স্বাগতিক কাতারকে ৩-১ গোলে হারালো সেনেগাল

বুলয়ালে ডিয়া’র জোড়া গোলে স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয়ে বিশ্বকাপে  টিকে থাকল সেনেগাল। শনিবার দোহার আল-থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সেনেগাল। বিজয়ী দলের হয়ে দুই গোল করেছেন  বুলয়ালে ডিয়া। বাকী গোলটি করেছেন ফামারা ডিয়েডহিউ। অপরদিকে কাতারের হয়ে একমাত্র গোলটি করে ইতিহাসের সাক্ষি হয়েছেন মুহাম্মদ মুনতারি। অবশ্য পরপর দুই হারে  বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে স্বাগতিক কাতারের।

গ্রুপে নিজেদের প্রথম  ম্যাচেই পরাজিত হয়েছিল কাতার ও সেনেগাল। উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক কাতার হেরে গিয়েছিল ইকুয়েডরের কাছে। আর সাদিও মানের অনুপস্থিতিতে নেদারল্যান্ডসের কাছে হার মেনেছিল আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল। টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হয় এশিয়া ও আফ্রিকার দুই ফুটবল পরাশক্তি।

এদিন সেনেগালের হয়ে টুর্নামেন্টে প্রথম একাদশের হয়ে খেলতে নামেন ডিফেন্ডার ইসমাইল জ্যাকবস। অপরদিকে কাতারের হয়ে প্রথম গোল রক্ষকের দায়িত্বে নামেন মেশাল বারশাম। জার্মানিতে জন্মগ্রহন করা জ্যাকবস দেশটির বয়সভিত্তিক দলেরও প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বদলী হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ইনজুরি আক্রান্ত চেইকু কুয়াতের পরিবর্তিত হিসেবে তাকে একাদশভুক্ত করেন সেনেগালের কোচ আলিও সিসে। আর ফামারা ডিয়েডহিউকে দলভুক্ত করেন পাপে আব্দু সিসের পরিবর্তিত হিসেবে। এদিকে কাতারের কোচ ফেলিক্স সানচেজ প্রথম ম্যাচের একাদশে আনেন তিনটি পরিবর্তন।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই আক্রমণে যায় সেনেগাল। ডিফেন্ডার কালিদু কুলিবালি দ্রুততার সঙ্গে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন কাতারের রক্ষণে। কিন্তু স্বাগতিক রক্ষণভাগ ছিল সতর্ক। তাই কোন অঘটন ঘটাতে পারেননি তিনি।এর পর একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে কাতারের উপর চাপ প্রয়োগ করে আফ্রিকান দল। কিন্তু রক্ষণে তাদের কড়া প্রহারায় রাখে কাতার।

৩৫ মিনিটে কাতারের হয়ে আক্রমণে যান আকরাম আফিফ । কিন্তু গোলবক্সের ভেতর তাকে ফেলে দেয় সেনেগালী রক্ষণের খেলোয়াড়রা। যদিও ওই ঘটনায় পেনাল্টি দেয়া থেকে বিরত থাকেন রেফারি।

ম্যাচের ৪১ মিনিটে রক্ষনের ভুলে গোল হজম করতে হয় কাতারকে। দাইয়া গোল করে এগিয়ে দেন সেনেগালকে। ডি বক্সের বাইরে থেকে পাপে মাতার সারের মাটি কামড়ানো শটের বল কাতারের ডিফেন্ডার বুয়ালেম খুখি ডান পা দিয়ে টেকিয়ে দিলে সেটি দিক পরিবর্তন করে। ফিরতি বলটি জোড়ালো শটে জালে ডি বক্সে থাকা সেগোলি  জড়ান বুলয়ালে ডিয়া (১-০)।

বিরিতর পর গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে কাতার। বিপরীতে নিজেদের লিড ধরে রাখার চেস্টায় থাকে সেনেগাল। এরই মাঝে  ৪৮ মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় আফ্রিকানরা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল দর্শনীয় হেডে কাতারের জালে জড়িয়ে দেন ফামারা ডিয়েডহিউ (২-০)। বাছাই পর্বেও সেনেগালের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি।

৬২ মিনিটে  সেনেগালকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ইসমাইলা সার। কিন্তু তার নেয়া শটের বলটি কাতারের রক্ষন থেকে ফিরে আসে। ৬৬ মিনিটে কাতারের অসাধারণ একটি আক্রমণ রুখে দেন সেগোলের গোল রক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডি।

ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় কাতার। মাঝ মাঠ থেকে ইসমাইল মোহাম্মদের ক্রসের বল ডি বক্স থেকে প্লেসিং শটে সেগোলের জালে জড়িয়ে দেন মুহাম্মদ মুনতারি (২-১)। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে প্রথম কাতারি গোলদাতা হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখালেন তিনি।

ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে সেনেগালের হয়ে ফের গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন বুলয়ালে ডিয়া। ডান প্রান্ত দিয়ে কাতারি বক্সে ঢুকে যাওয়া লুম এডিয়ায়ের আড়াআড়ি তার কাছে বল পাঠালে চলন্ত বলে ডান পায়ের শটে গোল করেন বুলয়ালে ডিয়া (৩-১)।

আগামী ২৯ নভেম্বর আল-বায়াত স্টেডিয়ামে পরের ম্যাচে নেদারাল্যান্ডের মোকাবেলা করবে কাতার। একই রাতে খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সেনেগাল লড়বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

19 − 7 =