টেস্ট ক্রিকেটে ভারতকে মোকাবিলায় বাংলাদেশের দুর্বলতা বিস্তর

সালেক সুফী
প্রথম ইনিংসে অশ্বিন, জাদেজা,  দ্বিতীয় ইনিংসে শুভমান গিল এবং পান্তের ব্যাটিং পরিষ্কার করে দেখিয়ে দিল টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাবধান। আমি বাংলাদেশের শক্তি সামর্থকে খাটো করছি না। কিন্তু দল হিসেবে ভারত কতটা ভারসাম্যপূর্ণ এবং উঁচু মানের সেটি প্রমাণ হয়েছে দুই ইনিংসে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির মতো কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানদের ন্যূনতম অবদান ছাড়াই তৃতীয় দিন শেষে টেস্টের ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলে।

ভারতের প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রানের জবাবে গতকাল ৪৭.১ ওভারেই ১৪৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ভারত কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে ফলোঅন করায়নি। দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের রান ছিল ৮১/৩।  তরুণ শুভমান গিল এবং রিশাভ পান্তকে শতরান করার সুযোগ দেওয়া এবং ম্যাচে দীর্ঘ সময় অবশিষ্ট থাকায় ইনিংস ঘোষণায় বিলম্ব করে। গিল (১১৯)  এবং পান্ত (১০৯) বেপরোয়া ব্যাটিং ভারতকে ৫১৫ রানের বিশাল টার্গেট গড়ে তোলার সুযোগ দেয়।  তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের বোলিং প্রতি আক্রমণে ছিল এলোমেলো।

বাংলাদেশ পাহাড়সম টার্গেটের বিপরীতে শুরুটা মন্দ করেনি। তরুণ ওপেনার জুটি জাকির (৩৩) এবং সাদমান (৩৫) নতুন বলের বাউন্স এবং মুভমেন্ট সামাল দিয়ে ৬২ রানের জুটি গড়েছিল। বুমরা জুটি ভাঙার পর উইকেটের টার্ন এবং বাউন্স কাজে লাগিয়ে রবি অশ্বিন পর পর ৩ উইকেট তুলে নেয়।

জানিনা অভিজ্ঞ মোমিনুল এবং মুশফিক নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং সুনামের প্রতি সুবিচার করলো কি না। দিন শেষে অধিনায়ক শান্ত ৫১ এবং সাকিব ৫ রানে অপরাজিত আছে। বাংলাদেশের স্কোর ১৫৮/৪। বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বিশাল ৩৫৭ রানে।

কেউ বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন দেখবে না। তবে অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান সঙ্গে লিটন, মেহেদী মিরাজ নিজেদের প্রয়োগ করে খেললে পরাজয়ের ব্যাবধান কমিয়ে লড়াকু ভূমিকার পরিচয় দিতে পারে। তবে অশ্বিন তার নিজের শহরে ইতিমধ্যেই যতটুকু খেলেছে তাতে বলা যেতেই পারে চেন্নাই টেস্ট ইতিমধ্যেই অশ্বিনময়  হয়ে গেছে।

উইকেট নিয়ে কিছুই বলার নেই। স্বাচ্ছ্যন্দের সঙ্গেই এই উইকেটে ব্যাটিং করেছে অশ্বিন, জাদেজা, গিল,পান্ত। কিন্তু প্রথম এবং দ্বিতীয় ইনিংসে একই উইকেট বাংলাদেশের জন্য কেন মনে হয়েছে মৃত্যু ফাঁদ। বলতেই হবে সহায়ক উইকেটে উঁচু মানের বোলিং মোকাবিলায় বাংলাদেশের টেকনিক, টেম্পারমেন্ট ঘাটতি রয়েছে।

দেখা যাক কাল কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে বাংলাদেশ। ফলাফল সবার অনুমেয়।  তিন দিনের খেলায় ভারত টেস্ট ক্রিকেটে কতটা এগিয়ে প্রমাণ হয়েছে। এই কথাটি সৌরভ গাঙ্গুলি বলায় অনেকের মতোই এই আমিও টেস্টের আগে মেনে নিতে পারিনি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × 5 =