয়েছে। বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আমন্ত্রণ করে না হয়তো বিসিবির ক্রিকেট দূতিয়ালির দুর্বলতার কারণে। এমনিতে দেশে যত নাচুনি কুদুনি করুক বিসিবি কর্মকর্তারা ভেজা বেড়াল সেটি আর বুঝতে বাকি নেই। এবারের টুর্নামেন্টে তাই অনেক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। একটু শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
যাহোক সাফল্য ব্যর্থতার সমীকরণে বাংলাদেশের এবারের অর্জন নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে থেকেও কম। যদিও কিছু মানুষ শান্তর দুটো ইনিংস, লিটনের ভারতকে কাঁপিয়ে দেওয়া বা তাসকিনের নিয়মিত ভালো বোলিং বিশাল অর্জন বলে তৃপ্তির ঢেউ তুলবে। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সফল হয়নি।