টি২০ সিরিজে শ্রীলংকার উড়ন্ত সূচনা

ক্যান্ডির পালাকেলিতে কাল ৭ উইকেটের সহজ জয় দিয়ে টি ২০ সিরিজে  উড়ন্ত সূচনা করলো শ্রীলংকা। টেস্ট এবং ওডিআই সিরিজ জয়ের পর কাল টি ২০ সিরিজ সহজ জয় দিয়েই শুরু করলো স্বাগতিক শ্রীলংকা। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ফ্লাট উইকেট আর দ্রুতগতির আউট ফিল্ডের সঙ্গে বেমানান কচ্ছপ গতির ব্যাটিং করে ১৫৪/৫ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে শ্রীলংকার দুই মারকুটে ওপেনার ৪.৪ ওভারে ৭৮ রান তুলে গ্যালারিতে আনন্দের ফল্গু ধারায় মাতিয়েছিলো। খেলাটি যে ১৯ ওভার স্থায়ী হয়েছে তার জন্য কিঞ্চিৎ কৃতিত্ব বাংলাদেশ পেতেই পারে। ১৯ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে শ্রীলংকা।  দুই দলের যে ব্যাবধান সেটি দেখে এখন থেকেই সিরিজে ধবল ধোলাইয়ের শংকা জাগছে।

কাল ছিল শ্রীলংকায় এহ্সালা পূর্ণিমা উৎসবের দিবস। ছুটির দিনে ক্যান্ডির পালাকেলে স্টেডিয়াম ছিল ক্রিকেট ভক্তদের আনন্দ উৎসবে মাতোয়ারা। নাচে গানে সবাইকে মাতিয়ে হেসে খেলে বাংলাদেশকে প্রথম টি ২০ ম্যাচে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যাবধানে উড়িয়ে দিনটিকে রাঙিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলংকা।

জানিনা কি পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের। শ্রীলংকা দলের টপ অর্ডারে অধিকাংশ ডান হাতি ব্যাটসম্যান। তবু কেন বাংলাদেশ টি ২০ বিশেষজ্ঞ কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ একাদশে ছিল না? কেন নাসুম আহমেদকে একাদশে রাখা হলো না. বলছি না ওরা একাদশে থাকলেও বিশেষ কিছু হত।  কিন্তু পরিস্থিতি এবং পরিবেশ অনুযায়ী ওদের দুইজনকে ডাগ আউটে বসিয়ে রাখার সাথে দ্বিমত পোষণ করলাম।

বাংলাদেশ ওপেনার তানজিদ তামিম ভালো সূচনা করেছিল। ৫ ওভারে ৪৬ রান তুলে ওরা ভালো কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলো। কিন্তু যেই না ৪৬ রানে ১৭ বলে ১৬ রান করা তানজিদ আউট হলো লিটন ,পারভেজ ইমন আর তাওহীদ হৃদয় ঝরে গেলো।  ব্যাটিং আদৌ টি ২০ সুলভ হলো না. আবারো অনেক প্রশ্নের অবতারণা করে লিটন ব্যাট হাতে বার্থ হলো. তাওহীদ হৃদয় তথই বচ। যাকিছু ব্যাটিং করেছে মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে মেহেদী মিরাজ। তাও বলবো না টি ২০ সুলভ ব্যাটিং। ওদের যোগাযোগে ৫ম উইকেট জুটিতে ৪৬ রান আর শেষ দিকে শামীম হোসেনের ৫ বলে অপরাজিত ১৪ রানের সুবাদে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করে বাংলাদেশ। ক্যান্ডির এই উইকেটে এই রান ছিল ২৫-৩০ রান কম।

জবাবে ব্যাটিং ফর্মের তুঙ্গে থাকা শ্রীলংকার কুশল মেন্ডিস ( ৫১ বলে ৭৩) আর পাথুম নিশংকা (১৬ বলে ৪২ রান) সূচনা জুটিতে ৪.৪ ওভারেই ৭৮ রান তুলে নিয়েছিল। একই ঢঙে ব্যাটিং করলে হয়ত শ্রীলংকা ১২ -১৩ ওভারেই ম্যাচ জিতে নিতে পারতো। হয়তো পরিপূর্ণ গ্যালারির উৎসবে মেতে থাকা ভক্ত অনুরাগীদের উৎসব রাঙিয়ে তোলার জন্য শ্রীলংকা এর পর কিছুটা রয়ে শোয়ে খেলে ১৯ ওভারে ১৫৯/৩ করে অনায়েসে ম্যাচটি জিতে নেয়.

কিছু বলার নেই।  বাংলাদেশের অনেকেই বিপিএল নিয়ে গর্ব করে. শ্রীলংকায হয় এলপিএল।  গুনে মানে দুটি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ব্যাবধান কতটুকু হয়তো কালকের ম্যাচটি চোক আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। জানিনা কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। আমি নিরাশাবাদী নোই. তবু মনে হয় না বাংলাদেশ টি ২০ সিরিজে ধবল ধোলাই এড়াতে পারবে। দীর্ঘ দিন পর দলে ফিরে মোহাম্মদ নাঈম আর সাইফুদ্দিন মন্দ করে নি. রিশাদ হোসেন ভালো বোলিং করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক লিটন ব্যাতিক্রমী কিছু করতে বার্থ হলে দলে অবস্থান এবং ওকে অধিনায়ক রাখার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ হবে. জানিনা কেন বাংলাদেশের পরিকল্পনায় এতো গলদ থাকে। নিজেদের হাতে থাকা সম্পদ কেন ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেনা।

শ্রীলংকান ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস আর পাথুম নিঃশঙ্কা আছে আগুনে ফর্মে। জানি সুযোগ পেলে চরিথা আসালংকা , কুশল পেরেরা বিধ্বংসী রূপে আবির্ভুত হবে. দেখতে হবে দ্বিতীয় ম্যাচে কোন রূপে আবির্ভুত হয় বাংলাদেশ?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 5 =