ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনাবসান

বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তচিন্তার মানুষ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

গত ৩ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডা. জাফরুল্লাহকে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এর আগের দিন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। ডা. জাফরুল্লাহ বহু বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কয়েকদিন আগে তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো আরও খারাপের দিকে যায়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভাস্কুলার সার্জন। তিনি মূলত জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বহির্বিশ্বে তার পরিচয় বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা-বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়। জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুত্যুকালে রেখে গেছেন তার সহধর্মিনী নারীনেত্রী শিরীন হক এবং দুই পুত্র ও কন্যাকে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের এক দিশারি মানুষ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। জনস্বার্থ কেন্দ্রে রেখে জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তার উদ্যোগ, সমাজভিত্তিক জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির রূপরেখা হাজির করা তার দেশপ্রেমিক অবদানের একেকটি মাইলফলক। জাতীয় দুর্যোগ ও রাজনৈতিক সংকটে তিনি সর্বদাই নির্ভীক থেকে সত্য বলে গেছেন, প্রতিবাদী হয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 × three =